আংশিক লকডাউনের জেরে পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়েছে গিয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা। ফের পড়াশোনা শুরু হয়েছে অনলাইন মোডেই। আর তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে রাজ্যের একটা বড় অংশের পড়ুয়াদের মধ্যে।
গত বছরের শেষ লগ্নে সবে মাত্রা খুলেছিল স্কুল কলেজের দরজা কিন্তু তৃতীয় ধাপের কোভিড কোপে ফের শুরু হয়েছে অচলাবস্থা। চলতি বছরের শুরু থেকেই রাজ্যব্যাপী শুরু হয়ে গিয়েছে আংশিক লকডাউন। যদিও লকডাউনের(Partial lockdown) জেরে সরকারি-বেসরকারি সমস্ত ক্ষেত্র খোলা থাকলেও প্রতি ক্ষেত্রেই জারি হয়েছে কিছু নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ। নতুন করে জোর দেওয়া হয়েছে কোভিড বিধির উপর। কিন্তু পুরোপুরি ভাবে বন্ধ হয়েছে গিয়েছে সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দরজা। ফের পড়াশোনা শুরু হয়েছে অনলাইন মোডেই(Online education)। আর তাতেই ক্ষোভ বেড়েছে রাজ্যের একটা বড় অংশের পড়ুয়াদের মধ্যে। এমনকী নিজেদের ভবিষ্যত নিয়েও দিশাহীন হয়ে পড়েছেন বহু শিক্ষার্থীতে। এমতাবস্থায় এবার স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে একাধিক বিপ্লবী ধারার ছাত্র সংগঠনের(revolutionary student organizations) ডাকে বিশালাকার মিছিল দেখা গেল যাদবপুরে(Jadavpur)। এদিকে এই মিছিল যে হচ্ছে তা আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল REFRACTION, AISA, AIRSO, ISU, PDSF, RSF, WPSUF-এর মতো একাধিক বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের তরফে। সমস্ত গণতান্ত্রিক সংগঠন, গোষ্ঠী ও গণতন্ত্রপ্রিয় ব্যক্তিবর্গদের আহ্বানও জানানো হয় এদিনের কর্মসূচিতে।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ যাদবপুর ৮ বি-তে প্রথম শুরু হয় মূল অনুষ্ঠান। সেখান থেকে বিভিন্ন সংগ্রামী শিক্ষার্থীদের সংগঠনের তরফে একটি মিছিলের আয়োজন করা হয়। এরপর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪নং গেটের সামনে একটি পথসভাও হয় বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোভিডকালে মিটিং মিছিলে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে রাজ্য সরকার। যদিও আন্দোলনকারীদের দাবি সেই সমস্ত নিষেধাজ্ঞাকে মাথায় রেখেই আয়োজন করা হয়েছিল মিছিল। যদিও অনেক আন্দোলনকারী পড়ুয়ার আবার পাল্টা প্রশ্ন করে বলছেন, “পুরভোটের প্রচার কী বন্ধ করেছে রাজ্য সরকার? ভোট-গঙ্গাসাগর মেলা কী বন্ধ করছে সরকার? আর আমরা পড়াশোনা করতে চাইলেই দোষ?” এদিকে বিগত দুই বছর স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার ফলে দেশের শিক্ষার্থীরা যে চরমে বিপাকে পড়েছেন তা মানছেন সকলেই। এবার নতুন করে স্কুল কলেজ বন্ধ হয় ফের বাড়ছে উদ্বেগ।
আরও পড়ুন-করোনা আবহে পুরভোট নিয়ে বাড়ছে চাপানউতর, দ্রুত সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি বামেদের
দেশের প্রায় সমস্ত শিক্ষাঙ্গন বন্ধ রেখে অনলাইন মোডে পড়াশোনার ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের প্রান্তিক এলাকার ছাত্রছাত্রীরা। এমনকী সামগ্রিক ভাবে নিম্নমুখী হচ্ছে শিক্ষার মান। একথা বারেবারেই বলছেন শিক্ষাবিদেরা। সবথেকে খারাপ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন দলিত-আদিবাসী পরিবারের পড়ুয়ারা। অনেক ক্ষেত্রেই শহর থেকে শুরু করে গ্রামের মেহনতি পরিবারের পড়ুয়ারা শিক্ষা থেকে সম্পূর্ণ রূপে বঞ্চিত হচ্ছেন পড়াশোনা থেকে। যে তথ্যও বারেবারেই উঠে এসেছে একাধিক সামাজিক রিপোর্টে। যে কারণে বেড়েছে উদ্বেগ। বর্তমানে এই তথ্যগুলিকে সামনে এনেই স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে সরব হয়েছে বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলি। এমনকী সরকার তাদের দাবি না মানলে আগামীতে রাজ্যব্যাপী আরও জোরদার আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন তারা।