মেলা বাতিলের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। আগামী ৫ জানুয়ারি এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
বছরশেষে পার্কস্ট্রিট ভয় ধরিয়েছিল। সেই ভয় যে অমূলক নয়, তা প্রমাণ করছে প্রতিদিনের করোনা গ্রাফ। গত ২৭ ডিসেম্বর কলকাতার দৈনিক নতুন কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৩৯। সেখান থেকে ২ জানুয়ারীর নতুন কোভিড রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬,১৫৩। অর্থাৎ এই ৫ দিনে শহরের দৈনিক নতুন কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা, অভূতপূর্বভাবে ১৪০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কলকাতার ইতিবাচকতার হারও উদ্বেগজনক, ৩২.৮ শতাংশ।
এই পরিস্থিতিতে গঙ্গাসাগর মেলা (Gangasagar Mela) কি আদৌও করা উচিত, সেই প্রশ্ন তুলে ও মেলা বাতিলের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata Highcourt) জনস্বার্থ মামলা (Public interest litigation) দায়ের করলেন চিকিৎসক অভিনন্দন মণ্ডল। আগামী ৫ জানুয়ারি এই জনস্বার্থ মামলার শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হওয়ার কথা। ওই চিকিৎসকের দাবি এই মেলায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। কোনও ভাবেই সেখানে কোভিড বিধি মানা সম্ভব নয়।
এছাড়াও আবেদনে বলা হয়েছে এই লক্ষাধিক ভিড়ে গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়বে। তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গঙ্গাসাগর নিয়ে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে রাজ্য সরকার। কোভিডকালে পূর্ণ্য অর্জনে যাতে ভক্তদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রয়েছে প্রশাসনের। ওমিক্রণ নিয়ে উদ্যোগ্যের জেরেই গঙ্গাসাগর নিয়ে বাড়তি নজর মমতার সরকারের। কোভিড পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে অ্যাম্বুলেন্স এমনকি দাহঘাটও তৈরি করা হয়েছে এবারের গঙ্গাসাগরে।
তবে এই আশ্বাসবাণীতে ভয় কাটছে না। আবেদনকারী চিকিৎসক বলছেন এত পরিমাণ মানুষকে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। এবারের মত পরিস্থিতি সামাল দিতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখা হোক। এদিকে, রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে, গত ২৫ ডিসেম্বর পার্ক স্ট্রিট-এর মাস্ক বিহীন জনস্রোতের একটি ছবি পোস্ট করা হয়েছে। সঙ্গের ক্যাপশনে বলা হয়েছে, বঙ্গ বিজেপির দাবি, বিশ্বে সম্ভবত কলকাতাতেই এখন ইতিবাচকতার হার সর্বোচ্চ। এটা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অনিয়ন্ত্রিত সমাবেশের অনুমতি দিয়েছেন বলেই।
এদিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর এই বছর মেলা প্রাঙ্গণে কমপক্ষে ৩০ লক্ষ পূণ্যার্থীর সমাগম হতে পারে। মেলা শুরু হতে চলেছে ৭ই জানুয়ারি থেকে। শেষ হবে ১৬ই জানুয়ারি। এদিকে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ২০২২-এ গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি শুরু করে দিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। এবার মেলার প্রস্তুতি হিসেবে করোনার টিকার উপর সবথেকে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক পি উলগানাথন বলেন গঙ্গাসাগর মেলার জন্য একাধিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেক কর্মী দু ডোজ করে টিকা নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এরই সঙ্গে মেলা প্রাঙ্গণে ঢোকার আগে থার্মাল স্ক্যানিং ও আর টি পিসিআর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।