৬৭ দিনে পড়ল টেট উত্তীর্ণ চাকরি প্রার্থীদের আন্দোলন, আলোর উৎসবেও আঁধার ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে

দু'দিন আগেই চাকরিপ্রাথীদের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের অমানবিকতার দৃশ্য দেখেছে গোটা রাজ্য। তবু যাবতীয় চোখ রাঙানির বিপরীতে নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। ন্যায়বিচারের আশায় কাটল ৬৭ দিন।
 

Web Desk - ANB | Published : Oct 23, 2022 1:21 PM IST

টানা ৬৭ দিনের আন্দোলন। দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো, ধর্মতলায় মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির নীচে বসেই উৎসবের আলো ওঁরা। জল-ঝড় মাথায় করে 'হকের' চাকরির দাবিতে দু'মাসেরও বেশি সময় ধরে অবস্থান বিক্ষোভে অনড় ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। কালীপুজোতেও বদলালো না সেই ছবি। আলোর উৎসবেও আঁধার ঘুচলো না ওঁদের জীবন থেকে। 

দু'দিন আগেই চাকরিপ্রাথীদের সঙ্গে পুলিশ-প্রশাসনের অমানবিকতার দৃশ্য দেখেছে গোটা রাজ্য। তবু যাবতীয় চোখ রাঙানির বিপরীতে নিজেদের দাবিতে অনড় আন্দোলনকারীরা। ন্যায়বিচারের আশায় কাটল ৬৭ দিন। "মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও রাস্তা বসে থাকতে হচ্ছে", বারবারই অভিযোগ উঠে আসছে বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের কণ্ঠে। পাশাপাশি তাঁরা আরও অভিযোগ জানিয়েছেন, "অযোগ্যরা সাদা খাতা জমা দিয়েও চাকরি পেল, আর আমরা ন্যয্য চাকরি পেলাম না।" মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আলোর উৎসবে তাঁদের জীবনের অন্ধকার মুছে দেওয়ার কাতর আর্জিও জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের কথায়,"আজ আলোর উৎসবের মধ্যেও আমাদের জীবনটা অন্ধকারে ভরে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ আমাদের নিয়োগের ব্যবস্থা করে আমাদের জীবনেও আলো নিয়ে আসুন।" 

প্রসঙ্গত, নিয়োগের দাবিতে গত সোমবার থেকে করুণাময়ীতে বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ শুরু করে ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণরা। মঙ্গলবাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করে বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে আচমকাই বলপূর্বক বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয় পুলিশ। কার্যত জোড় করেই টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় চাকরীপ্রার্থীদের। ১৫ মিনিটের মধ্যে তুলে দেওয়া হয় ৮৪ ঘন্টার আন্দোলন। ঘটনা ঘিরে কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বৃহস্পতিবার রাতের করুণাময়ী। তবে পুলিশি ধরপাকড়ের সামনে মাথা নোয়ায়েনি আন্দোলনকারীরা। শুক্রবার সকালে ফের করুণাময়ীতে নতুন করে জমায়েত করে বিক্ষোভকারীদের একাংশ।

শুক্রবার সকালে আবারও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের দফতরের সামনে বিক্ষোভ দেখায় ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণদের একাংশ। আন্দোলনকারীদের সমর্থনে এগিয়ে আসে বাম ছাত্র-যুবরাও। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে বলপূর্বক আন্দোলনরত চাকরীপ্রার্থীদের টেনে হিঁচড়ে জোড় করে তোলার প্রতিবাদে সল্টলেক সিটি সেন্টার থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেয় এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই নেতা-কর্মীরা। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন ডিওয়াইএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, এসএফআই-এর সর্বভারতীয় সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস, এসএফআই-এর রাজ্য সভাপতি প্রতীক উর রহমান। কিন্তু মাঝপথেই পুলিশের বাধার সম্মুখীন হয় মিছিল। বিধাননগরের কাছে রাস্তার মাঝেই অবস্থান বিক্ষোভে বসে পড়েন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের সঙ্গে কার্যত ধস্তাধস্তি বেঁধে যায় মীনাক্ষীদের। একের পর এক আন্দোলনকারীকে টেনে হিঁচড়ে প্রিজন ভ্যানে তোলে পুলিশ। 

পুলিশি ধরপাকড়ের জেরে ফের একবার নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি মোকাবিলায় র‌্যাফ নামানো হয়। মোতায়ন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনীও। কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে বিকাশ ভবন চত্ত্বর। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ গোটা এলাকা। 

আরও পড়ুন-
২০১৪ বনাম ২০১৭, টেট চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের বিরুদ্ধে পালটা আন্দোলনে নামলেন টেট চাকরিপ্রার্থীরাই
ভারতের সীমানায় ‘বিচিত্র’ পরিস্থিতি, মোকাবিলা করতেই ‘অগ্নিপথ’ স্কিম চালু করেছে কেন্দ্রের মোদী সরকার?

‘রানিকে খান খান করে ছাড়ব’, শাসকদলকে কড়া হুঁশিয়ারি সুকান্ত মজুমদারের, প্রয়োজনে অস্ত্র তুলে নেওয়ার বার্তাও

Share this article
click me!