ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১০০ কিলোমিটার বেগেও ঝড় হতে পারে, সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার।
ঘূর্ণিঝড়ের জেরে দক্ষিণবঙ্গে প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ১০০ কিলোমিটার বেগেও ঝড় হতে পারে, সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস। উল্লেখ্য, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার। কলকাতাতেই প্রস্তুত এনডিআরএফ-র টিম। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের মোকাবিলায় ইতিমধ্য়েই ওড়িশায় সতর্কবার্তা জারি হয়েছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টি হবে কলকাতা ও সংলগ্ন জেলা এবং দক্ষিণবঙ্গেও।
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার। কলকাতাতেই প্রস্তুত এনডিআরএফ-র ১৭ টি টিম। এই ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ স্থলভাগের দিকে এগোবে।অভিমুখ হতে পারে দক্ষণ ওড়িশা এবং অন্ধ্র উপকূল। মঙ্গলবার সেটি আছড়ে পড়তে পারে উপকূলবর্তী এলাকায়। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে আগামী মঙ্গলবার থেকে শুক্রবারের মধ্যে এটির প্রভাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের জেলাগুলিতে বজ্রবিদ্যুৎসহ ঝড় ও ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে।ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই সময় পশ্চিমবঙ্গ উপকূলবর্তী এলাকায় ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৮০-৯০ কিলোমিটার। ১০০ কিলোমিটার বেগেও ঝড় হতে পারে, সতর্কতা জারি করেছে হাওয়া অফিস।
আরও পড়ুন, ঘূর্ণীঝড়ের জের, ভাঙন না রুখলে বিলীন হবে কপিল মুনির আশ্রম, হারাবে সুপ্রাচীন গঙ্গাসাগর
ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত রাজ্য সরকার। প্রস্তুত এনডিআরএফ-র ১৭ টি টিম। রাজ্যে সাইক্লোন মোকাবিলার জন্য কলকাতাতেই ওই ১৭ টি টিম সজাগ রয়েছে। এমনটাই জানানো হয়েছে নবান্নকে।বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের জেলাশাসকরা রিকুইজিশন করবেন এনডিআরএফর টিম গুলিকে। কারণ এমনটাই নির্দেশ পাঠানো হয়েছে মুখ্যসচিবের তরফে।প্রয়োজন মতো রবিবারের পর থেকেই রিকুইজিশন করবেন জেলা শাসকরা।দরকারে নির্দিষ্ট কোন সেন্টারে বা কোন পয়েন্টে ডেকে রাখতে পারেন এনডিআরএফকে। ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে ওড়িশা সরকারও। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায়, পুরী, গঞ্জম, খুরদা, বালাসোর, কটক, কান্ধামাল-সহ ওড়িশার ১৮ জেলাকে সতর্কবার্তা জারি করেছে সরকার।
হাওয়া অফিস জানিয়েছে, রবিবার সকাল ৫টা ৩০ নাগাদ এটি দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসারের কেন্দ্রীভূত ছিল। নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ছেকে প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার উত্তর পশ্চিম দিতে অবস্থান ছিল। পোর্ট ব্লেয়ার থেকে এটি ছিল ৩৮০ কিলোমিটার দূরে। আর বিশাখাপত্তনম থেকে এটির দূরত্ব ছিল ৯৭০ কিলোমিটার। ওড়িশার পুরী থেকে নিম্মচাপটি ছিল ১০৩০ কিলোমিটার দূরে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে। পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগরে পৌঁছে যাবে। সেখানেই তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না মৌসমভবন। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে দ্রুত গতিতে শক্তি সঞ্চয় করে এটি ১০ মে সন্ধ্যায় উত্তর পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। এটি এগিয়ে আসতে পারে অন্ধ্র ও ওড়িশা উপকূলের দিকে। যদিও শনিবার হাওয়া অফিস জানিয়েছিল ঘূর্ণিঝড়টির ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে আছড়ে পড়ার আশঙ্কা খুবই কম। তবে এখন গতি পরিবর্তন করতে শুরু করেছে নিম্মচাপটি।
আরও পড়ুন, অসম সফরে যাচ্ছেন অভিষেক, 'যেটুকু আছে, তাও যাবে', কাকে নিশানা সুস্মিতাদের
বিশেষজ্ঞরা আন্দাজ করেছেন, '১০ মে নাগাদ উড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ উপকূলে আছড়ে পড়বে এই ঘূর্ণঝড়।' দক্ষিণ আন্দামান এবং বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। ওই এলাকায় মৎসজীবীদের মূলত না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, কেন না আবহাওয়ার অনেক বদল ঘটবে।' হাওয়া অফিস আরও জানিয়েছে, গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের একাধিক জেলায় ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে কালবৈশাখীহীন চৈত্র-বৈশাখ সাম্প্রতিককালে দেখা যায়নি বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, তীব্র দাবদাহের অস্বস্তি কাটিয়ে, কলকাতায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শহরে বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। হাওয়া অফিসের তরফে জানানো হয়েছে, কলকাতায় আপাতত তাপপ্রবাহের কোনও পরিস্থিতি তৈরি হবে না।
উল্লেখ্য, এই সময় অন্য বছরগুলিতে তিন থেকে চারটি কালবৈশাখী হয়ে যায়। কিন্তু, এবছর এখনও পর্যন্ত কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে সবে একটা কালবৈশাখী হয়েছে। বিগত অনেকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। শীতের সময় উত্তরবঙ্গের থেকে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি বেশি হয়েছিল। কিন্তু, তারপর থেকে আর বৃষ্টির দেখা মেলেনি। ২৮ ফেব্রুয়ারি শেষবারের মতন বৃষ্টি হয়েছিল দক্ষিণবঙ্গে। তবে তারপর ফের বৃষ্টির প্রাণ জুড়িয়ে দেয় বঙ্গবাসীর। গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে দাবদাহের পরিস্থিতি কমবে। উত্তরবঙ্গে প্রকৃতি অনেকটাই অনুকূলে থাকবে।