কেন্দ্রীয় সরকার এই ইনফ্লুয়েঞ্জাকে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা বলেও দাবি করেছে। ঋতু পরিবর্তনের সময়ই এজাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তবে বর্তমান সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার সাব টাইপ H3N2র কারণে
ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জার সাব-টাইপ H3N2 -এর কারণে একই দিনে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন কর্ণাটকের বাসিন্দা, অন্যজন হরিয়ানার বাসিন্দা। জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিস্থিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে তারা। তবে মার্চ মাস অর্থাৎ চলতি মাসের শেষের দিকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে বলেও আশা প্রকাশ করেছে কেন্দ্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী ২ জানুয়ারি থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত H3N2 ভাইরাসে আক্রান্তের সরকারি সংখ্যা ৪১৫। এই বছরের শুরুতেই এই জাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছিল বলেও জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক।
কেন্দ্রীয় সরকার এই ইনফ্লুয়েঞ্জাকে মৌসুমী ইনফ্লুয়েঞ্জা বলেও দাবি করেছে। ঋতু পরিবর্তনের সময়ই এজাতীয় রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ে। তবে বর্তমান সময়ে ইনফ্লুয়েঞ্জার সাব টাইপ H3N2র কারণে এটি যথেষ্টই বেগ দিচ্ছে আক্রান্তগের। শুধু ভারত নয় বিশ্বের আরও বেশ কয়েকটি দেশে এই রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে বলেও জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এটি মূলত শ্বাসযন্ত্রকে সংক্রমিত করছে। অনেকেই আবার ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে বছরের দুটি সময় ভারতে ইনফ্লুয়েঞ্জার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়- একটি - জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত। অন্যদিকে বর্ষা পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। তবে এটির প্রাদুর্ভাব মার্চ মাসের শেষের দিকে অনেকটাই কমে যাবে বলেও আশঙ্কা করছে। কিন্তু H3N2 ভাইরাস প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সরকার তৈরি রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য গুলিকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, কর্ণাটক ও হরিনায়ায় যে দুই ব্যক্তির H3N2 আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তারা হলেন হিরো গৌড়া। হরিয়ানায় মৃত ব্যক্তির নাম পাওয়া যায়নি। তবে তিনি নিজের বাড়িতেই মারা গেছেন। হরিয়ানার ৫৬ বছরের ওই ব্যক্তি ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। জানুয়ারিতে রোহতরে হাসপাতাল থেকে H3N2 ভাইরাসের ইতিবাচক পরীক্ষা করেছিলেন। কর্ণাটকের গৌড়া ডায়াবেটিক ও হাই ব্লাড প্রেসারারে আক্রান্ত ছিলেন। ২৪ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ১ মার্চ পরীক্ষা করা হয়েছিল। ৬ মার্চ জানা যায় তিনি H3N2 ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
H3N2 লক্ষণঃ
A সাবটাইপ H3N2 ভাইরাসের আক্রান্ত হলে কাশি হবেই। সঙ্গে গলা ব্যাথা, বমিবমি ভাব থাকবে। গায়ে ও মাথায় ব্যাথা থাকবে। এই জাতীয় সমস্যাগুলি এক সপ্তাহ ধরে চলতে পারে। জ্বর কমে গেলেও কাশি তিন সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে বলেও জানিয়েছে চিকিৎসকরা। এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। অনেককেই আবার আইসিইউতে পাঠানে হচ্ছে। অনেক রোগীর নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিওলাইটিস হয়েছে।
রোগ প্রতিরোধ
H3N2 ভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে আবারও মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে চিকিৎসকরা। ভিড় এড়াতেও ও হাতমেলাতে বা করমর্দন করতেও নিষেধ করেছে। সংক্রমিত ব্যক্তির ঘনিষ্টতার এই রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে বলেও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। নিয়মিত হাত ধোয়া আর মাস্ক পরার ওপরেই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। কোভিড কালে যে ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়েছে তেমনই সতর্কতা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছে।
অ্যান্টিবায়োটিকে নাঃ
দেশের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে নিষেধ করেছে। তাঁদের কথায় অত্যাধিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে পার্শ্বক্রিয়া দেখা যেতে পারে। তবে প্রতিটি পদক্ষেপে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার কথা বলেছেন তারা।