চুল অন্তস্ত্বক বা ত্বকের বহিঃস্তরে অবস্থিত ফলিকল থেকে উৎপন্ন চিকন সুতোর মতো প্রোটিন তন্তু। শুধুমাত্র স্তন্যপায়ী প্রাণীর শরীরে পাওয়া যায় বলে চুল স্তন্যপায়ী প্রাণীর একটি নির্দেশক বৈশিষ্ট্য। চুলের প্রধান উপাদান হচ্ছে কেরটিন। মানুষ ব্যতীত অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর শরীরে যে নরম, সুন্দর চুল পাওয়া যায় তাকে "ফার" বা লোম বলে। চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে নিয়মিত চুল আঁচড়ানো গুরুত্বপূর্ণ। এটা সকলেরই প্রায় জানা যে, আগেকার দিনে চুল ভালো রাখতে বারে বারে চিরুনি করার পরামর্শ দিতেন ঠাকুমা-দিদিমারা। তবে নিয়মিত চুল আঁচড়ালেই হবে না। পাশাপাশি প্রয়োজন চুলের সৌন্দর্য ও গঠন রাখতে সঠিক চিরুনি বেছে নেওয়া।
সাধারণত আমরা যে চিরুনি ব্যবহার করে থাকি তা প্লাস্টিক বা ধাতুর তৈরি। এর ফলে চুল রুক্ষ হয়ে ভেঙে ও ঝরে যাওয়ার প্রবণতা বেশি হয়। চুলের সংস্পর্শে প্লাস্টিক বা ধাতুর চিরুনি এলে স্ট্যাটিক ইলেকট্রিসিটি উৎপন্নন হয় তা আমরা ছোটবেলায় বইয়ে পড়েছি। এই কারণেই শীতে প্লাস্টিকের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে চুল খাড়া হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে উন্নত ডায়েটের পাশাপাশি কাঠের চিরুনি বেছে নেওয়া উচিত। কারণ প্রাচীণ কাল থেকেই চুলের সৌন্দর্য ও গঠন ঠিক রাখতে কাঠের চিরুনি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কেন কাঠের চিরুনি চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপযোগী জেনে নেওয়া যাক-
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কাঠের চিরুনি চুলের কোনও ক্ষতি হয় না। বরং এর ব্যবহারের ফলে ভেজা চুল আচরালেও তুলনামূলক ভাবে কম ঝরে। ধাতব বা প্লাস্টিকের চিরুনিতে স্ট্যাটিক বিদ্যুৎ তৈরি হয়। এর ফলে চুল আঁচড়ানোর সময় চুলের ধুলো ময়লা চিরুনিতেই আটকে থাকে। পরে আবার সেই চিরুনি দিয়ে চুল আচরাতে গেলে তা আবার চুলেই থেকে যায়। উল্টোদিকে কাঠের চিরুনি পরিস্কার করা খুব সহজ। সামান্য নারকেল তেল বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে আধঘণ্টা রেখে তারপর পরিস্কার কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই চিরুনি পরিষ্কার হয়ে যায় সহজেই।
কাঠের চিরুনিতে এই সমস্যা থাকে না। কাঠের চিরুনি ব্যবহারের ফলে রক্ত সঞ্চালন যেমন বাড়ে পাশাপাশি চুলের গোড়াও শক্ত করে। কাঠের চিরুনির দাঁড়াগুলো গোলাকার আর মসৃণ হয় বলে আঁচড়ানোর সময় স্ক্যাল্পের প্রাকৃতিক তেল সারা চুলে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে, ফলে চুল মসৃণ আর নরম থাকে।