আকাশে চাঁদের অল্প উঁকি, চট্টোপাধ্যায় বাড়িতে দেবী লক্ষ্মী ‘সীতা’ রূপে পূজিত

পুরাণমতে, সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি যুগে দেবী লক্ষ্মী চার রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। ত্রেতা যুগে তিনিই সীতা। এই দিনে সীতার বনবাস হয়েছিল। তিনি ঠিক সন্ধের সময়ে একচড়া অন্নভোগ খেয়েছিলেন। 

Web Desk - ANB | Published : Oct 8, 2022 11:36 AM IST

সুদীপা-অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায়ের দুর্গাপুজোর নেপথ্যে অনেক গল্প। মায়ের সাজ, মায়ের ভোগ, মায়ের বিসর্জন— সব রীতিতেই কাহিনি লুকিয়ে। তুলনায় চট্টোপাধ্যায় বাড়ির লক্ষ্মীপুজো নিয়ে যেন কম আলোচনা হয়। এর আগে সংবাদমাধ্যমে সুদীপা জানিয়েছেন, তাঁর শ্বশুরবাড়ির কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর গল্পও যথেষ্ট আকর্ষণীয়! এই বাড়িতে ধনদেবী সীতা রূপে পূজিতা! কেন?

জি বাংলার ‘রান্নাঘর’-এর কর্ত্রীর কথায়, পুরাণমতে, সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি যুগে দেবী লক্ষ্মী চার রূপে পৃথিবীতে এসেছিলেন। ত্রেতা যুগে তিনিই সীতা। এই দিনে সীতার বনবাস হয়েছিল। তিনি ঠিক সন্ধের সময়ে একচড়া অন্নভোগ খেয়েছিলেন। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের আদি বাসভূমি অধুনা বাংলাদেশের বরিশাল। সেখানে দেবী এই বিশেষ রীতি মেনে সীতা রূপেই পূজিত। যদিও পূর্বপুরুষ নবীনচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের পরে বেশ কয়েক পুরুষ এই পুজো বন্ধ ছিল। পরে কলকাতায় ফের পুজো শুরু করেন অগ্নিদেব।

চট্টোপাধ্যায় পরিবারের দেবী দুর্গা একেবারে ঘরের মেয়ের আদলে তৈরি হয়। দেবী লক্ষ্মীর রূপ কেমন? সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, চট্টোপাধ্যায় পরিবারে প্রতিষ্ঠিত রূপোর লক্ষ্মী আছে। লক্ষ্মীপুজোর দিন তিনিই সেজে ওঠেন বেনারসিতে। আলাদা আসনে বসানো হয় তাঁকে। পায়ের কাছে থাকে পদ্ম। দুর্গাপুজোর মতো এলাহি আয়োজন না হলেও লক্ষ্মীপুজোও যথেষ্ট ভক্তি এবং নিষ্ঠার সঙ্গেই পালন করেন অগ্নিদেব-সুদীপা। পুরাণ বলছে, এমন একটা প্রহরে সীতাকে লক্ষ্মণ বনে ছেড়ে এসেছিলেন যখন দিনের আলো একেবারে মুছে যায়নি। রাতের অন্ধকারও পুরোপুরি নেমে আসেনি। আকাশ উজ্জ্বল চাঁদের মৃদু জ্যোৎস্নায়। সেই অনুযায়ী চট্টোপাধ্যায় আমাদের বাড়ির নিয়ম, কোজাগরী পূর্ণিমার চাঁদ আকাশে অল্প উঁকি দিলে তবে পুজোর গোছগাছ শুরু হবে। সীতাকে বনবাসের সময়কে স্মরণ করে আকাশের চাঁদের অনুমতি নিয়ে তবে পুজোয় বসবেন পুরোহিত মশাই। এমনকি আলপনাও সকাল থেকে দেওয়া যাবে না। 

পাশাপাশি, পুজোর ভোগ রান্নার পদ্ধতিও সবার থেকে আলাদা। দেবীকে একচড়়া ভোগ নিবেদন করা হয় পুজোর দিনে। নিয়ম অনুযায়ী, একচড়া ভোগ রান্নায় সব কিছু একবারে হবে। একবারই হাঁড়িতে চাল, ডাল দেওয়া যাবে। জলও দিতে হবে একবারেই। নুন, গোটা আনাজ--সব একবারেই দিতে হবে। ভোগ একবার ফুটে উঠলেই নামিয়ে নিতে হবে। বাকিটা রান্না হবে গরম ভাপে।

Share this article
click me!