৩০ বছর বয়স হলেই তাই কিছু খাবার রয়েছে, যা খাওয়া জরুরি। এই বয়সে শারীরিক অনেক পরিবর্তন আসে।
বয়স তিরিশ বছর (30 Years) পেরোলেই একটু সাবধানতা মেনে চলা উচিত। এই বয়সকাল শরীরের নানা জটিলতা (Physical Problems) ডেকে আনতে পারে, যদি না সাবধান (Cautious) হওয়া যায়। বয়স অনুযায়ী দেহে পুষ্টির চাহিদা মেটাতে হয়। কোন বয়সে কী ধরনের পুষ্টির চাহিদা থাকে তা জানা দরকার। অনেকের ধারণা, একই ডায়েট চার্ট সারাজীবন অনুসরণ করা যায়। আবার কেউ কেউ ভাবেন, সব বয়সে একই ধরনের খাবার খেতে হবে। এই ধারণাগুলো ভুল। বয়স, লিঙ্গ ও শারীরিক সমস্যাভেদে একেকজনের জন্য একেকধরনের খাবার উপযোগী।
৩০ বছর বয়স হলেই তাই কিছু খাবার রয়েছে, যা খাওয়া জরুরি। এই বয়সে শারীরিক অনেক পরিবর্তন আসে। তাই এই পর্যায়ে দরকার সঠিক ডায়েট চার্ট অনুসরণ করা। বিশেষ করে হাড় সুস্থ রাখতে খুবই সচেতন থাকা দরকার। প্রোটিনজাতীয় খাবার খেতে বেশি খেতে হবে। ডিম, মুরগি, ডাল, বাদাম, শস্যদানা এই খাবারগুলো প্রোটিনের ভালো উৎস। এছাড়া ফ্যাট ছাড়া দুধ ও টক দই খেতে হবে নিয়মিত। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শমতো ফুড সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে।
জেনে নিন সাতটি খাবারের কথা, যা তিরিশ বছর বয়েস হলে পাতে রাখা উচিত।
লেবু- লেবু, কমলা লেবু বা সাইট্রাস জাতীয় যে কোনও ফল এই সময় শক্তি যোগাবে আপনাকে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে হদয় সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। বাড়বে ইমিউনিটি। ভিটামিন সি-তে পরিপূর্ণ পাতিলেবুর মধ্যে এমন অনেক অজানা গুণ রয়েছে যা শরীর খারাপ থেকে শুরু করে শরীরকে সুস্থ রাখে। করোনা রুখতেই পাতিলেবু খেতে বলছেন চিকিৎসকেরা। তাই এবার পাতে রাখুন টক ফল।
ব্রকোলি - ভিটামিন, মিনারেল, অ্য়ান্টি অক্সিডেন্ট ও ফাইবারে সমৃদ্ধ সবজি হল ব্রকোলি। এককাপ বা ৯০ গ্রামের মতো কাঁচা ব্রকোলি থেকে পাওয়া যায় ৬ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট। পাওয়া যায়, ২.৬ গ্রাম প্রোটিন, ০.৩ গ্রাম ফ্য়াট, ২.৪ গ্রাম ফাইবার। এছাড়া থাকে ভিটামিন-সি, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-কে, ভিটামিন-বি-৯ বা ফোলেট, পটাশিয়াম, ফসফরাস, সেলেনিয়াম।
কাঁচা হোক বা রান্না করা, ব্রকোলিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি। ব্রকোলিতে থাকা লিউটেন, জিয়াজ্য়ানথিন-সহ বিভিন্ন অ্য়ান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের সেল ও টিস্য়ুকে রক্ষা করে। ব্রকোলিতে থাকা বিভিন্নরকম বায়োঅ্য়াকটিভ কমপাউন্ড, আমাদের শরীরের বিভিন্নরকম প্রদাহ কমাতে সাহায্য় করে। বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ব্রেস্ট, প্রস্টেট, কোলোরেকটাল, গ্যাসট্রিক বা স্টম্য়াক, রেনাল বা কিডনি, ব্লাডার ক্য়ানসার প্রতিরোধ করতে সাহায্য় করে ব্রকোলি।
রসুন- রসুন বিশ্ব জুড়ে বাণিজ্যিক ভেষজ হিসাবে সফল। রসুন কৃমি নাশ করতে, শ্বাস কষ্ট কমাতে, হজমে সহায়তা করতে, প্রস্রাবের সমস্যায়, শ্বাসনালী মিউকাস মুক্ত করতে, এ্যাজমা রোগের উপশমে, হাইপারটেনশন কমাতে, চুল পাকানো কমাতে, শরীরে কোলেস্টেরলের লেভেল কমাতে, হাড়ের বিভিন্ন রোগে রসুন সাহায্য করে। ভেষজ গুণের জন্য কাঁচা রসুন বেশি উপকারী। অ্যালিসিন দেহে কোলেস্টেরল তৈরির উৎসেচক এইচএমজিকোএ রিডাক্টেজ কে বাধা দেয় বলে জানা গিয়েছে।
তৈলাক্ত মাছ- গবেষকদের মতে, নিয়মিত তৈলাক্ত মাছ খেলে হার্ট সুস্থ রাখে। হৃদরোগে ঝুঁকি থাকা ব্যক্তিদের ওমেগা ৩ (Omega 3) যুক্ত খাবার খাওয়ান। নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন সামুদ্রিক মাছের মতো খাবার।
বাদাম- চিনাবাদামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, কার্বো হাইড্রেট এবং প্রোটিন থাকে। চিনাবাদাম খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। বাদাম এমন একটি খাবার যা প্রায় সকলেই খেতে ভালবাসে। রাস্তায় চলতে ফিরতে যখনই চোখে পড়ে তখনই অনেকেবাদাম কিনে খান। প্রতিদিন এক মুঠো করে বাদাম খেলে আপনার শরীরের অনেক উন্নতি হবে। তেমনই আপনার শরীর থেকে রোগভোগ দূরে হবে নিমেষ। বিশেষত, যারা এতদিন ভাবতেন বাদাম খেলেই ওজন বাড়ে, এই ধারণা ঝেড়ে ফেলুন আজ থেকেই কারণ বাদাম শরীরের অতিরিক্ত চর্বি কমাতেও সাহায্য করে।
মধু- একজন সুস্থ মানুষ দিনে দু’চা-চামচ মধু অনায়াসে খেতে পারেন। তবে এর বেশি খেতে চাইলে শর্করা জাতীয় খাদ্য ভাত, রুটি, আলু কমিয়ে খেতে হবে। হজমের সমস্যা, হার্টের অসুখ, ডায়াবেটিস প্রভৃতি রোগে আধ চা-চামচ এর বেশি মধু না খাওয়াই ভাল। পোড়া, ক্ষত ও সংক্রমণের জায়গায় মধু লাগালে দ্রুত সেরে যায়। রোগ নিরাময়ের জন্য মধু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়ে আসছে।
চিয়া সিড- চিয়া বীজ বিশ্বব্যাপী সর্বাধিক পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে স্থান পেয়েছে। এগুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণে ভরা যা মস্তিষ্ক এবং দেহে প্রচুর সুবিধা দেয়। এগুলি ফাইবার, ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং কার্বোহাইড্রেটের অবিশ্বাস্য উৎস।