আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত বুধবার কুলভূষণ যাদবে মামলার রায় গিয়েছে ভারতের পক্ষেই। প্রাক্তন নৌসেনা অফিরসারের মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তানকে, কুলভূষণের বিরুদ্ধে যেইসব আরোপ তারা এনেছে সেগুলি এবং মৃত্যুদণ্ডের রায় ফের খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেখে নেওয়া যাক ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসের রায়ের মূল আটটি বিষয়। এর মধ্যে ১টি ক্ষেত্রে সর্বসম্মতভাবে রায় গিয়েছে ভারতের পক্ষে। বাকি ৭টি ক্ষেত্রে ভারতের পক্ষে রায় এসেছে ১৫-১ ভোটে।
ভারতের আবেদন ও আদালতের এক্তিয়ার
এদিন শুরুতেই জানিয়ে দেওয়া হয়, দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সম্পর্ক বিষয়ে ১৯৬৩ সালের ভিয়েনা কনভেনশন অনুযায়ী ভারতের আবেদন অনুযায়ী মামলাটি গ্রহণ করার সম্পূর্ণ এক্তিয়ার রয়েছে আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের। এই বিষয়ে সকলেই সম্মতি দিয়েছেন।
ভারতের আবেদনে পাকিস্তানের আপত্তি প্রত্যাখ্যাত
ভারতের আবেদনপত্রের আদালতের আন্তর্জাতিক আদালতে গ্রহণযোগ্য নয় বলে দাবি করেছিল পাকিস্তান। কিন্তু আদালতে এদিন ১৫-১ ভোটে সেই আপত্তি খারিজ হয়ে যায়। আদালত জানায় ভারতের আবেদন অবশ্যই গ্রহণযোগ্য।
পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তির বাধ্যবাধকতা মানেনি
ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তানের কুলভূষণকে তাঁর অধিকার সম্পর্কে অবহিত করতে ও দুতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে বাধ্য ছিল পাকিস্তান। তা না করায় তারা তাদের উপরে থাকা বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘন করেছে। এটির ক্ষেত্রেও উপস্থিত বিচারকদের ভোট ১৫-১এ ভাগ হয়েছে।
পাকিস্তান ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে
কুলভূষণের আটকের সময় ভারতীয় দূতাবাসকে সময় মতো সেই তথ্য না দিয়ে ভারতকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত করেছে পাকিস্তান। এর ফশ্রলে কনসুলার রিলেশনের ক্ষেত্রে ভিয়েনা চুক্তির ধারা লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান।
কুলভূষণের সঙ্গে যোগাযোগের অধিকার থেকে ভারতকে বঞ্চিত করা হয়েছে
পাক কারাগারে বন্দী থাকার সময়ে ভারত বারবার কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও তা মেনে নেয়নি পাকিস্তান। অথচ ভিয়েনা চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধবন্দী ভারতীয় নাগরিকের সঙ্গে দেখা করাটা ভারতের অধিকারের মধ্যেই পড়ে। তার আইনি সহায়তার ব্যবস্থা করার অধিকারও রয়েছে ভারতের। কোনওটাই না করতে দিয়ে ভারতকে বঞ্চিত করেছএ পাকিস্তান।
আর দেরি না করে কুলভূষণকে তাঁর অধিকার সম্পর্কে জানাতে বাধ্য পাকিস্তান
আদালত আরও বলেছে আর দেরি না করে কুলভূষণকে তাঁর অধিকার সম্পর্কে জানাতে ও ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে দিতে বাধ্য পাকিস্তান। এই ক্ষেত্রেও ১জন বিচারক ছাড়া বাকিরা সবাই এই রায়ের পক্ষেই ছিলেন।
কুলভূষণের অপরাধ ও রায়ের পর্যালোচনা
উপরোক্ত যে যে ধারাগুলি পাকিস্তান লঙ্ঘন করেছে, সেগুলি শুধরে নিয়ে পাকিস্তানকে আবার করে কুলভূষণের বিরুদ্ধে যে আরোপগুলি আনা হয়েছে এবং রায় দেওয়া হয়েছে তা পুনর্পর্যালোচনা করতে হবে।
মৃত্যুদন্ড স্থগিত রাখলে রায় পুনর্বিবেচনার একটি অপরিহার্য অবস্থা তৈরি হবে
কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ডে স্থগিতাদেশ জারি থাকলেই তাঁর অপরাধ রায়ের পুনর্বিবেচনা এবং কার্যকরি পর্যালোচনার অবস্থা তৈরি হবে। তাই মৃত্যুদণ্ড স্থগিত। এই বিষয়েও বিচারকদের ভাগাভাগি ছিল ১৫-১।