ইউরোপে নাকি বাড়ছে ইসলাম বিদ্বেষ
ফের এমন অভিযোগ করলেন ইমরান খান
মুসলিম রাষ্ট্রগুলি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক দিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী
তবে বালুচ নেতার বয়ানে ফেঁসে গিয়েছে তাঁর ঢাক
ইউরোপে 'ক্রমবর্ধমান ইসলাম বিদ্বেষ'এর বিরুদ্ধে মুসলিম রাষ্ট্রগুলি ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানালেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। এদিন মুসলিম রাষ্ট্রের নেতাদের উদ্দেশে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে ইমরান অমুসলিম রাষ্ট্রগুলিতে ক্রমবর্ধমান ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
মুসলিম বিশ্বে বাড়ছে উদ্বেগ, অস্থিরতা
চিঠিতে তিনি বলেছেন, গোটা বিশ্বেই মুসলিমদের মধ্যে উদ্বেগ এবং অস্থিরতা ক্রমে বাড়ছে। কারণ, তারা দেখছে পশ্চিমী বিশ্বে, বিশেষত ইউরোপে 'প্রিয় নবি'কে উপহাস ও বিদ্রূপের মাধ্যমে ইসলাম বিদ্বেষ এবং ইসলামের উপর আক্রমণের জোয়ার ক্রমে বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, ঘৃণা ও চরমপন্থার এই চক্রকে ভাঙতে সম্মিলিতভাবে মুসলিম বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে। নাহলে এই ঘৃণা ও চরমপন্থা হিংসা এবং মৃত্যুকে ডেকে আনবে।
মুসলমানদের শ্রদ্ধা করতে শিখতে হবে
পবিত্র গ্রন্থ কুরান এবং নবিজির প্রতি সমস্ত মুসলমানদের যে গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা রয়েছে তা অমুসলিম রাষ্ট্রগুলির নেতৃত্বকে, বিশেষত পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলিকে ব্যাখ্যা করার প্রযোজনীয়তার উপর জোর দিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। এই বিষয়ে মুসলিম নেতাদের একযোগে সরব হওয়ার আহ্বান করেছেন তিনি। তাঁর মতে পশ্চিমী বিশ্বকে বোঝাতে হবে, বিশ্বের বিভিন্ন সামাজিক, ধর্মীয় এবং জাতিগোষ্ঠীর মূল্যবোধ আলাদা। মুসলমানদেরও সমান শ্রদ্ধা জানাতে শিখতে হবে পশ্চিমী বিশ্বকে। তারাও কিন্তু বসনিয়া থেকে ইরাক বা আফগানিস্তানে পর্যন্ত প্রচুর মানুষের মৃত্যু দেখেছে। খোলা চিঠিতে ইমরান আরও দাবি করেছেন, শুধু হজরত মহম্মদ নন, যে কোন নবি, তিনি খ্রিস্টান বা ইহুদী-ও হতে পারেন - তাঁর নিন্দা করা ইসলামে অগ্রহণযোগ্য।
হিন্দুরা 'কাফের', ইহুদিরা ইসলামের শত্রু
প্রধানমন্ত্রী অমরান খান ধর্মীয় সহিষ্ণুতার কথা বললেও, মজার বিষয় হল পাকিস্তানেই পরধর্ম নিন্দার পাঠ শেখানো হয়। সম্প্রতি জেনেভায়, ইউএন ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ডারবান ডিক্লারেশন অ্যান্ড প্ল্যান অব অ্যাকশন-এর মঞ্চে, বালুচ ভয়েস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুনির মেনগাল, পাকিস্তানে কীভাবে ছোট থেকেই পরধর্মের প্রতি ঘৃণা তৈরি করা হয়, তা ফাঁস করে দিয়েছেন। এই বালুচ অধিকার কর্মী জানিয়েছেন, ক্যাডেট কলেজ নামে পরিচিত একটি উচ্চমানের পাক সরকার পরিচালিত আর্মি স্কুলে তিনি পড়তেন। সেখানে, শুরু থেকেই হিন্দুদের 'কাফের' বলে শেখানো হত। ইহুদিদের বলা হত ইসলামের শত্রু। এই কারণে তাদের মারতেও বাধা নেই।
নেই উইঘুর মুসলমানরা
এছাড়াও এদিনের খোলা চিঠিতে কোথাও ইমরান খান চিনের উইঘুর সম্প্রদায়ের কথা পর্যন্ত উল্লেখ করেননি। যেন শিনজিয়াং প্রদেশের এই মুসলিম জনজাতিকে নিয়ে তাঁর কোনও ভাবনাই নেই। কাশ্মীরে মুসলিম নির্যাতনের মিথ্য়া বয়ানও ছোট করে হলেও আরও একবার দিয়েছেন চিঠিতে। কিন্তু, তাঁর নিজের দেশে বালুচিস্তান, গিলগিট-বালতিস্তান বা দেসের অন্যান্য অঞ্চলে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের কথা স্থান পায়নি তাঁর খোলা চিঠিতে।