ভারতের বিরুদ্ধে বড়-সড় ষড়যন্ত্র চিন-পাকিস্তানের
চিনের অর্থায়নে 'তথ্য-যুদ্ধ'কে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান
এই যুদ্ধ বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে দেওয়া তাদের লক্ষ্য
সামরিক যুদ্ধের থেকেও এই যুদ্ধে জয় বেশি লাভের, এমনটাই তাদের ধারণা
ভারতের বিরুদ্ধে বড়-সড় ষড়যন্ত্র করছে চিন ও পাকিস্তান। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির হাতে আসা নথি অন্তত তাই বলছে। জানা গিয়েছে ভারতের বিরুদ্ধে এবং চিন-পাককিস্তানের অনুকূল খবর পরিবেশনের জন্য চিনের অর্থায়নে একটি আন্তর্জাতিক নিউজ মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গঠন করে 'তথ্য-যুদ্ধ'কে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চাইছে পাকিস্তান। জানা গিয়েছে ভারতের বিরুদ্ধে এই তথ্য-যুদ্ধকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাইছে ইসলামাবাদ। আর তার জন্যই বেজিং-এর কাছ থেকে আর্থিক ও দিকনির্দেশদগত সহায়তা চাইছে তারা। সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে সামরিক যুদ্ধ জয়ের থেকে তথ্য-যুদ্ধে জয়টা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এমনটাই মনে করছে তারা।
এক পাক সুরক্ষা স্থাপনা থেকে এই নথি ভারতীয় গোয়েন্দা এজেন্সিগুলির হাতে এসেছে বলে জানা গিয়েছে। 'ইন্ডিয়া টুডে'র এক প্রকিবেদন অনুযায়ী এই নথিটির নাম 'বিকল্প বর্ণনার মাধ্যমে ক্ষতিকর বর্ণনার সঙ্গে প্রতিযোগিতা করার ক্ষমতা বাড়ানো'। গবেষণাপত্রটিতে দাবি করা হয়েছে, এই প্রকল্পগুলি ভ্রান্ত ধারণা দূরীকরণ এবং সত্য ও বাস্তব ঘটনা তুলে ধরবে। চিনের সঙ্গে এই বিষয়ে অংশিদারী গড়ার বিষয়ে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি এই সংবাদমাধ্যম খোলার পক্ষে রয়েছে, কিন্তু আর্থিক চ্যালেঞ্জ বড় বাধা। তাই চিনের সঙ্গে দল বাধতেই হবে পাকিস্তানকে।
ওই নথিতে আরও বলা হয়েছে, এই সংবাদমাধ্যম হবে আল-জাজিরা বা আরটি অর্থাৎ রাশিয়া টুডে-র স্তরের। চিনের অর্থায়নে চলা পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম হলে তারা অভিষ্ঠ লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে পারবে, এমনই বলা হয়েছে ওই নথিতে। এতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মাপের সংবাদমাধ্যম বিশেষজ্ঞদের এই সংবাদমাধ্যমে নিয়োগ করা হবে।
সাম্প্রতিক অতীতে, পাকিস্তান ইসলামিক সংবাদমাধ্যম স্থাপন করার জন্য তুরস্কের সহযোগিতা চেয়েছিল। সেই চ্যানেলের মাধ্যমে বিশ্বের সামনে 'সঠিক ইসলামিক মূল্যবোধ' তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছিল তারা। কিন্তু, মূলতঃ উভয় পক্ষের আগ্রহ ও শক্তির অভাবে সেই প্রকল্পটি আর এগোয়নি। তবে চিনের অর্তায়নে সংবাদমাধ্যম তৈরির ক্ষেত্রে তেমনটা হবে না বলেই মনে করছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। সাম্প্রতিক চিনা কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো বৈঠকে, প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাদের কূটনীতিকদের বিশ্বব্যাপী সকল দেশকে আক্রমণ করার নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এই অবস্থায় এই প্রকল্পকে পাকিস্তানের সঙ্গে সঙ্গে চিন ও ভাবমূর্তি বদলানোর কাজে লাগানোর চেষ্টা করবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
পাকিস্তানের সাথে চিনের বন্ধুত্ব শুধুমাত্র সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং অন্য রূপ নিয়েছে এবং ক্রমবর্ধমান সম্পদ ভাগ করে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও কৌশলগত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় গোয়েন্দারা। ভারতের বিরুদ্ধে তথ্য যুদ্ধ চালানোর জন্য পাকিস্তান-চিন দল বেঁধেছে। লাদাখের সীমান্তে যখন উত্তেজনা চলছিল, সেই সময় পাকিস্তান ওই অঞ্চলে চীনপন্থী বিভিন্ন বিবরণী ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। চিনও, পাকিস্তানের জাতীয় ইলেক্ট্রনিক্স কমপ্লেক্সের অধীনে তথ্য সুরক্ষা ল্যাব স্থাপন করে সাইবার যুদ্ধের ডোমেনে সামর্থ্য তৈরিতে পাকিস্তানকে সহায়তা করছে।