ক্যাপ্টেন বিক্রম বার্তার প্রেম ছিল বাঁধভাঙা ঢেউ। তাতেই আটকে আজও স্মৃতি আঁকড়ে জীবন কাটাচ্ছেন ডিম্পল।
আর কিছু দিন পরেই সেলুলয়েডে মুক্তি পাবে কার্লিগ হিরো বিক্রম বার্তার জীবনী অবলম্বনে তৈরি 'শেরশাহ'। তাই অভিনেতা সিদ্ধার্থ মলহত্রার আর কিয়ারা আদবানীর পাশাপাশি জোর চর্চায় রয়েছে আসল হিরো বিক্রম বার্তাও। ১৯৯৯ সালে কার্গিল যুদ্ধে শহিদ বিক্রম বার্তাকে কোনও দিনই ভুলবে না দেশ। দীর্ঘ দিনই এই শহিদ ক্যাপ্টেনের লড়াই, অদম্য মনোভাব আর সাহসীকরা মিথ হয়ে থাকবে ভারতবাসীর মনে। তিনি হাসতে হাসতে ভারতের সীমান্ত রক্ষার জন্য পাকিস্তানের সেনা বাহিনীর গুলির সামনে নির্ভয় দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাক সেনাবাহিনীর গুলির সামনে থাকে সগযোদ্ধাকে উদ্ধার করতে গিয়ে নিজের জীবন দিতেও একমুহূর্ত চিন্তাভাবনা করেননি। সেই বিক্রম বার্তা কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনেই অন্যধরনের ছিলেন।
নীরজ চোপড়ার সোনা জয়ের পথ সহজ ছিল না, অসাধ্য সাধনে ভূমিকা ছিল মোদী সরকারেরও
দেশ আর জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে দ্বিতীয়বার ভাবতেন না বিক্রম বার্তা। তাঁর সহযোদ্ধারাই জানিয়েছেন, তিনি নাকি বারবার বলতেন, 'জাতীয় পকাতা উত্তোলন করে তবেই ফিরে আসব। না হলে জাতীয় পাতায় মুড়ে আমার দেহ আসবে। এটা নিশ্চিত যে আমি ফিরে আসবই।' এতটাই দৃঢ়় মানসিকতা ছিল ক্যাপ্টেন বিক্রম বার্তার। সহকারী বা অধীনস্ত সেনাদের কাছেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত প্রিয়। একগুলি বছর পরেও তাঁকে মনে রেখেছেন তাঁর সহযোদ্ধারা। সেই বিক্রম বার্তার লাভ লাইনই ছিল তাঁরই মত অন্য রকমের।
বিক্রম বার্তা বান্ধবী ছিলেন ডিম্পল চিমা। পঞ্জাব বিশ্ববিদ্যায়লে পড়াশুনা করতেন দুজনে। সেই সময়ই তাঁদের প্রথম আলাপ। তারপর ধীরে ধীরে প্রেমের সম্পর্কের পরিণতি পায়। দুই পরিবারের সদস্যরাও জানতেন। কিন্তু১৯৯৬ সালেই বিক্রম সেনা অ্যাকাডেমিতে সুযোগ পেয়ে দেরহাদুন চলে যান। দূরত্ব তৈরি হলেও প্রেমে কেনও ফাটল পড়েনি।
ভূপেন হাজারিকার বিক্রি করে দেওয়া ৭ বিঘা জমি অধিগ্রহণ, তৈরি হবে সংস্কৃতিক কেন্দ্র
ডিম্পলের কথা থেকেই জানা যায় প্রেমিক ক্যাপ্টেন বার্তাকে। ডিম্পল নিজেই জানিয়েছেন, একটা সময় দুই পরিবারের তাঁদের বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছিল। সেই সময় তিনি নিজেও নিরাপত্তাহীনতা থেকে বিক্রমকে বিয়ের কথা বলেছিলেন। তারপর আর এক মূহুর্ত দেরি করেননি বিক্রম। নিজের পার্স থেকে একটা ব্লেড বার করে নিজের বুড়ো আঙুল কেটে রক্তদিয়ে সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছিলেন ডিম্পলকে। সেটাই এখনই পর্যন্ত ডিম্পলের প্রিয় মূহুর্ত বলেও জানিয়েছেন শহিদ বিধবা। এখনও তিনি নিজেকে বিক্রম বার্তার বিধবা স্ত্রী হিসেবেই স্বীকৃতি দিতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
এটাই একমাত্র স্মৃতি নয় আরও ছোট ছোট স্মৃতি রয়েছে ডিম্পলের। যার এখনও বুকে আঁকড়ে ধরে রয়েছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন তাঁরা মনসা দেবী মন্দির আর গুরুদুয়ারা শ্রী নাডা সাহেবে প্রায়ই যেতেন। সেই সরকমই একবার ক্যাপ্টেন বিক্রম বার্তার সঙ্গে দর্শনের জন্য গিয়েছিলেন। দুজনে মন্দির পরিক্রমার পর আচমকাই বিক্রম তাঁকে আভিনন্দন জানিয়ে বলেছিলেন 'মিসেস বার্তা'। তখন তিনি খেয়াল করেন তাঁরা চার বার প্রদর্শন করেছেন। যার বিবাহিতরাই করে থাকেন। বিক্রম তাঁকে বলেছিলেন কারগিল থেকে ফিরেই বিয়ে করবেন তাঁরা। কিন্তু আর ফেরা হয়নি কার্গিল হিরোর। কিন্তু ক্যাপ্টেন বার্তার প্রেমের চার বছরের স্মৃতি আঁকড়েই এখনও জীবন কাটাচ্ছেন ডিম্পল।