Mahalaya 2023: সকাল থেকে 'শুভ মহালয়া' লিখে মেসেজ পাঠাচ্ছেন? ঠিক-ভুল জেনে নিন

মহালয়ার পর থেকে দুর্গাপুজোর দিন গোনা শুরু হলেও, এই দিনটিকে কি ‘শুভ’ বলা চলে? এই নিয়ে রয়েছে বহু মতভেদ।

মহালয়ার সকাল থেকে ঘাটে ঘাটে জমে যায় পিতৃতর্পণের ভিড়। কিছু মানুষ সকাল থেকেই ‘শুভ মহালয়া’ বলে অথবা লিখে শুভকামনা জানাতে থাকেন। মহালয়ার পর থেকে দুর্গাপুজোর দিন গোনা শুরু হলেও, এই দিনটিকে কি ‘শুভ’ বলা চলে? এই নিয়ে রয়েছে বহু মতভেদ।

মহালয়ার তর্পণের আচারের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মহাভারতের কাহিনী। কুন্তী-পুত্র কর্ণ সারাজীবন ধরে বহু মানুষকে অর্থ ধন সম্পত্তি দান করে এসেছিলেন, এজন্য তাকে ‘দাতা কর্ণ’ বলা হত। তাঁর মৃত্যুর পর তিনি যখন স্বর্গে গেলেন, তখন সেখানে তাঁকে খাবার খাওয়ার জন্য প্রচুর সোনা এবং রত্ন দেওয়া হল। কর্ণ এর কারণ জানতে চান, দেবতারা তাঁকে জানান যে, ইহকালে তিনি কোনওদিন পিতৃপুরুষের উদ্দেশে খাদ্যদ্রব্য বা জল দান করেননি। সারাজীবন ধরে তিনি কেবলমাত্র সোনা এবং রত্নই দান করে এসেছেন। সেই কারণেই কর্ণকে স্বর্গলোকে সোনা বা রত্ন খাদ্য হিসাবে দান করা হচ্ছে। কর্ণ জানান, তিনি পিতৃপুরুষ সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন না। সেজন্যই তিনি পিতৃপুরুষকে অন্ন এবং জল দান থেকে বিরত ছিলেন। তখন, কর্ণকে এক পক্ষকাল সময় দেওয়া হয় মর্ত্যলোকে গিয়ে পিতৃপুরুষের উদ্দেশে জল দান করে তাঁদের তৃষ্ণা নিবারণের জন্য। এই সময়কাল ছিল পিতৃপক্ষ, ১৬ দিন।

কিংবদন্তি অনুসারে, স্বর্গ এবং মর্ত্যের মাঝে রয়েছে পিতৃলোক। এই লোকের শাসনকর্তা যম, যিনি মৃত ব্যক্তির আত্মাকে মর্ত্য থেকে পিতৃলোকে নিয়ে যান। পুরাণ অনুযায়ী, জীবিত ব্যক্তির পূর্ববর্তী তিন পুরুষ পিতৃলোকে অবস্থান করেন। লোকবিশ্বাস, পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষের আত্মা তৃষ্ণা নিবারণের উদ্দেশে মর্ত্যলোকে আগমন করে। পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে জল দান করলে পূর্বপুরুষের তৃষ্ণা নিবারণ হয়। হিন্দু শাস্ত্রে রয়েছে যে, মৃত ব্যক্তির বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে দান করা জলে তাঁদের তৃষ্ণা নিবারণ হয়। যাঁরা পূর্বপুরুষের বাৎসরিক শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করতে সক্ষম হন না, তাঁরা পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষকে জল দান করতে পারেন। পিতৃপক্ষ প্রেতকর্মের জন্য (শ্রাদ্ধ, তর্পণ, মৃত্যু সংক্রান্ত আচার বা কর্ম) প্রশস্ত, শুভ কর্মের জন্য নয়। অমাবস্যা তিথি প্রেতকর্মের পক্ষে সর্বোত্তম তিথি।

এই কারণে মহালয়ার দিন অর্থাৎ পিতৃপক্ষের অমাবস্যা তিথিতে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে জল দান বা তর্পণ প্রথা পালিত হয়। পিতৃপক্ষে পূর্বপুরুষের উদ্দেশে তর্পণে জল দানে পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ মেলে বলে মনে করা হয়। সনাতন বিশ্বাসে সাংসারিক সুখ, সমৃদ্ধি এবং শান্তি প্রাপ্তি হয়। তাই, যেহেতু শ্রাদ্ধানুষ্ঠানকে ‘শুভ’ বলা চলে না, এই অনুষ্ঠানে মানুষকে শুভেচ্ছাও জানানো যায় না, সেহেতু শাস্ত্রজ্ঞ পণ্ডিতরা মনে করেন যে, মহালয়াকেও ‘শুভ মহালয়া’ বলা চলে না। যদিও এই ধারণার ভিন্ন মতও আছে। 

অনেকে মনে করেন, যেহেতু এই দিনে শুভক্ষণে পূর্ব পুরুষদের তৃষ্ণা নিবারণ হয়, তাই এই সময়কালটি অবশ্যই শুভ, সেজন্য একে ‘শুভ’ মহালয়া বলাই যায়। অপরদিকে, আরও কিছু মানুষ মনে করেন যে, দিনটি যেহেতু ‘মহা আলয়’, অর্থাৎ মহত্ত্বের আলয় (নিরাকার ব্রহ্মের আশ্রয়ই হল মহালয়), সেহেতু একে ‘শুভ’ বলায় কোনও বাধা নেই। 

Latest Videos

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

'আমরা স্বাধীন করালাম আর বাংলাদেশ বাবা-মা ভাবছে পাকিস্তানকে', বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন Locket Chatterjee
Dev Adhikari : এবার কী আসছে খাদান ২? খাদান সাফল্য পেতেই বড়সড় ঘোষণা দেব-যীশুদের
সৎ বাবা না পাষণ্ড! কাণ্ড দেখে আঁতকে উঠবেন আপনিও! | South 24 Parganas News Today
New Alipore-এ বস্তিতে বিধ্বংসী আগুন! পুড়ে ছাই একাধিক ঝুপড়ি, আগুন নেভাতে মরিয়া দমকল
‘West Bengal-এ জঙ্গিদের সরকারের মুখোশ Mamata Banerjee’ Suvendu Adhikari-র ঝাঁঝালো তোপ মমতাকে