শনি গ্রহের প্রতীক পেঁচাকেই কেন বাহন করেছিলেন মা লক্ষ্মী? পুরাণ অনুযায়ী পেঁচা কি শুভ

আজ জেনেনি পুরাণ মতে পেঁচা শুভ না অশুভ প্রাণী। যদিও পুরাণে কোনও প্রাণীকেই শুভ বা অশুভ তকমা দেওয়া হয়নি। কারণ প্রত্যেকটি প্রাণী তৈরি হয়েছে সৃষ্টির কারণে।

 

দুর্গাপুজো শেষ। কোজাগরি লক্ষ্মী পুজোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে বাঙালির ঘরে। মূলত ওপার বাংলার পুজো। কিন্তু বর্তমানে ঘটি বাঙাল নির্বিশেষে প্রায় সকলের বাড়িতেই কোজাগরি লক্ষ্মীপুজো করা হয়। এই পুজোর অর্থই হল পূর্ণিমার রাতে মা লক্ষ্মী মর্তে নেমে আসেন। যে গৃহস্থ রাতের অন্ধকারেও মা লক্ষ্মীর আরাধনা করেন তাদের বাড়িতে তিনি ঠাঁই নেন। তিনি রাতের অন্ধকে 'কে গেজে রয়' এই কথা বলতে বলতে ঘুরে বেড়ান।'কে গেজে রয়' এই কথা থেকেই কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সূচনা। মা লক্ষ্মীর সঙ্গে রাতের অন্ধকারে থাকে তাঁর বাহন সাদা পেঁচা। অনেকেই আবার সাদা পেঁচাকে লক্ষ্মীপেঁচাও বলে। কিন্তু কথা হচ্ছে মা লক্ষ্মীর বাঙালির কাছে অত্যান্ত শুভ দেবী। তাঁর বাহনকে অনেকেই অশুভ বলে মনে করে। কিন্তু সত্যি কি পেঁচা অশুভ?

আসুন আজ জেনেনি পুরাণ মতে পেঁচা শুভ না অশুভ প্রাণী। যদিও পুরাণে কোনও প্রাণীকেই শুভ বা অশুভ তকমা দেওয়া হয়নি। কারণ প্রত্যেকটি প্রাণী তৈরি হয়েছে সৃষ্টির কারণে। ব্রহ্মা এই সৃষ্টি করেছেন অনেক ভেবে চিন্তে। তবুও পরবর্তীকালে মানুষ পশু-পাখিদের মধ্যেও শুভ অশুভ করে।

Latest Videos

সাধারণ মানুষ পেঁচাকে অশুভ বলার কারণ- পেঁচা দিনের বেলায় কোটর থেকে বার হয় না। রাতের অন্ধকারে শিকার ধরে। নিশাচর। সাধারণ মানুষের মনে রাতকে অশুভ হিসেবে বিবেচনা করে। তাই পেঁচাকে অশুভ বলে মনে করে। পেঁচার ডাক অনেক কর্কশ। অনেকেরই ধারণা পেঁচাও কাকের মত মৃত্যু সংবাদ বহন করে। পেঁচাকে শনিগ্রহের প্রতীক বলেও অনেকে মনে করেন।

পুরাণ অনুযায়ী পেঁচা শুভ, কারণ- লিঙ্গ পুরাণে নারদ মুণি বলেছেন, মানস সরোবরের কাছে যে পেঁচাদের বাস তাদের থেকে সঙ্গীত সাধনা শেখা উচিৎ। প্রাচীন ঋষিমুণিদের কথায় পেঁচা রাতের অন্ধকারে ঘুরে বেড়ায়। অর্থাৎ রাতে দেখতে পায়, এটি পেঁচার দূরদৃষ্টির কথা বোঝায়। প্রাচীন ঋষিদের কথায় পেঁচায় দিব্যশক্তি রয়েছে। তাই পেঁচা অন্ধকার জগতের প্রতীক নয়।

পেঁচা কেন লক্ষ্মীদেবীর বাহন তাই নিয়েও পুরাণে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে ব্রহ্মা বিশ্বব্রাহ্মণ্ড তৈরি করার পরে দেবতারা মর্তে আগমণ করেন। তারা পায়ে হেঁটেই বিশ্ব পরিদর্শন করেন। সেই সময় অনেক প্রাণী তাদের বাহন হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। অর্থাৎ তাদের নিজেদের পিঠে বা ঘাড়ে বসিয়ে ভ্রমণ করাতে চায়। মা লক্ষ্মী অর্থাৎ ধনের দেবীর বাহন হওয়ার জন্য অনেক পশু আর পাখিদের মধ্যেই বিবাদ বা লড়াই হয়েছিল। তাদের শান্ত করতে মা লক্ষ্মী বলেন পরের বছর কার্তিক পূর্ণিমার সময় তিনি মর্তে আসবেন। রাতের বেলা। সেই সময় যে প্রাণী তার কাছে সকলের আগে পৌঁছাবে তিনি সেটিকেই বাহন নিযুক্ত করবেন। কথামত পরের বছর কার্তিক পূর্ণিমার সময় মা লক্ষ্মী মর্তে আসন। রাতের অন্ধকারে সকলেই যখন ঘুমিয়ে পড়েছিল সেই সময় মা লক্ষ্মীর প্রতীক্ষায় একমাত্র জেগে বসেছিল পেঁচা। তাই মা লক্ষ্মী পেঁচাকেই তাঁর বাহন হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন।

 

Read more Articles on
Share this article
click me!

Latest Videos

প্রয়াগে ডুব দিয়ে পবিত্র স্নান সারলেন যোগী আদিত্যনাথ | CM Yogi | Prayagraj | Mahakumbh 2025 |
'Mamata Banerjee-র জন্যই অভয়ার এই অবস্থা' বলতে গিয়ে এ কী বললেন Suvendu Adhikari, দেখুন
শুভেন্দুর বিরাট ঘোষণা! সোনাচূড়ার আড়াই বিঘা জমিতে হবে বিশাল Ram Mandir | Suvendu Adhikari
'সনাতনী সম্মেলন'-এ Suvendu Adhikari-র বিশেষ বার্তা, দেখুন সরাসরি
‘RG Kar-র তথ্য প্রমাণ Mamata Banerjee-র নির্দেশে লোপাট হয়েছে’ বিস্ফোরক Adhir Ranjan Chowdhury