জয়ের জন্য বাকি ৭৩ রান। হাতে এক উইকেট। দ্বিতীয় টেস্ট জিতে অ্যাসেজ নিজেদের দখলে রেখে দেওয়াটা তখন অস্ট্রেলিয়ার কাছে সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু অন্যরকম ভেবেছিলেন বেন স্টোকস। বাইশ গজে অসম্ভবকে সম্ভব করে দেওয়াটা এখন যেন তাঁর কাছে জলভাত। বিশ্বকাপ ফাইনালের নায়ক আরও একবার তা প্রমাণ করে দিলেন। তাই এগারো নম্বর ব্যাটসম্যানকে সঙ্গী করে ৭৬ রানের পার্টনারশিপ গড়ে ইংল্যান্ডকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়লেন বাঁ হাতি অলরাউন্ডার। স্টোকস যখন চার মেরে ইংল্যান্ডকে জেতাচ্ছেন, তখন হয়তো হেডিংলির মাঠে উপস্থিত কয়েক হাজার দর্শকেরও বিশ্বাস হচ্ছে না, চোখের সামনে তাঁরা ক্রিকেট দেখলেন, নাকি রূপকথা।
এক কথায় স্টোকসের অপরাজিত ১৩৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসের সৌজন্যেই অ্যাসেজে সমতা ফেরাল ইংল্যান্ড। দশম উইকেটে স্টোকস এবং জ্যাক লিচের মধ্যে ৭৬ রানের পার্টনারশিপ হয়। তাতে লিচের অবদান সতেরো বল খেলে মাত্র ১ রান। বাকিটা বুঝে নেন স্টোকস নিজেই। ৯ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রানের বিশাল লক্ষ্যমাত্রা পার করে ফেলে ইংল্যান্ড।
অ্যাসেজের ইতিহাস তো বটেই, বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসেও অন্যতম সেরা টেস্ট ম্যাচের সাক্ষী থাকল হেডিংলি। চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ৩৫৯ রানের প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের। রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভাল না হলেও সেই ধাক্কা সামলে উঠেছিল ইংল্যান্ড। একটা সময়ে ২৪৫ রানে ৫ উইকেট হারালেও শেষ দিকে ফের দ্রুত উইকেট হারাতে থাকে ইংরেজরা। ফিরে যান রুট (৭৭), ডেনলি (৫০)। বেয়ারস্টো (৩৬) চেষ্টা করলেও চাপের মুখে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন। বিশ্বকাপ ফাইনালের মতোই একদিকে দাঁড়িয়ে তা দেখছিলেন স্টোকস। আর অপেক্ষা করছিলেন একজন সঙ্গীর জন্য।
শেষ পর্যন্ত অবশ্য ২৮৬ রানের মাথায় ইংল্যান্ডের নবম উইকেটের পতন হয়। অ্যাসেজের দ্বিতীয় টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার জয় তখন সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু অন্যরকম ভেবেছিলেন বেন স্টোকস। এগারো নম্বর ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচকে নিয়ে সেখান থেকে পাল্টা আক্রমণ গড়ে তোলেন তিনি।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে হ্যাজেলউড নেন চারটি উইকেট। কিন্তু স্টোকসকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি। গোটা মাঠে সম্ভবত স্টোকস আর লিচই বিশ্বাস করেছিলেন, যে ওই অবস্থা থেকেও ইংল্যান্ড ম্যাচ জিততে পারে। হয়তো বিশ্বকাপ ফাইনালের থেকে পাওয়া আত্মবিশ্বাসের জোরেই এ দিন ফের একবার অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখালেন বেন স্টোকস।