ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ৩০০-র কাছাকাছি যাত্রী প্রাণ হারিয়েছেন। সারা দেশে এই ঘটনায় শোকের আবহ। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থা এই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।
ওড়িশায় ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় যে শিশুরা বাবা-মাকে হারিয়েছে, তাদের বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন বলে ঘোষণা করলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন তারকা ব্যাটার বীরেন্দ্র সেহবাগ। গুরুগ্রামে সেহবাগ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে এই শিশুদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাক্তন তারকা ক্রিকেটার। সেহবাগ ট্যুইট করে জানিয়েছেন, ‘এই শোকের মুহূর্তে আমার পক্ষে ন্যূনতম যা করা সম্ভব সেটা করছি। যে শিশুরা এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় বাব-মাকে হারিয়েছে, তাদের সন্তানদের শিক্ষার ভার নিতে পারি আমি। আমি এই শিশুদের সেহবাগ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের বোর্ডিংয়ে রেখে বিনামূল্যে শিক্ষার ব্যবস্তা করতে পারি।’
এর আগে আদানি গ্রুপের পক্ষ থেকেও ট্রেন দুর্ঘটনার জেরে পিতৃ-মাতৃহীন হয়ে পড়া শিশুদের স্কুলশিক্ষার ব্যবস্থা করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানি বলেছেন, ‘ওড়িশায় ট্রেন দুর্ঘটনায় আমরা গভীরভাবে বিচলিত। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যে নিষ্পাপ শিশুরা এই দুর্ঘটনায় বাবা-মাকে হারিয়েছে, তাদের স্কুলের শিক্ষার দায়িত্ব নেবে আদানি গ্রুপ। এই দুর্ঘটনার বলি হয়েছে যারা, তাদের পাশে থাকা এবং শিশুদের ভবিষ্যৎ যাতে ভালো হয় সেই ব্যবস্থা করা আমাদের সবারই দায়িত্ব।’
ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনায় অন্তত ২৮৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। আহতের সংখ্যা ১,০০০-এর কাছাকাছি। প্রাথমিকভাবে জানা যায়, শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস, বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ও একটি মালগাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তবে রবিবার রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুধু করমণ্ডল এক্সপ্রেসই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। বাকি ২টি ট্রেনের দুর্ঘটনা হয়নি। তবে ঠিক কী কারণে এরকম ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটল, সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব হচ্ছে না। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, তিনি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
রবিবার জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই দুর্ঘটনায় ২৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ১,০০০ জনেরও বেশি যাত্রী আহত হয়েছেন। সংবাদসংস্থা এএনআই-কে এনডিআরএফ-এর ডিরেক্টর জেনারেল অতুল কারওয়াল জানিয়েছেন, ‘উদ্ধারকার্য শেষ হয়ে গিয়েছে। আমার মনে হয় না দুর্ঘটনাস্থলে ধ্বংসাবশেষ থেকে আর কোনও জীবিত বা মৃত ব্যক্তিকে পাওয়া যাবে। প্রতিটি জায়গা কয়েকবার খতিয়ে দেখা হয়েছে। আমার মনে হয় এবার ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’
রেলমন্ত্রীও জানিয়েছেন, উদ্ধারকার্য শেষ হয়ে গিয়েছে। এখন ট্র্যাক, ওভারহেড তার সারিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন-
'অ্যান্টি কলিশন ডিভাইস কেন ছিল না, আমি সব করে দিয়েছিলাম' বিজেপিকে ঝাঁঝালো আক্রমণে মমতা
করমন্ডল এক্সপ্রেস করে ভিন রাজ্যে পাড়ি, দুর্ঘটনার পর নিখোঁজ বাংলার তিন শ্রমিক