বিশ্বকাপের নক-আউট পর্যায়ে পর্তুগালের প্রথম একাদশে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোকে না রাখা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। ফের সেই বিতর্ক উস্কে দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট।
পর্তুগালের তারকা ফুটবলার ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর পাশে দাঁড়িয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য় করলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসিপ তাইয়িপ এর্দোগান। তাঁর দাবি, কাতার বিশ্বকাপের সময় রোনাল্ডোকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাসিত করা হয়েছিল। প্যালেস্তাইনকে সমর্থন করার জন্যই রোনাল্ডোর সঙ্গে এরকম আচরণ করা হয়েছে বলে দাবি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের। একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, 'রোনাল্ডোকে ব্যবহার না করে অপচয় করা হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তাঁর উপর রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ম্যাচের যখন আর মাত্র ৩০ মিনিট বাকি, সেই সময় রোনাল্ডোর মতো একজন ফুটবলারকে মাঠে নামানো তাঁকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। এর ফলে তাঁর ভাল খেলার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রোনাল্ডো এমন একজন ফুটবলার, যিনি প্যালেস্তাইনকে সমর্থন করেন।' তুরস্কের প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের পর ফুটবল দুনিয়ায় আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। পর্তুগালের সেরা ফুটবলার রোনাল্ডো। তাঁকে যদি সত্যিই জাতীয় দলে রাজনৈতিক কারণে কোণঠাসা করে রাখা হয়, তাহলে সেটা মারাত্মক ঘটনা। বিশ্ব ফুটবলে এরকম ঘটনা নজিরবিহীন।
এবারের বিশ্বকাপে নক-আউট পর্যায়ের কোনও ম্যাচেই পর্তুগালের প্রথম একাদশে রোনাল্ডোকে রাখেননি তৎকালীন কোচ ফেরান্দো স্যান্টোস। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে সুইৎজারল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের শেষদিকে পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নামানো হয় রোনাল্ডোকে। এরপর কোয়ার্টার ফাইনালে মরক্কোর বিরুদ্ধে পর্তুগাল যখন পিছিয়ে, সেই সময় দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে পরিবর্ত হিসেবে রোনাল্ডোকে মাঠে নামানো হয়। কোচের সঙ্গে ঝামেলার জেরেই রোনাল্ডোকে প্রথম একাদশে রাখা হচ্ছে না বলে শোনা গিয়েছিল। বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন ফেরান্দো। বিশ্বকাপ থেকে পর্তুগাল বিদায় নেওয়ার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন ফেরান্দো। তিনি বিশ্বকাপ চলাকালীন প্রথম একাদশে রাোনাল্ডোকে না রাখা নিয়ে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কিন্তু তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দাবি সম্পূর্ণ আলাদা।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রোনাল্ডোকে প্যালেস্তাইনের সমর্থক বলে দাবি করলেও, 'সি আর সেভেন' কিন্তু কোনওদিন প্রকাশ্যে প্যালেস্তাইনের পক্ষে মুখ খোলেননি। যদিও তাঁকে নিয়ে ভুয়ো খবর ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি পুরস্কার হিসেবে পাওয়া সোনার বুট নিলাম করে পাওয়া ১৫ লক্ষ ইউরো প্যালেস্তাইনের জন্য দান করেছেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। কিন্তু ২০১৯ সালে সেই খবর অস্বীকার করে রোনাল্ডোর সঙ্গে যুক্ত একটি স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট কোম্পানি। রোনাল্ডো প্যালেস্তাইনের সমর্থনে একটি পোস্টার তুলে ধরেছেন বলে ছবিও ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সেই ছবি ছিল বিকৃত। ২০১১ সালে স্পেনে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য একটি পোস্টার তুলে ধরেছিলেন রোনাল্ডো। সেই ছবি বিকৃত করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন-
পেলের শারীরিক অবস্থার অবনতি, সাও পাওলোর হাসপাতালেই আছেন পরিবারের সদস্যরা
তিতের বিদায়ের পর ব্রাজিলের নতুন কোচ হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে জিনেদিন জিদান
মেসিই অনুপ্রেরণা, পরের বিশ্বকাপে ব্রাজিলকে চ্যাম্পিয়ন করার জন্য লড়াই শুরু করছেন নেইমার