
ডুরান্ডের শুরুতেই ডার্বি জয় করেছিল ইস্টবেঙ্গল। গোটা মরশুমেই দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স দিয়ে ১৯ বছর ডুরান্ড কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। শেষ ২০০৪ সালে মোহনবাগানকে হারিয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। ১৯ বছর পর এবার বদলা নেওয়ার সুযোগ সবুজ-মেরুণ দলের কাছে। মরশুমের শুরুতে হারের বদলাও কি এবার নিতে পারবে বাগান? ডুরান্ডের শুরুতেই বাংলাদেশ আর্মির বিরুদ্ধে দু’গোলে এগিয়েও ড্র করে ইস্টবেঙ্গল। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের আশা থাকলেও সমর্থকরা একরমক নিশ্চিত ফলাফল ধরেই নিয়েছিল। কিন্তু নাটকীয়ভাবে ছবি পালটে গেল পরের ম্যাচগুলোতে।
গ্রুপ পর্বের খেলাতেও ডার্বি দেখেছিল ইস্ট-মোহন সমর্থকেরা। প্রতিবারের ইতিহাসকে মিথ্যে করে ফিনিক্স পাখির মতো জেগে উঠেছিল লাল-হলুদ দল। মোহনবাগানের বিরুদ্ধে মরশুমের প্রথম ডার্বিতে অবিশ্বাস্য জয় ইস্টবেঙ্গলের। এরপর একের পর এক ধাপ পেরিয়ে ফাইনালে ওঠে কুয়েদ্রাতের দল। অবশেষে ১৯ বছর পর ফের ডুরান্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল। কাপ জয় আর মাত্র একটা ম্যাচের দূরত্ব। সামনে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বি মোহনবাগান।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ডুরান্ড কাপের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরেই আয়োজকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শুক্রবার সকালে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান তাঁবু থেকে ফাইনালের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এরপর শুক্রবার সন্ধেবেলা জানানো হল, সব টিকিট বিক্রি হয়ে গিয়েছে। এর অর্থ, রবিবার গ্যালারিতে তিল ধারণের জায়গা থাকছে না। এতেই ডুরান্ড কাপ ফাইনাল ঘিরে লাল-হলুদ ও সবুজ-মেরুন সমর্থকদের উৎসাহ-উদ্দীপনা বোঝা যাচ্ছে। অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন, টিকিটের কালোবাজারি হবে। এই ম্যাচ ঘিরে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে, তাতে ২ দলের সমর্থকদের মধ্যে বচসা, হাতাহাতির আশঙ্কাও থাকছে। ফলে বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের ভিতরে ও বাইরে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা উচিত।
সমর্থকদের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের কর্মকর্তারাও রবিবারের ম্যাচের আগে উত্তেজিত। এবারের ডুরান্ড কাপে প্রথম কলকাতা ডার্বির পরেই মোহনবাগানের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত ফুটবলার রেজিস্ট্রেশনের অভিযোগ এনেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের প্রধান কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। এবারের ম্যাচের আগে তার সঙ্গে যোগ হয়েছে রেফারিং বিতর্ক। কোয়ার্টার ফাইনালে মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের বিরুদ্ধে মুম্বই সিটি এফসি-কে ন্যায্য পেনাল্টি দেওয়া হয়নি। সেমি-ফাইনালে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে বক্সের বাইরে ট্যাকলে পেনাল্টি পায় সবুজ-মেরুন। এই ২টি ঘটনাকে সামনে রেখে ফাইনালের আগে সরব হয়েছে ইস্টবেঙ্গল। শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে লাল-হলুদ শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার বলেন, 'ডুরান্ড কাপ চলাকালীন একটি বিশেষ ক্লাবকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ৪ জন ফুটবলারকে রেজিস্ট্রেশন করতে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ম্যাচে রেফারির সিদ্ধান্ত ওদের পক্ষে যাচ্ছে। আইএসএল ফাইনালে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধেও একই ঘটনা দেখা গিয়েছিল। এফসি গোয়ার কোচ বলেছে, অন্যায্য পেনাল্টি পেয়েছে মোহনবাগান। আমরা চাই রবিবার যেন এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। নিয়ামক সংস্থা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করুক। কোনও একটি ক্লাবকে কেন এরকম সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে আমরা জানি না। তাহলে বাকি ক্লাবগুলির দল গড়ে, খেলে কোনও লাভ নেই।'