খবরের কাগজ পাকিয়ে গোল করে খেলা শুরু, ফুটবল-সম্রাটের মুকুট পরেই বিদায় পেলের

এক মাস হাসপাতালে থাকার পর প্রয়াত ফুটবল-সম্রাট পেলে। তাঁর প্রয়াণের খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিশ্বজুড়ে শোকের আবহ।

Web Desk - ANB | Published : Dec 30, 2022 2:21 AM IST / Updated: Dec 30 2022, 08:35 AM IST

ফুটবলারদের মধ্যে বিশ্বজুড়ে যাঁদের খ্যাতি, তাঁদের অন্যতম পেলে। যাঁরা ফুটবলের কোনও খবর রাখেন না, ফুটবলের সঙ্গে কোনওরকম সম্পর্ক নেই, তাঁরাও পেলের নাম জানেন। সেই কারণেই পেলের প্রয়াণে ব্রাজিলে যেমন শোক, তেমনই কলকাতা থেকে কঙ্গো, সর্বত্র শোকের আবহ। সব জায়গায় মানুষ শোকপ্রকাশ করছেন। এমনই পেলের মহিমা। তিনি আর ফুটবল সমার্থক। সেই কারণেই তাঁকে গত শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ ফুটবলারের সম্মানে ভূষিত করেছিল ফিফা। ক্লাব ও আন্তর্জাতিক ফুটবল মিলিয়ে ১,০০০-এর বেশি গোল, ব্রাজিলের হয়ে ৩ বার বিশ্বকাপ জয়, ১৭ বছর বয়সে বিশ্বকাপ ফাইনালে জোড়া গোল, সবই রেকর্ডের খাতায় আছে এবং থাকবে। কিন্তু পেলের সবচেয়ে বড় সাফল্য হল, তিনি সারা বিশ্বে ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তোলেন। সাতের দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফুটবলের প্রসার ঘটানোর জন্য় পেলেকে নিয়ে গিয়েছিল নিউ ইয়র্ক কসমস। ব্রাজিল ও স্যান্টোস ছাড়া একমাত্র কসমসের হয়েই খেলেন পেলে। তাঁর জন্যই সারা বিশ্বে পরিচিত হয়ে ওঠে কসমসের নাম। সেই দলের হয়ে কলকাতায় খেলতে এসেছিলেন পেলে। ইডেন গার্ডেন্সে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন পেলে।

১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের মিনাস গেরাইস প্রদেশে দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় পেলের। ছোটবেলায় তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ ছিল, ফুটবল কেনার ক্ষমতা ছিল না। মোজার মধ্যে খবরের কাগজ পাকিয়ে গোল করে সেটাকেই বল বানিয়ে খেলা শুরু করেন পেলে। এভাবে খেলতে খেলতেই তিনি ছোটবেলায় সবার নজর কেড়ে নেন। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ১৫ বছর বয়সে স্থানীয় একজন কোচ ওয়াল্ডেমার ডে ব্রিটো পেলেকে স্যান্টোস ক্লাবে নিয়ে যান। তিনি স্যান্টোসের তৎকালীন কোচকে বলেন, 'এই ছেলেটা বিশ্বের সেরা ফুটবলার হবে।' পেলেকে ট্রায়াল দিতে বলা হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই তাঁর খেলা দেখে মুগ্ধ হন স্যান্টোসের কোচ। তখনই পেলেকে স্যান্টোস ক্লাবের হয়ে সই করিয়ে নেওয়া হয়।

১৯৬৯ সালে স্যান্টোসের হয়ে নাইজেরিয়ার রাজধানী লাগোসে একটি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিলেন পেলে। সেই সময় নাইজেরিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছিল। পেলের খেলা দেখার জন্যই ৪৮ ঘণ্টার জন্য যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে বিবাদমান ২ পক্ষ।

১৯৫৬ থেকে ১৯৭৪ পর্যন্ত স্যান্টোসের হয়ে খেলার পর ১৯৭৫ সালে কসমসের হয়ে খেলতে যান পেলে। দেশের হয়ে তাঁর শেষ ম্যাচ ১৯৭১ সালে যুগোস্লাভিয়ার বিরুদ্ধে। ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে যিনি শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন, তিনি এখনও সমান জনপ্রিয়। যতদিন ফুটবল খেলা হবে, ততদিন পেলের নাম মনে রাখবেন ফুটবলের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকে।

আরও পড়ুন-

চলে গেলেন তিনবারের বিশ্বকাপ জয়ী কিংবদন্তী ফুটবলার পেলে, ৮২ বছর বয়সে প্রয়াণ

'আমায় ক্ষমা করুন', বিশ্বকাপ জিতেও কেন ভক্তদের কাছে ক্ষমা চাইলেন মেসি?

রোনাল্ডোকে রাজনৈতিকভাবে নির্বাসিত করা হয়েছে, দাবি তুরস্কের প্রেসিডেন্টের

Read more Articles on
Share this article
click me!