এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকারে এশিয়ানেট নিউজের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন মীরাবাঈ চানু, সঙ্গে ছিলেন তাঁর কোচ বিজয় শর্মা।
পদক জিতেছেন। ভারতের আশা পূর্ণ করেছেন। টোকিও অলিম্পিকে পদক তালিকায় নাম তুলেছেন নিজের দেশের। মীরাবাঈ চানু এখন সকলের নয়নের মণি। কিন্তু টোকিও যাওয়ার রাস্তা মোটেও সহজ ছিল না। এশিয়ানেট নিউজকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকারে সেই চড়াই উতরাইয়ের কথায় অকপট মীরাবাঈ। জানালেন কতটা অন্ধকার ছিল তাঁর আলোয় আসার রাস্তা। সেই সঙ্গে জানালেন তাঁর কঠোর পরিশ্রমকে তিনি ব্যর্থ হতে দেননি।
এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাতকারে এশিয়ানেটের সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলেন মীরাবাঈ চানু, সঙ্গে ছিলেন তাঁর কোচ বিজয় শর্মা। চানু জানালেন টোকিওতে তাঁর কঠিন পরিশ্রম দাম পেল। এটা একটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো ঘটনা। এই মেডেল তিনি তাঁর দেশকে উৎসর্গ করতে চান। যে ১৩০ কোটি মানুষের আশীর্বাদে ও প্রার্থনায় আজ এখানে পৌঁছেছেন তিনি এই মেডেল তাঁদের। মীরাবাঈ জানান, পজক জেতার পরে ফোন পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।
কেমন ছিল সেই স্বপ্নের মুহুর্ত
মীরাবাঈ বলেন যখন ৪৯ কেজি ইভেন্ট শেষ করলাম, তখনই ইন্দ্রিয় বলছিল পদক হয়ত পেয়েছি। রূপোর মেডেল যে পাব, তা নিয়ে নিশ্চিত ছিলাম। তবে সোনা পাওয়ার জন্য প্রাণপন লড়েছিলাম। তবে দুর্ভাগ্য যে তা পেলাম না। তবে রূপো পেয়ে খুশি। আমার অন্যতম বড় সাফল্য এটা।
মনের অবস্থা কেমন ছিল
ইভেন্টে নামার আগে অসম্ভব টেনশনে ছিলেন মীরাবাঈ। এত মানুষের প্রত্যাশার চাপ বওয়া সহজ নয়। নার্ভ শক্ত রেখে ইভেন্টে নেমেছিলেন। জয় পাওয়ার পর সব টেনশন উধাও হয়ে গিয়েছিল। এই ব্যাপারে সাহায্য করেছিলেন কোচ বিজয় শর্মা। যেভাবে প্রাকটিস করিয়েছেন তিনি, তা পদক আনতে সাহায্য করেছে। বহুবার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে, তাতে টোকিও পদক পাওয়ার রাস্তা আরও সুগম হয়েছে। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যে ট্রেনিং তিনি পেয়েছিলেন, তাতে লাভ হয়েছে।
চানু বলেন ঘাড় ও কাঁধের জয়েন্টে একটা সমস্যা ছিল। আমেরিকায় ফিজিওথেরাপিস্টের সহায়তা তা কাটিয়ে ওঠেন তিনি। এতে কঠোর পরিশ্রম করতে অসুবিধা হয়নি। চানুর সাফল্য আনন্দিত কোচ বিজয় শর্মাও। তিনি বলেন রিও অলিম্পিক থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল। সেই শিক্ষা কাজে লাগিয়ে ট্রেনিং হয়। সাফল্য এসেছে তাতে।
তবে এখনই থামতে রাজী নন চানু। পদক জয়ের আনন্দে মশগুল হতে রাজী নন তিনি। সামনের লক্ষ্য পরের অলিম্পিক, প্যারিস থেকে সোনা ঘরে আনতে চান চানু। কোচের গলাতেও সেই সুর। রূপো জয়ে সন্তুষ্ট নন তিনি। এবার লক্ষ্য সোনা।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমস, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ সহ একাধিক প্রতিযোগিতায় পদক পাওয়ার আশাটা আগেই পূরণ হয়েছিল। কিন্তু অধরা থেকে গিয়েছিল অলিম্পিকের মঞ্চে পদক জয়। ২০১৬ রিও অলিম্পিকে আশা জাগিয়েও সাফল্য আসেনি। তারপর একের পর এক প্রতিযোগিতায় নজির গড়লেও, রিও-র ক্ষতটা এই ৫ বছর ধরে নিজের অন্দরেই বয়ে বেড়াচ্ছিলেন মীরাবাই চানু। অবশেষে রিও-র ক্ষতে প্রলেপ টোকিও অলিম্পিকে। হল স্বপ্নপূরণ। ভারোত্তলনের ৪৯ কেজি বিভাগে রূপো জিতে ইতিহাস তৈরি করলেন মীরাবাই চানু।