পিটি ঊষা, দীপা কর্মকার, পিভি সিন্ধু, ক্রীড়াক্ষেত্রে দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন এই মহিলারা

ভারতীয় অ্যাথলেটিক্সের কথা উঠলেই যে দু'জনের কথা সবার আগে শোনা যায় তাঁরা হলেন মিলখা সিং ও পিটি ঊষা। দু'জনেই অলিম্পিক্সে পদক জিততে পারেননি। কিন্তু এশিয়ান গেমসে অসাধারণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। মহিলা ক্রীড়াবিদদের কাছে আজও অনুপ্রেরণার নাম ঊষা।

২০০০ সালে সিডনি অলিম্পিক্সে ভারত একটিমাত্র পদক পেয়েছিল। সেই পদকটি পেয়েছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম জেলার ভারত্তোলক কর্ণম মালেশ্বরী। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান গেমসেও একাধিক পদক পেয়েছেন মালেশ্বরী। তিন অর্জুন পুরস্কার, খেলরত্ন, পদ্মশ্রী পেয়েছেন।

ভারতের যে সমস্ত মহিলা ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য পেয়েছেন, তাঁদের অন্যতম সাইনা নেহওয়াল। ২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জেতেন হায়দরাবাদের এই তারকা। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ, এশিয়ান গেমস, কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, উবের কাপেও সাফল্য পেয়েছেন সাইনা।

অলিম্পিক্সে একাধিকবার পদক, বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা, রুপো, ব্রোঞ্জ, উবের কাপে একাধিকবার পদক, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ, কমনওয়েলথ গেমসে পদক জিতেছেন শাটলার পিভি সিন্ধু। অর্জুন পুরস্কার, খেলরত্ন, পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ পেয়েছেন এই তারকা।

একসময় ভারতীয় টেনিসের কথা উঠলেই লিয়েন্ডার পেজ, মহেশ ভূপতির নাম উল্লেখ করা হত। কিন্তু এই পরিস্থিতি বদলে দেন সানিয়া মির্জা। প্রথম ভারতীয় মহিলা টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে আন্তর্জাতিক স্তরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পান সানিয়া। তাঁর জন্যই দেশে টেনিসের জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।

উত্তর-পূর্ব ভারতের ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরা থেকে রিও অলিম্পিক্সে পৌঁছনো কতটা কঠিন ছিল, সেটা দীপা কর্মকার, তাঁর কোচ বিশ্বেশ্বর নন্দী ও পরিবারের সদস্যরাই জানেন। ভারতের প্রথম জিমন্যাস্ট হিসেবে অলিম্পিক্সে যোগ্যতা অর্জন করেন দীপা। রিওতে চতুর্থ স্থান পেলেও, সারা দেশের গর্ব ও অনুপ্ররণা এই জিমন্যাস্ট।

৪০০ মিটার দৌড়ে এখন জাতীয় রেকর্ড অসমের হিমা দাসের দখলে। প্রথম ভারতীয় অ্যাথলিট হিসেবে আইএএএফ অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন হিমা। ২৩ বছরের এই অ্যাথলিট এশিয়ান গেমসেও একাধিক পদক জিতেছেন।

মণিপুরের বক্সার এমসি মেরি কম সবদিক থেকেই অনুপ্রেরণা। তিনি যেভাবে লড়াই করে উঠে এসেছেন এবং সাফল্য পেয়েছেন তার তুলনা নেই। লন্ডন অলিম্পিক্সে ব্রোঞ্জ জেতা ছাড়াও একমাত্র মহিলা হিসেবে ৬ বার অ্যামেচার বিশ্ব বক্সিং চ্য়াম্পিয়নশিপ জিতেছেন, একমাত্র মহিলা হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ৭ সংস্করণেই পদক জিতেছেন, একমাত্র বক্সার হিসেবে ৮ বার বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক জিতেছেন।

প্রথম ভারতীয় মহিলা কুস্তিগীর হিসেবে অলিম্পিক্সে পদক জেতার নজির গড়েন সাক্ষী মালিক। রিও অলিম্পিক্সে ৫৮ কেজি বিভাগে ব্রোঞ্জ জেতেন সাক্ষী। কমনওয়েলথ গেমস, এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপেও পদক জিতেছেন সাক্ষী।

১৯৯৯ সালে স্পাইনাল টিউমারে আক্রান্ত হয়ে প্রায় পঙ্গু হয়ে যান। কিন্তু সেই অবস্থা থেকেও মনের জোরে ঘুরে দাঁড়িয়ে শট পাট, জ্যাভলিন থ্রো, ডিসকাস থ্রো, স্যুইমিং, মোটরসাইক্লিং শুরু করেন দীপা মালিক। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে প্যারালিম্পিক্সে পদক জেতেন তিনি।