রবিবার দিল্লি পুলিশ যেভাবে সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগট, বজরং পুনিয়াকে জোর করে আটক করেছে, সারা দেশের বিভিন্ন মহল সেই ঘটনার নিন্দায় সরব। রাজনীতিবিদরাও কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের পাশে থাকার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন। ট্যুইট করে দিল্লি পুলিশের আচরণের তীব্র নিন্দা করেছিলেন। বুধবার পথেও নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর হাতে ছিল বিচারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড। মিছিলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকের হাতেই ছিল জাতীয় পতাকা। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলাররা ছিলেন মিছিলে। আইএফএ, বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরাও মিছিলে ছিলেন। বিভিন্ন ক্রীড়ার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরাও মিছিলে যোগ দেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পরিস্থিতি আমাদের নীরব থাকতে দিচ্ছে না। আমাদের কুস্তিগীরদের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত অন্যায়। অভিযুক্তকে যতক্ষণ না গ্রেফতার করা হচ্ছে ততক্ষণ বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে। সবার কাছে আমার আবেদন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে চারটেয় ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির কাছে মোমবাতি হাতে আসুন। মোমবাতি জ্বালিয়ে আমরা বিচারের দাবিতে সরব হব।' কুস্তিগীরদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগট, বজরং পুনিয়াদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।
এদিকে, দিল্লি পুলিশ যেভাবে কুস্তিগীরদের জোর করে আটক করে যন্তর মন্তর থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়, সেই ঘটনার কঠোর নিন্দা করেছে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি। এর আগে বিশ্ব কুস্তি সংস্থাও এই ঘটনার নিন্দা করেছে। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনকে সাসপেন্ড করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। এবার আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘সপ্তাহান্তে ভারতীয় কুস্তিগীরদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তাতে আমরা অত্যন্ত বিচলিত। আইওসি-র পক্ষ থেকে আমাদের দাবি, কুস্তিগীররা যে অভিযোগ এনেছেন, তার নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষী প্রমাণিত হলে স্থানীয় আইন অনুযায়ী সাজার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা জানি, ফৌজদারি ধারা অনুযায়ী তদন্তের প্রথম প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কিন্তু আরও ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তদন্তে যাতে ফল পাওয়া যায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের অনুরোধ, তদন্তের এই পর্যায়ে অভিযোগকারী অ্যাথলিটদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। তদন্ত যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয়, সেই ব্যবস্থাও করতে হবে।’
বুধবার দিল্লি পুলিশের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতার করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কুস্তিগীররা যে অভিযোগ এনেছেন, তার স্বপক্ষে প্রমাণ পাওয়া যায়নি। সেই কারণেই এখন ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন-
ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতার করার মতো প্রমাণ নেই, দাবি দিল্লি পুলিশের
'রাস্তায় বিচারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে,' কুস্তিগীরদের পাশে মোহনবাগানের অধিনায়ক প্রীতম
আর্থিক সমস্যায় চিকিৎসা করাতে পারছেন না, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আর্জি পিয়ালির