যন্তর মন্তর থেকে কুস্তিগীরদের জোর করে সরিয়ে দেওয়া হলেও, আন্দোলন থামছে না। সারা দেশ থেকে সমর্থন পাচ্ছেন কুস্তিগীররা। কলকাতাতেও চলছে প্রতিবাদ মিছিল।
ঘোষণা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার বিকেলে গড়ের মাঠে গোষ্ঠ পালের মূর্তির কাছে মোমবাতি মিছিলে যোগ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। প্রাক্তন ফুটবলারদের মধ্যে ছিলেন মেহতাব হোসেন, সৈয়দ রহিম নবি, আলভিটো ডি কুনহা, বিকাশ পাঁজি, মাধব দাসরা। মহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের কর্তা কামারউদ্দিন, বেঙ্গল অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়কেও মিছিলে দেখা যায়। হাতে জ্বলন্ত মোমবাতি নিয়ে হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী, ক্রীড়ামন্ত্রী। মিছিলে অনেকের হাতেই কুস্তিগীরদের প্রতি হওয়া অন্যায়ের বিচারের দাবিতে প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। সবাই বিচারের দাবিতে সরব হন। রাজ্যের দুই কুস্তিগীরকে চাকরি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতার না করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'বিসিসিআই-সহ সব ক্রীড়া সংস্থার প্রধান বিজেপি নেতারা। সব কমিটির মাথায় নিজেদের নেতাকে বসিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। তার ফলে যোগ্য খেলোয়াড়রা সুযোগ পাচ্ছেন না। আমি ক্রীড়ামন্ত্রী থাকার সময় নিয়ম জারি করেছিলাম, কোনও ক্রীড়া সংস্থার মাথায় রাজনৈতিক নেতারা থাকবেন না। কিন্তু বিজেপি কোনও নিয়মই মানছে না।'
ব্রিজভূষণ ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকার ও কেন্দ্রের শাসক দলকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করা কুস্তিগীরদের আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। ওঁরা অনেক পরিশ্রম করেছেন, অনেক লড়াই করেছেন, দেশের জন্য ঘাম ঝরিয়েছেন। পকসো আইনে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা উচিত ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও গ্রেফতার করা হয়নি। কুস্তিগীরদের ভয় দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে। দেশের নাগরিক হিসেবে আমি লজ্জিত। বিশ্ব কুস্তি সংস্থা ভারতকে সাসপেন্ড করবে বলেছে। দেশের সব ক্রীড়াবিদের প্রতিবাদে সামিল হওয়া উচিত। আমি কুস্তিগীরদের বলব, লড়াই ছাড়বেন না। আপনারা সত্যের জন্য লড়াই করছেন। আমি আপনাদের সমর্থনে প্রতিনিধি পাঠাব।'
এর আগে বুধবার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'পরিস্থিতি আমাদের নীরব থাকতে দিচ্ছে না। আমাদের কুস্তিগীরদের উপর যেভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, সেটা অত্যন্ত অন্যায়। অভিযুক্তকে যতক্ষণ না গ্রেফতার করা হচ্ছে ততক্ষণ বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে।'
রবিবার দিল্লি পুলিশের সঙ্গে দেশের প্রথমসারির কুস্তিগীর সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগটদের ধস্তাধস্তির ছবি জনমানসে প্রভাব ফেলেছে। সারা দেশ এই ঘটনায় উত্তাল। বিভিন্ন অংশের মানুষ কুস্তিগীরদের আন্দোলনকে সমর্থন করছেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও কুস্তিগীরদের পাশে দাঁড়িয়েছেন।
আরও পড়ুন-
ব্রিজভূষণ শরণ সিংকে গ্রেফতার করার মতো প্রমাণ নেই, দাবি দিল্লি পুলিশের
'রাস্তায় বিচারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে,' কুস্তিগীরদের পাশে মোহনবাগানের অধিনায়ক প্রীতম
আর্থিক সমস্যায় চিকিৎসা করাতে পারছেন না, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আর্জি পিয়ালির