কাসপারস্কাইয়ের গবেষণা অনুসারে, এখন হ্যাকারদের বড় আস্তানায় পরিণত হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। এই মেসেজিং অ্যাপকে ব্যবহার করেই তারা হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক গ্রাহকের তথ্য।
এক বছরে একাধিকবার হোয়াটসঅ্যাপের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হ্যাকারদের তাণ্ডব নিয়ে একাধিকবার ব্যবহারকারীদের সতর্ক করা হয়েছে। কারণ অনেক সময় ব্যবহারকারীদের অজান্তেই হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের তথ্য ও অর্জিত অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে হ্যাকাররা। অপরাধীরা সাধারণত সেই প্ল্যাটফর্মগুলিকে লক্ষ্য করে যা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় যাতে তারা খুব সহজেই আক্রমণ করতে পারে।
আর এই কারণের জন্য বিভিন্ন ভাইরাসের দ্বারা ভুগতে হচ্ছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজকেও। তবে কাসপারস্কাইয়ের গবেষণা অনুসারে, এখন হ্যাকারদের বড় আস্তানায় পরিণত হয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ। এই মেসেজিং অ্যাপকে ব্যবহার করেই তারা হাতিয়ে নিচ্ছে একাধিক গ্রাহকের তথ্য।
ফিশিং আক্রমণ হল প্রতারণামূলক যোগাযোগ পাঠানোর অভ্যাস যা একটি সম্মানিত উৎস থেকে পাঠানো হয়। এটি সাধারণত ইমেলের মাধ্যমেই করা হয়ে থাকে। এর লক্ষ্য হল ক্রেডিট কার্ড এবং লগ ইন তথ্যের মতো সংবেদনশীল তথ্য চুরি করা অথবা যার তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে তার মেশিনে ম্যালওয়্যার ইনস্টল করা।
কীভাবে বুঝবেন যে আপনার ফোনটিকে টার্গেট করা হচ্ছে?
আপনার স্মার্টফোন হয়তো এতদিন ঠিকই চলছিল। কিন্তু, হঠাৎ করেই তা বিগড়ে যাচ্ছে। তাহলেই বুঝবেন যে আপনার ফোনে কোনও ম্যালওয়ার ইনস্টল করা হয়েছে। যা আপনার ফোনকে প্রভাবিত করছে। ফিশিং আক্রমণ মূলত একটা পদ্ধতি যার মাধ্যমে কোনও ভুয়ো বা বিভ্রান্তিকর ওয়েবসাইটের দ্বারা ব্যবহারীরা নিজেদের তথ্য দিয়ে দেন হ্যাকারদের হাতে। কাসপারস্কাইয়ের গবেষকদের মতে, এই বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের বেশি মাত্রায় টার্গেট করা হয়।
কীভাবে প্রতারিত করা হয় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের ?
অনেক সময় হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের পুরস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রলোভিত করা। এমনকী, ব্যবহারকারীদের বলা হয় 'আপনি ১ কোটি (আনুমানিক) টাকা জিতেছেন। সেই টাকা পাওয়ার জন্য আপনাকে আগে কিছু পরিমাণ অর্থ এই অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে হবে।' এভাবে অনেকেই টাকা দিয়ে বসেন। ব্যস তারপর দেখতে দেখতে পুরো অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যায়। কিন্তু, লটারির টাকা আর তাঁর কাছে এসে পৌঁছায় না।
কাসপারস্কাইয়ের গবেষণা অনুসারে, অনেক সময় হ্যাকাররা ভুয়ো ওয়েবসাইট তৈরি করে। আর সেখানে থেকে অপরিচিতদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ করে দেয়। সেই লোভে পা দিয়ে অনেকেই কথোপকথন শুরু করার চেষ্টা করেন। তারপর তাঁদের একটি ভুয়ো ফেসবুক লগইন পেজে নিয়ে যাওয়া হয়। আর ব্যস ততক্ষণে আপনার সব তথ্য হাতিয়ে নেয় হ্যাকাররা। এছাড়া অনেক সময় ভুয়ো মেল থেকে লিঙ্কও পাঠানো হয়। সেখানে ক্লিক করার সঙ্গে সঙ্গেই আপনার ফোন বা কম্পিউটারে ম্যালওয়ার ইনস্টল হয়ে যায়।
আরও পড়ুন- চার্জে দিয়ে ব্লুটুথ হেডফোন ব্যবহার, ফেটে গিয়ে মৃত্যু যুবকের
তাই এই সব হ্যাকারদের হাত থেকে বাঁচার জন্য অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের। কখনও যদি এমন কোনও লিঙ্ক আসে তাহলে যাচাই না করে কোনওভাবেই সেগুলিতে ক্লিক করবেন না। বুঝতে না পারলে ডিলিট করে দিন। কোনও মেল খোলার আগে অবশ্যই তা যাচাই করে নেবেন। আর কোথাও যদি বলা হয় আপনি এত টাকা জিতেছেন তবে তার আগে আপনাকে সামান্য পরিমাণ অর্থ ট্রান্সফার করতে হবে, তাহলে সেগুলি থেকে দূরে থাকুন। কারণ এগুলি একেবারেই সঠিক নয়। এভাবেই বিভিন্ন পদ্ধতিতে আপনার চারপাশে ফাঁস পেতে বসে রয়েছে হ্যাকাররা। আপনার অজান্তেই এভাবে তাদের হাতে চলে যেতে পারে যাবতীয় তথ্য।
আরও পড়ুন- টাইপ না করেই মেসেজ পাঠান হোয়াটসঅ্যাপে, দেখুন কীভাবে করবেন