ভারতের মাটিতে বসেই যেন চিনকে সরাসরি চ্যালেঞ্জ জানালেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন। নয়াদিল্লির ঘটনা যেমন মনে করাচ্ছে ৫ বছর আগে ওয়াশিংটনে দলাই লামা-ওবামা সাক্ষাৎকে, তেমনই ঘোষণা করছে চিনা দখলদারি অস্বীকারের অঙ্গীকার।
দলাই লামাকে বরাবর চিন বলে থাকে আমেরিকার চর, বিচ্ছিন্নতাবাদী। সম্প্রতি পরবর্তী দলাই লামা বাছাই নিয়েও আমেরিকার সঙ্গে বেজিং-এর একপ্রস্থ কথার লড়াই হয়ে গিয়েছে। কাজেই এরমধ্যে দলাই লামার সঙ্গে মার্কিন সরকারের যোগাযোগ হলে চিন যে ভালবাবে তা নেবে না, তা বলাই বাহুল্য। কিন্তু, বুধবার ভারত সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিংকেন ঠিক সেটাই করলেন। এদিন নয়াদিল্লিতে তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা দলাই লামার প্রতিনিধিদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন এই মার্কিন শীর্ষস্থানীয় কর্তাব্যক্তি।
মার্কিন বিদেশ দফতরের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, ব্লিনকেন-এর সঙ্গে এদিন খুব সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য সাক্ষাত করেন কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসন বা প্রবাসা তিব্বত সরকারের প্রতিনিধি এনজিডুপ ডংচং। গত কয়েকমাসে তিব্বতে চিনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ক্রমাগত সমালোচনা করে গিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ২০২০ সালের নভেম্বরে প্রবাসী তিব্বতি সরকারের প্রাক্তন প্রধান লবস্যাং সাঙ্গে হোয়াইট হাউসেও গিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করতে। গত ছয় দশকের মধ্যে এই ঘটনা প্রথমবার ঘটেছিল। তার ঠিক এক মাস পরে, মার্কিন কংগ্রেস তিব্বত নীতি ও সমর্থন আইন পাস করে। সেই আইন অনুযায়ী আমেরিকা পরবর্তী দলাই লামা বাছাইয়ের জন্য তিব্বতীদের অধিকার এবং তিব্বতের রাজধানী লাসায় একটি মার্কিন কনস্যুলেট প্রতিষ্ঠা করা হবে। অর্থাৎ বকলমে তিব্বতকে চিনের থেকে পৃথক দেশ হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
১৯৫০ সালে তিব্বত দখল করেছিল চিন সেনা। বেজিং সেই দখলদারিকে বলেছিল 'শান্তিপূর্ণ স্বাধীনতা'। বেজিংয়ের শাসনের বিরুদ্ধে তার বিদ্রোহ ব্যর্থ হওয়ার পর, ১৯৫৯ সালে দলাই লামা পালিয়ে এসে ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সেই থেকে তিনি ধর্মশালায় অবস্থান করছেন। সেখানেই গঠিত হয়েছে প্রবাসী তিব্বতি সরকার। ২০১৬ সালে ওয়াশিংটনে তত্কালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে দেখা করেছিলেন দলাই লামা। তারপর থেকে ডিংচংয়ের সঙ্গে ব্লিংকেনের এই সাক্ষাতই তিব্বতি নেতৃত্বের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য সরাসরি যোগাযোগ বলা যেতে পারে। েকইসঙ্গে ই বৈঠক বুঝিয়ে দিচ্ছে তিব্বতে চিনা প্রভুত্ব মানবে না ভারত-মার্কিন জোট।
আরও পড়ুন - লাদাখের ডেমচকে চিনা অনুপ্রবেশ - দলাই লামার জন্মদিন পালনে বাধা, আতঙ্কিত গ্রামবাসীরা
আরও পড়ুন - গড়ে উঠবে চিন-বিরোধী মহাজোট, দাদাগিরির না মেনে বছর-শেষে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাস্টারস্ট্রোক
চিনা বিদেশ মন্ত্রক খনও পর্যন্ত ই সাক্ষাতের বিষয়ে কোনও বিবৃতি দেয়নি। তবে খুব শীঘ্রই বেজিং থেকে এর জবাব দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে।