গত কয়েকদিন দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আমেরিকাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে ভারত। তবে মার্কিন মুলুকের সামগ্রিক পরিস্থিতি কিন্তু এখনও যথেষ্ট আশঙ্কার। গোটা দুনিয়ায় যেখানে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২ কোটির কাছাকাছি সেখানে মার্কিন মুলুকেই মোট সংক্রমণ ৫০ লক্ষ ছাড়িয়েছে। অর্থাৎ বিশ্বের ২৫.৫ শতাংশ করোনা রোগীই রয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
আক্রান্তের পাশাপাশি মার্কিন মুলুকে মৃতের সংখ্যাও আশঙ্কা বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দেশে করোনার বলি হয়েছে ১ লক্ষ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ। যা করোনায় বিশ্বে মোট মৃতের সংখ্যার এক তৃতীয়াংশ। গবেষণায় উঠে এসেছে, প্রতি ৬৬ জন বাসিন্দার মধ্যে একজন কোভিড-১৯ পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: উহানে ৯০ শতাংশ করোনা জয়ী এখন ভুগছেন ফুসফুসের সমস্যায়, নিত্যসঙ্গী অক্সিজেন মেশিন
মার্কিন বিশেষজ্ঞরা অনেক আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, করোনাভাইরাসে আমেরিকায় ২ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হবে। কোভিডের পিক আসার আগেই কিন্তু দেড় লক্ষের উপর মৃত্যু হয়েছে। এই অবস্থায় মৃত্যু কোথায় গিয়ে থামবে, তা নিয়ে নতুন করে চর্চা চলছে দেশটিতে । আমেরিকার ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এক পূর্বভাসে জানিয়েছেন, চলতি বছর ১ ডিসেম্বরের মধ্যেই কোভিডে মৃত মার্কিনির সংখ্যা তিন লক্ষ ছাড়িয়ে যাবে।
সম্প্রতি হোয়াইট হাউসের সংক্রামক রোগ বিষয়ক পরামর্শদাতারা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, অবিলম্বে সতর্ক না-হলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বড় শহরগুলি করোনভাইরাসের হটস্পটে পরিণত হবে। পালটা প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপের উপর জোর দিতে বলা হয়। তার মধ্যেই ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির হেলথ মেট্রিক্স অ্যান্ড ইভাল্যুয়েশন ইনস্টিটিউট এই পূর্বাভাস সামনে এসেছে।
কিন্তু এর মধ্যেও স্কুলে ক্লাস চালু করায় জোর দিতে থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাধ্য হয়ে গত মাসে স্কুল খোলার অনুমোদন ও গাইডলাইন প্রকাশ করে সেন্টার অব ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশান। গত সপ্তাহেই তাই পুনরায় ক্লাসও শুরু করে দেয় কিছু স্কুল। আর তারপরেই ফের দুঃসংবাদ। মিসিসিপিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম করোনা হটস্পট। সেখানেও চালু হতেই পরপর অসুস্থ হতে শুরু করেছেন ছাত্রছাত্রীরা।
এই পরিস্থিতিতে মার্কিন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি বছরের শেষে মার্কিন মুলুকে কার্যকর ও নিরাপদ অন্তত একটি ভ্যাকসিন ব্যবহারের উপযোগী হবে। কিন্তু সামনেই দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তাই ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই যুক্তরাষ্ট্রের করোনা ভ্যাকসিন আসছে বলে দাবি করে চলেছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।