চড়ক পশ্চিমবঙ্গ ও ওপার বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। চৈত্রের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব। বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পুজোর উৎসব চলে।
চড়ক পশ্চিমবঙ্গ ও ওপার বাংলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ লোকোৎসব। চৈত্রের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ ঐতিহ্যবাহী এই উৎসব। বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিনব্যাপী চড়ক পুজোর উৎসব চলে। এটি চৈত্র মাসে পালিত হিন্দু দেবতা শিবের গাজন উৎসবের একটি অঙ্গ। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলা বসে যা চড়ক সংক্রান্তির মেলা নামে পরিচিত। জনশ্রুতি রয়েছে, সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামের এক রাজা এই পুজোর প্রচলণ করেন। গম্ভীরাপুজো বা শিবের গাজন এই চড়কেরই রকমফের। এই পুজোরই বিশেষ এক অঙ্গ, যা নীলপুজো নামে পরিচিত। চড়কের বিশেষ অংশ হল কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত কয়লার ওপর দিয়ে হাঁটা। শিবের বিয়ে, অগ্নিনৃত্য, চড়কগাছে দোলা এবং হাজরা পুজো করাও এর অংশ। এই সব পুজোরই মূলে রয়েছে ভূতপ্রেত ও পুনর্জন্মবাদের ওপর বিশ্বাস। এর বিভিন্ন অনুষ্ঠান প্রাচীন কৌমসমাজে নরবলিও প্রচলিত ছিল। পুজোর উৎসবে বহু প্রকারের দৈহিক যন্ত্রণা ধর্মের অঙ্গ বলে বিবেচিত হত। ভক্ত বা সন্ন্যাসীর পিঠে, হাতে, পায়ে, জিহ্বায় লোহার শলাকা ফুঁড়ে দেওয়া হয়। ১৮৬৩ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ সরকার আইন করে এ নিয়ম বন্ধ করে। তবে গ্রামের সাধারণ লোকের মধ্যে এখনও তা প্রচলিত আছে।