দূর হিমালয়ের কোল থেকে চলে আসা নদীর স্রোত। মাঝে মাঝে কাশফুলের বন যেন বলে দেয় কেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে জীবানন্দ, রবীন্দ্রনাথরা বাংলার প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় এত এত লেখা লিখেছেন। উজার করে দিয়েছেন নিজেদের। ঘন নীলাকাশ মাথায় রেখে সামনে এগোতেই কালো পিচরাস্তা যেন সাঁপের মতো এঁকে-বেঁকে এগিয়ে চলে।
ডুয়ার্সের (Dooars) বুকে যত পর্যটনকেন্দ্র রয়েছে তার মধ্যে ঝালং-বিন্দুর (Jhalong-Bindu)নাম সর্বাগ্রে আসে। আর সেই ঝালং-বিন্দুর খোঁজে বেরিয়ে পড়া এক বর্ষামাখা দুপুরে। সফর শুরু হয়েছিল নিউ মাল জংশন (New Mal Junction) থেকে। প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে তবে পৌঁছানো যায় বিন্দুতে। আর বিন্দুর রাস্তাতেই রয়েছে ঝালং। আরও এক হিল পয়েন্ট। যেখান থেকে হিমালয়ের এক অন্যন্য রূপ প্রত্যক্ষ করা যায়। এই এলাকাটি মূলত হিমালয়ের পাদদেশ (The Himalaya)। কিন্তু তাতেও রয়েছে উঁচু-উঁচু পাহাড়। বহু নিচ দিয়ে বয়ে যাওয়া পাহাড়ি নদী। সবুজ বনাঞ্চল (Green Scenic Beauty)। যেখানে বর্ষা সবুজের মাহাত্ম্য ও সৌন্দর্যকে যেন আরও বাড়িয়ে দেয়। দূর কোণে দৃশ্যমান পাহাড়ের মাথায় খেলে বেড়ানো মেঘের দল। বলগে গেলে প্রকৃতির মনে ঘোর লাগানো এক পরিবেশ। স্বাভাবিকভাবেই যে কোনও কাউকেই আকর্ষণ করবে। নিউ মাল জংশন থেকে বেরিয়েই মালবাজার শহর (Malbazar)। আর সেই মালবাজার শহর পার করতেই চারপাশে খোলা প্রকৃতির রূপ। মাথার উপরে ঘন নীলাকাশ। দূর হিমালয়ের কোল থেকে চলে আসা নদীর স্রোত। মাঝে মাঝে কাশফুলের বন যেন বলে দেয় কেন দ্বিজেন্দ্রলাল রায় থেকে জীবানন্দ, রবীন্দ্রনাথরা বাংলার প্রকৃতির রূপ বর্ণনায় এত এত লেখা লিখেছেন। উজার করে দিয়েছেন নিজেদের। ঘন নীলাকাশ মাথায় রেখে সামনে এগোতেই কালো পিচরাস্তা যেন সাঁপের মতো এঁকে-বেঁকে এগিয়ে চলে। ঝালং-বিন্দু যাওয়ার পথেই পড়ে চাপড়ামাড়ির জঙ্গল (Chapramadi Jungle)। ঘন জঙ্গলের বুকে চিরে রাস্তা। তা দিয়ে এগোতেই সামনে এক রেল লেভেল ক্রসিং। যেখানে তখন হর্ন বাজিয়ে রেল গেট পার করতে ব্যস্ত এক মালগাড়ি। এই এলাকাটা অ্যানিম্যাল করিডর বলে পরিচিত। মূলত হাতির দলই এই করিডর দিয়ে যাতায়াত করে। মাঝে মাঝে অবশ্য হাজির হয়ে যায় চিতাবাঘ থেকে শুরু করে বাইসন ও গণ্ডারের দল। মালগাড়ি চলে যেতেই ফের রেল গেট খুলতেই সফর শুরু। ঝালং ভিউ পয়েন্টে প্রবেশের অন্তত কিলোমিটার ছয়েক আগে মেলে পাহাড়ি নদীর উপরে বেইলি ব্রিজ। যার অপরূপ শোভা ঝালং প্রবেশের আগে মন ভালো করে দেয়। আর ঝালং ভিউ পয়েন্ট যেন দূর চক্ষু সীমানায় এক অপরূপ প্রকৃতির ডাক। যেখানে মেঘ গাভির মতো চড়ে বেড়ায়।