হ্যাম রেডিও-র সাহায্যে তিন বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক বয়স্ক মহিলার সন্ধান পেলেন পরিবারের সদস্যরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিহারের সাহারসা জেলার বাসিন্দা ওই মহিলার সন্ধান পায় তাঁর পরিবার। হ্যাম রেডিওর তৎপরতায়, বিডিও গোসাবা ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের ওসির সাহায্যে ওই বৃদ্ধাকে রবিবার তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেন গোসাবা ব্লক প্রশাসনের আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, ওই বৃদ্ধার নাম রামো দেবী। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কিছুদিন আগে সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকা গোসাবা ব্লকের কচুখালিতে এসে পৌঁছন তিনি। তাঁকে উদ্ধার করে ঐ মনসা মন্দিরে রেখে স্থানীয় বাসিন্দা অপূর্ব মণ্ডল ও শুভঙ্কর মণ্ডল নামে দুই ভাই দেখভাল শুরু করেন। যে ভাষায় তিনি কথা বলছিলেন, তাও বুঝতে সমস্যা হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত বৃহস্পতিবার সকালে হ্যাম রেডিও ক্লাবের সদস্যদের ফোন নম্বর জোগাড় করে সেখানে যোগাযোগ করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গ হ্যাম রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস ওই মহিলার কথা রেকর্ড করে হ্যাম রেডিওর অন্যান্য ক্লাবের সদস্যদের কাছে পাঠান। জানা যায়,বৃদ্ধা ছেত্রী ভাষায় কথা বলছিলেন। এই ভাষায় বিহারের একটি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন কথা বলেন। লোকেশন ট্র্যাক করে রামোদেবীর পরিবারের সদস্যদের খোঁজ চালাতে থাকে হ্যাম রেডিওর সদস্যরা। মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মিথিলেশ চৌধুরী নামে ওই মহিলার দেওয়ের সন্ধান পাওয়া যায়। হ্যাম রেডিওর মাধ্যমে দেওয়ের সঙ্গে কথা বলেন বৃদ্ধা। এর পরে দিল্লিতে কর্মরত বৃদ্ধার দুই ছেলের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়। মাকে ফিরে পেয়ে আবেগতাড়িত হয়ে যান দু' জনেই। রবিবার বৃদ্ধার এক ছেলে সুরজ কচুখালি গ্রামে পৌঁছে মাকে নিয়ে যান। মাকে ফিরে পাওয়ার আশাই ছেড়েছিলেন দুই ছেলে। সুরজ জানান, তাঁর মা মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ নন। বছর তিনেক আগে ভুল ট্রেনে উঠে হারিয়ে যান তিনি। পুনর্মিলনের মুহূর্তে মা, ছেলে কারও চোখের জলই বাঁধ মানেনি। বৃদ্ধাকে ছেলের হাতে তুলে দিতে পেরে গ্রামের বাসিন্দারাও খুশি।