২০১১ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর ঘোড়ামারাকে বাঁচাতে তিনি উদ্যোগী হয়েছেন। তাঁর উদ্যোগে ঘোড়ামারার একদিকে বোল্ডার ফেলা হয়। মমতার আর্জিতে মনমোহনের সরকার এই কাজ করেছিল। কারণ, এই অঞ্চল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জাহাজ মন্ত্রকের। অভিযোগ, সে সময় পুরো বোল্ডার ফেলা হয়নি। ফলে মাটির নদীবাঁধ ভাঙনের তীব্রতাকে আটকাতে ব্যর্থ। এর সত্ত্বেও ঘূর্ণিঝড়ে ঘোড়ামারায় জল ঢোকেনি। কোনও না কোনও ভাবে বাঁধ দিয়ে দ্বীপটিকে রক্ষা করা হয়েছে। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড় আমফানে ঘোড়ামারায় জল ঢুকেছে। এর জন্য সেচ দপ্তরের দিকে আঙুল উঠেছে। ঘোড়ামারা দ্বীপের একদল বাসিন্দার অভিযোগ, সেচ দফতরের এসডিও জানেনন না যে দ্বীপের কোনস্থান সবচেয়ে কমজোরি। এই মানুষগুলির দাবি, এসডিও সেভাবে ঘোড়ামারার অস্তিত্ব সঙ্কটের লড়াইয়ের সঙ্গে নিজের কর্মক্ষমতাকেই মেলাতে পারেননি। তিনি শুধুমাত্র দায়সারাভাবে কাজ করে চলেছেন। আর যার জেরে ভুগতে হচ্ছে দ্বীপের বাসিন্দাদের। দিনের পর দিন ভাঙনে তলিয়ে যাচ্ছে দ্বীপ, ভিটেমাটি-সহায়-সম্বল হারাচ্ছে মানুষ, কিন্তু নদী বাঁধকে আরও কতটা শক্তপোক্ত করা যায় তা নিয়ে তাঁর কোনও ভাবনা নেই বলেই অভিযোগ। দ্বীপের বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ টেন্ডার পাসের পর ওয়ার্ক ওয়ার্ড বের হওয়া নিয়ে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে সেচ দফতরে। যার জন্য সঠিক সময়ে নদী বাঁধের কাজ শুরু হচ্ছে না। আর এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরও স্থানীয় সেচ দফতর ঘোড়ামারার নদীবাঁধ নিয়ে কোনও কাজই শুরু করেনি। ঘোড়ামারা দ্বীপের কিছু পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, আমফানের আগেই এই নিয়ে তাঁরা কাকদ্বীপে সেচ দফতরে অবস্থান ধর্নাতেও বসেছিলেন। বিধায়ক বঙ্কিম হাজরাও নিজে বিষয়টি এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কল্যাণ রায়-কে জানিয়েছিলেন। অবস্থানে বসা পঞ্চায়েত সদস্যরা মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও অবস্থানে বসার হুমকি দিয়েছিলেন। অভিযোগ এরপরও সেচ দফতর ঘোড়ামারার নদীবাঁধ নিয়ে ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসেছিল। আর এই সুযোগে দ্বীপের আগের নদী বাঁধের নিরানব্বই শতাংশ-সহ আরও খানিকটা জমি ঘূর্ণিঝড় আমফানে নদী ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে। এশিয়ানেট নিউজ বাংলার পক্ষ থেকে এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার কল্যাণ রায়-কে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তিনি সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেন। এমনকী, এও দাবি করেন যে ঘোড়ামারার নদী বাঁধের সমস্যা নিয়ে তাঁর কোনও কিছু জানা নেই। কেউ তাঁকে এই বিষয়ে কিছুই জানাননি বলেও দাবি করেন তিনি। টেন্টার পাস হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওয়ার্ক অর্ডার বের হওয়া সম্ভব নয় বলেও জানান তিনি। কেন সম্ভব তা জানতে হলে কাকদ্বীপে তাঁর দফতরে আসতে হবে বলেও জানান কল্যাণ রায়।