রাজ্যে এই প্রথম কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র থেকে একসঙ্গে মোট ছ'টি শকুনকে প্রকৃতিতে ছাড়ল বন দফতর।মঙ্গলবার এই শকুনগুলিকে রাজাভাতখাওয়া শকুন প্রজনন কেন্দ্র থেকে পরীক্ষামূলক ভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশে ছাড়া হয়। তবে প্রথমেই হোয়াইট ব্যাকড, স্লেন্ডার বিল্ড অথবা লং বিল্ড প্রজাতির শকুনকে মুক্ত করার ঝুঁকি নিতে চাইছে না বন দফতর। পরিবর্তে হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুনদের দিয়েই পরিবেশ থেকে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া ঝাড়ুদার পাখিদের প্রকৃতিতে ফেরানোর কাজ শুরু হলো বলে মনে করছে বন দফতর। কারণ শকুন সংরক্ষকরা জানিয়েছেন যে, স্বভাবগত দিক দিয়ে হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির শকুনরা অনেক বেশি সহিষ্ণু। কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র থেকে প্রকৃতিতে ছাড়ার আগে দু'টি শকুনের গায়ে পরানো হয়েছে উপগ্রহ কলার। ওই দুই শকুনের গতিবিধির উপরে নজরদারির জন্য উপগ্রহ কলার প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে বন দফতর।
২০০৬ সালে তৈরি হওয়া দেশের দ্বিতীয় শকুন প্রজনন কেন্দ্র রাজাভাতখাওয়ায় হোয়াইট ব্যাকড, স্লেন্ডার বিল্ড, লং বিল্ড ও হিমালয়ান গ্রিফন প্রজাতির প্রায় ১০০টি শকুন রয়েছে। কিন্তু গবাদি পশুর দেহে ব্যথা উপশমের ওষুধ ডাইক্লোফেনাক ব্যবহার বন্ধ হয়েছে কিনা, তা নিশ্চিত হতে না পেরে এত দিন ওই শকুনদের প্রকৃতিতে ছাড়ার কোনও ঝুঁকি নেয়নি বন দফতর। মৃত গবাদি পশুর দেহে ডাইক্লোফেনাক থাকলে, তার মাংস খেলে শকুনদের কিডনি বিকল হয়ে যায়। যার ফলে সারা বিশ্ব জুড়ে ডাইক্লোফেনাক- এর ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়। গত দশ বছর ধরে ভারতেও ওই ওষুধের ব্যবহার বন্ধ থাকায় বর্তমানে শকুনরা অনেকটাই নিরাপদ বলে মনে করছে বন দফতর। যে ছ' টি শকুনকে এ দিন মুক্ত পরিবেশে ছাড়া হয়, সেগুলিকে তিন মাস মানিয়ে নেওয়ার জন্য খোলা জায়গায় তারের খাঁচার মধ্যে রাখা হয়েছিল। এ দিন সকালে বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় খাঁচার দরজা খুলে বাইরে ছেড়ে দেন।