নদী ভাঙনে তলিয়ে গিয়েছে ঘোড়ামারার দুটি দ্বীপ। মানুষ ভিটেমাটি হারিয়ে হয় পাড়ি জমিয়েছেন ভিনস্থানের উদ্দেশে অথবা নতুন করে ভিটে বেঁধেছেন ঘোড়ামারার অন্যকোনও ডাঙায়। হলদিনদীর কোল ঘেঁষে এবং বঙ্গোপসাগরের মুখের সামনে থাকা ঘোড়ামারারমানুষ তাই ভাঙনের সঙ্গে লড়তে লড়তে এখন ক্লান্ত ও রিক্ত। ভাঙন যেন এই দ্বীপের বাসিন্দাদের কাছে মৃত্যুদূত। মানুষ যেমন আঙুলের কড়ে দিন গোনে, ঠিক তোমনি ঘোড়ামারার মানুষও রোজ আঙুলের কড়ে গুণে চলেন ভাঙনের আগ্রাসন। ভিটেমাটি হারাতে হারাতে মানুষগুলোর চোখের জল শুকিয়ে কাঠ। কারণ, এখন আর কান্না পায় না এখানকার মানুষের। বরং এক তীব্র প্রতিবাদ বেরিয়ে আসতে চায়। দীর্ঘদিন ধরেই এই দ্বীপের বাসিন্দারা ভালো-পোক্ত নদী বাঁধের পক্ষে সওয়াল করে আসছেন। কিন্তু, তাঁদের অভিযোগ, সে কথা শোনার মতো সেচ দপ্তরে কোনও লোক নেই। তাঁদের অভিযোগ, খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ঘোড়ামারা দ্বীপের নদীবাঁধের স্থায়ীত্বের জন্য সমানে নানা পদক্ষেপ নিয়ে চলেছেন। কিন্তু, ঘোড়ামারা দ্বীপের দায়িত্বে থাকা সেচ দফতরের এসডিও তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছেন না বলেই অভিযোগ। ঘূর্ণিঝড় আমফানের অন্তত ৭ দিন আগে ঘোড়ামারার নদীবাঁধকে ভালো করে সারানোর জন্য নির্দেশও চলে এসেছিল বলে দাবি ঘোড়ামারা দ্বীপের তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েতের সদস্যদের। কিন্তু, সে কাজ শুরুই করা যায়নি। আর এতে ঘূর্ণিঝড় আমফান তীব্রভাবে আঘাত হেনেছে ঘোড়ামারার নদীবাঁধে। বাঁধ-সহ অন্তত সাত থেকে আট ফিট করে জমি তলিয়ে গিয়েছে নদী ভাঙনে। সামনে ভরা কোটাল। এতেও অন্তত তিন থেকে চার ফুট করে জমি নদী গহ্বরে চলে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন ঘোড়ামারার মানুষ। সেচ দফতরের গাফিলতিতে-ই ঘূর্ণিঝড় আমফানে ঘোড়ামারা লাগামছাড়া ভাঙনের শিকার হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান সঞ্জীব সাগর।