ভাঙলেন তবু মচকালেন না শতাব্দী, অমিত শাহ-র সঙ্গে মিটিং-এর জল্পনা আরও উসকে দিলেন

  • আবারও সমস্যায় তৃণমূল কংগ্রেস 
  • শুভেন্দু অধিকারীর দল ছাড়ার  রেশ এখনও কাটেনি
  • জল্পনা শুরু শতাব্দী রায়কে নিয়ে 
  • ক্ষোভ বাড়ছে বলেই ইঙ্গিত শতাব্দী রায়েও 
     

ভোটের আগে চরম ডামাডোলে তৃণমূল কংগ্রেস। এককালে যে তৃণমূলের অন্দরে বিক্ষুব্ধ কোনও কথাই শোনা যেত না, আজ সেখানে সমানে চলছে ক্ষোভের বর্ষাগুন। এই জ্বলন্ত ক্ষোভ নিয়ে হয় কেউ দল ছাড়বো ছাড়বো করছেন, নতুবা কেউ সুখ-সাগরের খোঁজে পাড়ি জমাচ্ছেন বিরোধী দলে। তৃণমূলের অন্দরে এবার সেলিব্রিটি সাংসদ শতাব্দী রায়ও এই ক্ষোভের আগুয়ানদের দলে নাম লেখালেন। সাফ জানিয়ে দিলেন,দিল্লি যাচ্ছি। অমিত শাহ-র এর সঙ্গে বৈঠক হবে এমন কথাও বলছি না, আবার এটাও বলছি না যে দেখা হবে না।' 

তিনবারের তৃণমূল সাংসদ শতাব্দী রায়। তৃণমূলের প্রয়াত অভিনেতা সাংসদ তাপস পালের হাত ধরেই মমতার ঘনিষ্ঠতা লাভ করেছিলেন শতাব্দী। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে মমতার আগুয়ান আন্দোলন দেখে পাকাপাকিভাবে পা বাড়িয়েছিলেন রাজনীতিতে। ২০০৯  সাল থেকে সাংসদ হয়েছেন শতাব্দী। সেই শতাব্দী এখন দলের উপরে ক্ষুব্ধ শুধু নয়, সেই সঙ্গে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ১৪ জানুয়ারি তাঁর ফ্যান পেজে যে লেখাটা প্রকাশ হয়েছে, সেটা আসলে তাঁরই লেখা। আর দল নিয়ে তিনি কী ভাবছেন তা ওই লেখাতেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন শতাব্দী। 

Latest Videos

বাংলা এক টেলিভিশন নিউজ চ্যানেল-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শতাব্দী জানিয়েছেন, 'প্রথম যখন জিতে সাংসদ হয়েছিলাম, তখন অনেকেই বলেছিল যে অভিনেত্রী থেকে সাংসদ হয়েছে। এর আর দেখা পাওয়া যাবে না। কিন্তু, বাস্তবে সেটা হয়নি। বরং বহু রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর থেকে অনেক বেশি এলাকায় গিয়েছি। মানুষের উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। মানুষের সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাকে দেখাই করতে দেওয়া হয় না। আমাকে ছাড়াই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে যায়। সাংসদ হিসাবে আমার কোনও ভূমিকাই থাকে না। তারাপীঠ উন্নয়ন পর্ষদ থেকেও দুবার পদত্যাগ করেছি। কিন্তু, কোনওবারই পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়নি।  যেখানে থেকে কোনও কাজই করতে পারবো না সেখানে থেকে কী লাভ।'

'রাজীব বিরোধী সাক্ষী পকেটমারকে মুখপাত্র', 'বৈশাখীর গ্ল্যাক্সো বেবি'র পাল্টা জবাব শোভনের ...

কী কী করবেন আর করবেন না, করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে নিয়মবিধি জারি কেন্দ্রের ...

তাঁর দিল্লি যাত্রার পিছনে দল বদলের কোনও সম্ভাবনা আছে কি না, সেই প্রশ্নে বীরভূমের সাংসদ জানিয়েছেন, যে তিন বার সাংসদ হওয়ায় দিল্লি তাঁর কাছে এখন আরও একটি ঘরবাড়ি। সেখানে তাঁকে নানা প্রয়োজনে যেতে হয়। তাঁর মিটিং থাকে। সাংসদ হিসাবে বিভিন্ন কাজ থাকে। এমনকী, প্রচুর বন্ধু-বান্ধব থাকে। তাঁদের সঙ্গে অনেকদিন দেখাও হয়নি, তাই নানা কারণে তাঁর দিল্লি যাত্রা বলে জানিয়েছেন শতাব্দী। অমিত শাহ-এর সঙ্গে কোনও বৈঠক নিয়ে পরিস্কার করে কিছু বলেননি শতাব্দী। বরং রহস্যের আবরণ বজায় রেখেই হেয়ালিমাখা উত্তর দিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, 'পরিচিত মানুষদের সঙ্গে দেখা হতেই পারে। কিন্তু তারমানে মিটিং বা মিটিং করবোই ও এর জন্য দিল্লি যাওয়া এমনটা বলা যায় না। বলতে গেলে কিছুই বলতে পারছি না- ঠিক নেই। অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করবো এমনটাও বলিনি। আমি বলছি ঠিক নেই। দেখা হওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু দেখা করছি এটাও বলছি না।' তিনি কী বিজেপি-তে যোগ দিচ্ছেন এমন প্রশ্ন শুনে শতাব্দী আবার হাসিমাখা কন্ঠেই জানিয়েছেন, 'না-না তেমন কিছু বলিনি। আমি বলেছি যে আমার দায়বদ্ধতা রয়েছে আমার ভোটারদের কাছে। যারা আমাকে জিতিয়েছে। তাদের কাছে আমি যদি না যাই তাহলে তারা যাতে আঙুল তুলে আমাকে কিছু না বলে যে আপনি আসছেন না কেন, আপনাকে কেন দেখতে পাই না। আপনি কী থাকতে ছাইছেন না? এই হোয়াটসঅ্যাপগুলো যখন আমার কাছে আসে, আমি তাদেরকে বলতে চাই যে আমি চাইছি যেতে।'

শতাব্দী এও জানিয়েছেন যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অনেক সময়ই সব বিষয়গুলি জানানো যায়নি, আবার অনেক সময় মনে হয়েছে জানিয়ে কোনও লাভ নেই। অনেক সময় মনে হয়, কী হবে, কোনও সলিউশন হবে কি না। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিনেতা সাংসদের এমন উত্তর শুনে মনেই হচ্ছে এক মানসিক হতাশার মধ্যেই তিনি পর্যবাসিত হয়েছেন। যার সমস্যার সমাধান তিনি কোনওভাবেই পাচ্ছেন না। কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে, ২০০৯ সাল থেকে তিনি সাংসদ, অথচ এই নিয়ে এতদিন দলের অন্দরেই তিনি কথা বলেছেন। তাঁর এমন মনকষ্ঠ এতদিন তিনি এভাবে প্রকাশ্যে আনেনি কেন? যদি পাকা রাজনীতিকের মতো শতাব্দী বলতে চান, উপযুক্ত সময়ে তিনি মুখ খুলবেন বলে ঠিক করেছিলেন অথবা ভেবেছিলেন তিনি পরিস্থিতি সামলে নিয়ে নিজের কাজের জায়গাটা তৈরি করে নিতে পারবেন ? এরমধ্যে কোন উত্তরটা ঠিক তা শতাব্দী নিজেই বলতে পারবেন। তবে, সন্দেহ নেই শতাব্দীর এই বেসুরো হওয়ার পিছনে তৃণমূল কংগ্রেসে নতুন ডামাডোল তৈরি হল। এখন অবশ্য বিতর্ক এটাও থাকবে যে শতাব্দী রাজনীতির সুবিধাটা বজায় রাখতেই কি এতদিন পরে উপযুক্ত সময়ে মুখ খোলাটা স্থীর করলেন! নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলবে। আগামীদিনে শতাব্দীকে অবশ্য নিজেকেই তাঁর অবস্থানটা পরিস্কার করতে হবে।

Share this article
click me!

Latest Videos

'তৃণমূলের দুয়ারে সরকার এখন দুয়ারে জঙ্গি', তীব্র আক্রমণ শুভেন্দু অধিকারীর | Suvendu Adhikari
Suvendu Adhikari: 'কত বড় জিহাদি, রামনবমীর মিছিলে ঢিল মেরে দেখাও', হুঙ্কার শুভেন্দুর
খাদান নিয়ে Dev কে বিশ্রী আক্রমণ রাজের, দেবের পাশে দাঁড়িয়ে পাল্টা দিলেন Aritra Dutta Banik
'যেসব মুসলমানরা হিন্দুদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন তাঁদেরই পূর্বপুরুষেরা হিন্দু ছিল' বিস্ফোরক অর্জুন
‘প্রণামের সংস্কৃতি ভুলে যাচ্ছে বাঙালি’ বিস্ফোরক মন্তব্য Dilip Ghosh-এর, দেখুন কী বলছেন | Dilip Ghosh