তাপস দাস: ১৯৯২ সালে জন্ম তাঁর। কেরিয়ার শুরু ২০১৫ সালে। খুব বেশি কাজ করেছেন, এমনও নয়। তবু, এই ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন এবং টিকিট পেলেন রুপোলি পর্দার অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছিলেন, তিনি ও তাঁর পরিবার মমতার ভক্ত। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবার দিন তিনি বলেছিলেন, যে পেশায় তিনি রয়েছেন, সেখান থেকে অনেককে অনুপ্রাণিত করা সম্ভব। সে কারণেই তিনি তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। এর আগে মমতাকে দেখে জয় শ্রীরাম স্লোগান দেবার বিরোধিতা করেছিলেন কৌশানি, বলেছিলেন, এ সংস্কৃতি এ রাজ্যের নয়।
২০১৫ সালে রুপোলি পর্দায় প্রথম প্রবেশ কৌশানির। ছবির নাম পারব না আমি ছাড়তে তোকে। দ্বিতীয় ছবি তার এক বছর পর, ২০১৬ সালে। কেলোর কীর্তি। এবার প্রচারে বেরিয়ে তাঁর একটি মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিজেপির তরফ থেকে প্রচার করা হয়েছিল একটি ভিডিও ক্লিপ, যাতে তিনি বলছেন, ঘরে মা-বোন রয়েছে, ভেবে চিন্তে ভোট দিস। বিজেপির অভিযোগ, হুমকি দিয়েছেন প্রার্থী। কৌশানি অবশ্য উত্তরে বলেছেন, তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা হয়েছে। বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মেয়েদের অবস্থার কথা তুলে ধরেই তিনি বলেছিলেন, এ রাজ্যে ভোট দেবার সময়ে সে কথা মনে রাখতে।
কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রের প্রার্থী হয়েছেন কৌশানি। তাঁর উল্টোদিকে যিনি রয়েছেন, তাঁর ধার ও ভার নায়িকার চেয়ে অনেক অনেক বেশি। তিনি মুকুল রায়। রাজ্যসভা সাংসদ ও পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূলের ঘর ভাঙার অন্যতম হোতা বলে পরিচিত। কৌশানি অবশ্য তাতে ঘাবড়াচ্ছেন না। মুকুল সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য “উনি নিজেকে নিজে শক্তিশালী ভাবতে পারেন কিন্তু আমি বা তৃণমূল কংগ্রেস ওনাকে কোনমতেই শক্তিশালী ভাবে না।”
কৌশানি যাই বলুন, গত লোকসভা ভোটে এই বিধানসভা আসন থেকে অনেকটা লিড নিয়েছিল বিজেপি। সে অঙ্ক জানেন বলেই মমতা এই কেন্দ্রে তারকা প্রার্থী দিয়ে বাজি মাত করার চেষ্টা করছেন। মুকুল রায়ের সামনে রুপোলি পর্দার গ্ল্যামার কতটা টিঁকবে, তা স্থির হবে পঞ্চম দফার ভোটের দিন, ১৭ এপ্রিল। জানা যাবে কৃষ্ণনাগরিকদের একাংশ তাঁকে সত্যিই ছাড়তে পারবেন না, নাকি এ আসনে লড়তে রাজি হয়ে কেলোর কীর্তি করে ফেলেছেন কৌশানি।