মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের একেবারে ২০১১ সালে প্রথম জয়ী সাগরদিঘী বিধানসভা কেন্দ্রে এবার প্রেস্টিজ ইস্যু লড়াই হয়ে দাঁড়িয়েছে শাসক দলের কাছে বলেই অধিকাংশ জেলাবাসী মনে করছেন। কারণ ওই কেন্দ্রে এবার তিন দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। সব পক্ষই ঝাঁপিয়ে পড়েছে। বিজেপি সংখ্যালঘু ভোট টানতে মাফুজা খাতুনকে প্রার্থী করেছে। বিজেপির প্রতীক দেখে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই যেমন ভোট দেবেন, আবার সংখ্যালঘু মহিলা ভোটারদেরও একটা বড় অংশ তাদের সমর্থন করবে বলে বিজেপি আশাবাদী। তৃণমূলের হাতিয়ার উন্নয়ন। তাদের জমানায় এই বিধানসভা কেন্দ্রে কী কী কাজ হয়েছে সেটা তারা তুলে ধরছে।
আরও পড়ুন, মমতার বিরুদ্ধে FIR, 'কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘেরাও' মন্তব্য়ের জেরে অভিযোগ দায়ের কোচবিহারে
অন্যদিকে কংগ্রেস তুলে ধরছে তৃণমূলের আমলে অনিয়ম।এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার শেখ, বাপন মন্ডল, রাকিব শেখেরা বলছেন, তিন দলের প্রার্থীর মধ্যে একটা অদ্ভুত মিল রয়েছে। তাঁরা তিনজনই বহিরাগত। তাই এই ইস্যুতে কেউ তারা পরস্পরকে আক্রমণ করতে পারছে না। আর ভূমিপুত্র প্রার্থী না হওয়ায় তিন দলেরই নেতা কর্মীদের মধ্যে কাজ করছে অভিমান। তারা প্রকাশ্যেই মুখ খুলেছে। কংগ্রেসের একটা অংশ প্রার্থীকে মেনে নিতে না পেরে রাস্তায় মিছিল করেছে। সেই অংশটি এখনও প্রচারে নামেনি। বিজেপিরও অনেক নেতা-কর্মী প্রার্থীকে মেনে নিতে পারেনি। তারাও বিদ্রোহ করেছিল। তৃণমূলের অন্দরমহলেও রয়েছে ক্ষোভ। যদিও তিন দলেরই নেতৃত্বর দাবি, মান অভিমান মিটে গিয়েছে। এখন সকলেই দলের হয়ে কাজ করছে।
তৃণমূল নেতৃত্বর দাবি, বিজেপি বিভাজনের চেষ্টা করেও সফল হবে না। এই এলাকার মানুষ কাজ দেখে ভোট দেবে। বাম জমানায় এই এলাকার অনেক গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। এখন সব গ্রামেই আলো জ্বলে। লোডশেডিংয়ের সমস্যা মিটে গিয়েছে। উলাডাঙার মতো প্রত্যন্ত গ্রামে সেতু হয়েছে। দলের নেতা খলিলুর রহমান বলেন, এই কয়েক বছরে কী কী কাজ হয়েছে তা এই এলাকার মানুষ চোখের সামনে দেখেছেন। মানুষ আমাদেরকেই সমর্থন করবেন।
অন্যদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি সুজিত দাস বলেন, সাগরদিঘির মানুষ পরিবর্তন চাইছে। অনিয়মের বিরুদ্ধে ওই এলাকার বাসিন্দারা আমাদের ভোট দেবেন। কংগ্রেস নেতা হাসনুজ্জামান বলেন, প্রচারে বেরিয়ে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এই কেন্দ্র নিয়ে আমরা আশাবাদী। এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, এবারে সাগরদিঘির অঙ্ক ক্রমশ জটিল হচ্ছে। তৃণমূল আবার ক্ষমতায় ফিরবে, না ভোট কাটাকুটির অঙ্কে কংগ্রেস এগিয়ে যাবে, নাকি বিভাজনের ভোটে পদ্ম ফুটবে তা ২ মে’র পরেই পরিষ্কার হবে। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে সকলে সাগরদিঘি কে কেন্দ্র করে।