সব বুথ ফেরত সমীক্ষাকে ভুল প্রমাণিত করে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য বাংলার মসনদে বসতে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট কুশলি প্রশান্ত কিশোরের 'ভবিষ্যদবাণী' সত্যি করে তিন অঙ্ক থেকে ইবেক দূরে থেমেছে বিজেপি। একইসঙ্গে বাংলার রাজনীতিতে আরও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ল বাম-কংগ্রেস জোট। খাতাও খুলতে পারল না তারা। জোট সঙ্গী হিসেবে একমাত্র ভাঙড় আসনটি জিতেছে আইএসএফ। আব্বাস সিদ্দিকীর দলের সঙ্গে জোট করেও সংখ্যালঘু ভোট ব্যাঙ্কের মন জয় করতে পারেনি সংযুক্ত মোর্চা।
ভোটের ফল থেকেই স্পষ্ট যে বিজেপিকে রুখতে সংখ্যালঘুরা নিজেদের ভোট উজার করে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসকে। যার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল কংগ্রেসের গড় বলে পরিচিত সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুই জেলা মালদা ও মুর্শিদাবাদ। ২০১১ ও ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল জয়ের মদধ্যেও এই দুই আসনে বীজ বপন করতে পারেনি ঘাসফুল শিবির। এননকী ২০১৯-এ গণী খান চৌধুরীর পরিবারের মৌসম বেনজির নুরকে প্রার্থী করেও মালদা থেক শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। অপরদিকে, রাজ্য জুড়ে প্রবল ঘাসফুল ঝড়েও নিজের গড় মুর্শিদাবাদ অটুট রেখেছিলেন অধীর চৌধুরী। ভোটে না জিততে পারলেও, দল ভাঙানোর খেলায় নেমে অধীর গড়ে ফাটল ধরিয়েছিল তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনে একটি আসন তৃণমূল জিতলেও, নিজের আসন টিকিয়ে রেখেছিলেন অধীর চৌধুরী।
কিন্তু ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনের ফলে দেখা যাচ্ছে মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার কংগ্রেস গড় কার্যত ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে শাসক দল। মালদায় ১২ আসনের মধ্য সবকটি হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। ৮টি জিতেছে তৃণমূল কংগ্রেস ও ৪টি জিতেছে বিজেপি। চাঁচোল, মালতিপুর, হরিশ্চন্দ্রপুর, রতুয়া, মানিকচক, মোথাবাড়ি, সুজাপুর, বৈষ্ণবনগর জিতেছে তৃণমূল। পাশাপাশি হবিবপুর, মালদা, ইংলিশবাজার, গাজল এই ৪টি আসন জিতেছে বিজেপি। অপরদিকে, মুর্শিদাবাদ জেলা পুরোপুরি ২২-০ করে দিয়েছেন শাসক দল। ফলে বিজেপিকে আটকাতে এই দুই জেলার সংখ্যালঘুরা যে তৃণমূলকে বেছে নিয়েছে তা প্রমাণিত। যার ফলে দুই গড়ও হাতছাড়া হল কংগ্রেসের।