হিংসার ভয়ে ভোট দিতে না চাওয়া অনেক জায়গায় দেখা গিয়েছে
কিন্তু, ভোট দিতে চেয়ে ভোট বয়কট
এমনই ঘটনা ঘটল বাগদার এক গ্রামে
নির্বাচনের দুদিন আগে পথ অবরোধ করলেন গ্রামবাসীরা
ষষ্ঠ দফায় ভোটগ্রহণ করা হবে উত্তর ২৪ পরগণার বাগদায়। কিন্তু, তার দুদিন আগে ভোট বয়কটের হুমকি দিলেন বাগদা থানার এলাকার অন্তর্গত একটি গ্রামের বাসিন্দারা। এমনকী এদিন বেশ কিছুক্ষণ পথ অবরোধও করেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, তাঁদের গ্রামেই ভোটকেন্দ্র করতে হবে, দূরের ভোটকেন্দ্রে তাঁরা ভোট দিতে যাবেন না।
মঙ্গলবার দুপুরে এই ঘটনাটি ঘটেছে সিন্দ্রানি গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিনগর গ্রামে। হরিনগর গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে ভোটকেন্দ্র করতে হবে, এই দাবিতে এদিন এলাকার বনগাঁ দত্তপুলিয়া সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান শতাধিক গ্রামবাসী।
গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে ভোটকেন্দ্র না করা হলে তাঁরা ভোট বয়কট করবেন বলেও হুমকি দেন তাঁরা। কিন্তু, কেন এই দাবি?
এই স্কুলেই ভোটকেন্দ্র করার দাবি জানাচ্ছেন গ্রামবাসীরা
বিক্ষোভকারীরা জানাচ্ছেন, হরিনগর ও খড়ের মাঠ এলাকায় মোট ভোটারের সংখ্যা প্রায় ৯৫২ জন। এর মধ্যে ৭০০-রও বেশি ভোটার হরিনগর গ্রামেরই বলে দাবি করেছেন তাঁরা। কিন্তু, প্রতিবারই হরিনগর ও খড়ের মাঠ এলাকার ভোটকেন্দ্র করা হয় খড়ের মাঠ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এদিকে সেই ভোটকেন্দ্র হরিনগর গ্রাম থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে। যাতায়াতের কোনো সুস্থ পরিবহন ব্যবস্থা নেই। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল তাঁদের গাড়িতে ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার প্রলোভন দেয়, কিন্তু, গ্রামবাসীরা সেই ব্যবস্থায় নারাজ।
আরও পড়ুন - বঙ্গের ভোট মানে শুধুই হিংসা নয়, গণতন্ত্রের উৎসবও বটে - দেখুন পঞ্চম দফা, ছবিতে ছবিতে
আরও পড়ুন - মোদীকে ঠিক কতবার, কী কী গালি দিয়েছেন মমতা - প্রধানমন্ত্রী নিজেই দিলেন তথ্য
আরও পড়ুন - ভারতী ঘোষের রোডশোতে 'লুঙ্গি পড়া লোক'এর হামলা, পুলিশের সামনেই বেধড়ক মার বিজেপি কর্মীদের
দীর্ঘদিন ধরেই এই অসুবিধার কথা হরিনগর গ্রামের বাসিন্দারা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি। এবার করোনা পরিস্থিতিতে ভোটটকেন্দ্রের সংখ্যা বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। গ্রামবাসীদের আশা ছিল, এবার হতো হরিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়েই ভোটকেন্দ্র করা হবে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই রাস্তা অবরোধ করেছেন তাঁরা, এমনটাই দাবি বাসিন্দাদের।
পঞ্চম দফার ভোটগ্রহণের দিন দেগঙ্গার একটি গ্রামের বাসিন্দারাও, পাশের গ্রামে ভোট দিতে যাবেন না বলে জানিয়েছিলেন। সেই ক্ষেত্রে অবশ্য রাজনৈতিক হিংসার ভয়টাই মুখ্য ছিল। গ্রামবাসীরা জানিয়েছিলেন রাজনৈতিক বিরোধিতার জন্য পাশের গ্রামে ভোট দিতে গেলেই মার কেতে হয় তাঁদের। তাই ইভিএম গ্রামে আনার দাবি করেছিলেন তাঁরা। তারও আগের পর্বগুলিতে বেশ কয়েকটি গ্রামের বাসিন্দা ভোট বয়কটের হুমকি দিয়েছিলেন। সেইসব ক্ষেত্রে কারণ ছিল এলাকার অনুন্নয়ন। কিন্তু গ্রামে ভোটকেন্দ্র করার দাবিতে ভোট বয়কটের হুমকি দেওয়ার মতো ঘটনা এর আগে দেখা যায়নি।