গুরুংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরই ডুয়ার্সে কর্মী-সমর্থকদের একজোট করতে আসরে নেমে পড়েন বিনয়। বৃহস্পতিবার মেটেলিতে একটি বেসরকারি হোটেলে অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি।
ডালিয়া সরকার, দার্জিলিং : বিমল গুরুংয়ের অধীনেই আছে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। তাঁর কোনও দল নেই। তবে গুরুংয়ের সঙ্গেই পাহাড়, ডুয়ার্স, তরাই এলাকায় গোর্খাদের উন্নতিতে কাজ করবেন। রাজ্যের শাসকদল অর্থাৎ তৃণমূলের পাশে থেকেই তাঁরা দু'জনে কাজ করবেন। বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির মেটেলি এলাকায় কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা বলেন প্রাক্তন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং।
বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে পাহাড়, ডুয়ার্স ও তরাই নিয়ে দার্জিলিঙের বাড়িতে বুধবার ৪৫ মিনিট বৈঠক করেন বিনয়। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "গতকাল বিমলজির সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। আমাদের মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট কথা হয়। আমরা দার্জিলিং, তরাই এবং ডুয়ার্সের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের মঞ্চ আলাদা হতে পারে। তবে একসঙ্গে কাজ করব।" পাশাপাশি বিজেপিকে আক্রমণ করতেও ছাড়েননি তিনি। বলেন, "বিজেপি-র সদিচ্ছা নেই। ত্রিপাক্ষিক বৈঠক সময় নষ্ট করার জন্য।" এছাড়া বিমলের পাশাপাশি রাজ্য সরকারের সঙ্গেও হাত মিলিয়ে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছেন তিনি।
১৯৯৯ সালে জিএনএলএফের হাত ধরে রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিনয় তামাংয়ের। তারপর ২০০৭ সালে বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে মিলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চায় যোগদান করেন। ২০১৭ সালের পাহাড়ে সশস্ত্র আন্দোলনের পর বিমল গুরুং গা ঢাকা দিলে মোর্চার রাশ নিজের হাতে নিয়ে নতুন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা তৈরি করেন বিনয় তামাং। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই সহ সভাপতি অনিত থাপার সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। দলের সাংগঠনিক বিষয়ে সম্পূর্ণ দায়ভার নিয়ে নিয়েছিলেন অনিত থাপা। এমনকী, দলের বৈঠকেও ডাকা হত না বিনয়কে। তারপরই আচমকা চলতি বছরের ১৫জুলাই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতির পদ ও মোর্চার সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন- রাস্তা থেকে তুলে আগলে রেখেছেন শতাধিক জাতীয় পতাকা, ঠাঁই দিয়েছেন ট্রাঙ্কে
আরও পড়ুন- প্রকল্পে জালিয়াতি রুখতে কড়া মুখ্যমন্ত্রী, ইউনিক নম্বর থাকবে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের ফর্মে
আরও পড়ুন- বিজেপি মহিলা মোর্চার কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনা ভবানী ভবন চত্বরে, গ্রেফতার অগ্নিমিত্রা পাল
তিন পর্যায়ের গোর্খা আন্দোলন শেষে মোর্চা থেকে পদত্যাগের পর বর্তমানে বিনয় নির্দল। তিনি বলেন, "পাহাড় নিয়ে কেন্দ্রের ডাকা ত্রিপাক্ষিক বৈঠক আগেও অনেক হয়েছে। ১১টি বৈঠক করা হয়েছিল। তারপর অনেক বৈঠক করে জিটিএ পেয়েছিলাম। কিন্তু, পাহাড় সমস্যা সমাধানের জন্য বিজেপির রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। শুধু বৈঠক করে হবে না।"
আরও পড়ুন- কুকুরে টেনে নিয়ে গিয়েছে মাথা, পোশাক দেখেই মিলল হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের খোঁজ
এদিকে গুরুংয়ের সঙ্গে বৈঠকের পরই ডুয়ার্সে কর্মী-সমর্থকদের একজোট করতে আসরে নেমে পড়েন বিনয়। বৃহস্পতিবার মেটেলিতে একটি বেসরকারি হোটেলে অনুগামীদের নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অনুমান, বৈঠকের পর পাহাড়ে চারবছর আগের ছবি ফিরতে চলেছে। কারণ এই বৈঠকের পর পাহাড়ে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের ইঙ্গিত মিলেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এছাড়া, বিনয়ের মতে, পাহাড়ে এখন একটাই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা রয়েছে। যার নেতা বিমল গুরুং।