কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কার বাতিল। শিক্ষাঙ্গনে রাজনীতির প্রভাব নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মত প্রকাশ করল আদালত।
তিন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করার বিষয়ে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জারি করা বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি রাজশেখর মান্থা তাঁর আদেশে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে, ওই শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ফের শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়াগুলি দ্রুত সম্পন্ন করার কথা বলেছিলেন।
আদালত আরও বলেছে, শুধুমাত্র তিনজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ে 'বিশৃঙ্খলা' সৃষ্টি করতে পারে না। যদি না তাদের পিছনে বহিরাগত রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা থাকে। বিচারপতি রাজশেখর মান্থা তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অপব্যবহার করছে। তিনি বলেন, 'রাজনীতির বেদিতে বলি হচ্ছে শিক্ষার মহত উদ্দেশ্য'। এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর, আদালত ওই তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারে আদেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে 'অত্যধিক এবং অননুপাতিক' বলে মন্তব্য করেছিল আদালত।
গত ২৭ আগস্ট থেকে একাংশের শিক্ষার্থীরা ও আরও বেশ কিছু বহিরাগতরা মিলে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সরকারি বাসভবন ঘেরাও করে রেখেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি অফিসেও তারা তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিল বলে অভিযোগ। পরে উপাচার্যের আবেদনের ভিত্তিতে হাইকোর্ট সেই ঘেরাও প্রত্যাহার করার আদেশ দিয়েছিল। তাতেই গত ৩ সেপ্টেম্বর ঘেরাও মুক্ত হয়েছিলেন উপাচার্য।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সেই সময়ই আদালত তাদের আরও সহজলভ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার উপদেশ দিয়েছিল। বুধবারও বিচারপতি মান্থা তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, অধ্যাপক, শিক্ষক, কর্মচারী এবং ছাত্রছাত্রীদের ক্ষেত্রে আরও বিশ্বাসযোগ্য, সহজলভ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা অবলম্বন করা উচিত উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। অবাঞ্ছিত সংঘর্ষ এড়ানো উচিত। এই বিষয়ে বিশ্বভারতীর কার্যনির্বাহী জনসংযোগ কর্মকর্তা অনির্বাণ সরকারকে আদালত প্র্শ্ন করে মেসেজ করেছিল। তিনি তার উত্তর দেননি। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, আদালতের আদেশ মান্য করা হবে।