জল অপচয় রুখে রায়গঞ্জের রোল মডেল হল ষষ্ঠ শ্রেণির এই ছাত্রী

  • উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের ঘটনা
  • জল অপচয়ের প্রতিবাদ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীর
  • কথা সেন নামে ওই ছাত্রীকে রোল মডেল করার সিদ্ধান্ত পুরসভার
     

debamoy ghosh | Published : Jul 14, 2019 11:37 AM IST

স্কুলের দিদিমণিদের রোষে পড়ার ভয় ছিল। কিন্তু জল অপচয় হচ্ছে দেখে আর চুপ করে থাকতে পারেনি সে। জল অপচয়ের প্রতিবাদ করে এভাবেই শহরের রোল মডেল হয়ে উঠল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী। রায়গঞ্জ গার্লস হায়ার সেকেন্ডারি স্কুলের ওই ছাত্রীর নাম কথা সেন। ওই ছাত্রীকে জল অপচয় বিরোধী প্রচারে রোল মডেল করা হবে বলে জানিয়েছেন রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান সন্দীপ বিশ্বাস।

আরও পড়ুন- জল সংরক্ষণ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদী, কী পরামর্শ দিলেন সাধারণ মানুষকে

কিন্তু কীভাবে প্রশাসনের নজরে পড়ল এই ছাত্রীটি? রায়গঞ্জের ওই স্কুলটির পাশেই একটি অনুষ্ঠান বাড়ি রয়েছে। গত শুক্রবারও ওই ভবনে একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানের রান্নার প্রস্তুতি চলছিল বাড়িটিতে। কথা সেন নামে ওই ছাত্রীর ক্লাস থেকে পাশের অনুষ্ঠানবাড়ির রান্নার জায়গাটি দেখা যায়। দু'টি ক্লাসের মাঝখানে ছাত্রীটি লক্ষ্য করে, রান্নার জায়গায় একটি কল থেকে অনর্গল জল পড়ে নষ্ট হচ্ছে। অথচ সেদিকে কারও হুঁশ নেই। তা দেখেই ক্লাসরুমের জানলা থেকেই অনুষ্ঠান বাড়ির কর্মীদের ডাকতে থাকে ওই ছাত্রী। বেশ কিছুক্ষণ পরে তার ডাক শুনতে পান অনুষ্ঠানবাড়ির এক কর্মীর। জল নষ্ট হওয়ার বিষয়টি তাঁর নজরে আনে ওই ছাত্রী। এর পরেই কল বন্ধ করা হয়। 

আরও পড়ুন- জলাভাব নিয়ে মহাচিন্তায় মমতা, বিপদ মোকাবিলার উপায় বাতলালেন নিজেই

ছোট্ট এই ঘটনাই কথার স্কুলে চাউর হয়ে যায়। ধীরে ধীরে তা রায়গঞ্জে পুরপ্রধান সন্দীপ বিশ্বাসের কানে যায়। ঘটনাচক্রে শুক্রবার ওই অনুষ্ঠান বাড়িতে তিনিও নিমন্ত্রিত ছিলেন। জল অপচর রোধে ইতিমধ্যেই প্রচার শুরু করেছে রায়গঞ্জ পুরসভা। কলগুলিতে জল অপচয় রুখতে স্টপকর্ক লাগানো হয়েছে। জল অপচয় রুখতে ছাত্রীর প্রতিবাদের কথা জানার পরে তাঁকেই শহরের রোল মডেল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুর কর্তৃপক্ষ। সন্দীপবাবু বলেন, 'জল অপচয় বন্ধ  করতে ওই ছাত্রীর উদ্যোগের কথা আমি শুনেছি। ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী হয়ে সে যেভাবে জলের অপচয়ের বিরুদ্ধে অন্যকে সচেতন করার চেষ্টা করেছে, তাতে পুরসভার পক্ষ থেকে আমরা তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। ওই ছাত্রীকে সামনে রেখেই পুরসভার পক্ষ থেকে জল অপচয় রোধে শহরে আমরা সচেতনতামূলক প্রচার চালাব।'

আরও পড়ুন- জলসংকটের আতঙ্কে দেশের বেশ কিছু অংশ! বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন জল বাঁচানোর ৫টি উপায়

জেলা প্রশাসনও ওই ছাত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা জানিয়েছেন, 'এরকম উদ্যোগ নেওয়ার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই ছাত্রীকে অভিনন্দন জানানো হচ্ছে।’

যাকে নিয়ে এত হইচই, ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়া সেই কথা বলছে, 'স্কুল চলাকালীন বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলা নিষেধ। শাস্তি পাওয়ার ভয় থাকলেও জলের অপচয় হতে দেখে আমি স্কুলের নিয়ম ভেঙেই অনুষ্ঠান বাড়ির কর্মীদের ডেকে কথা বলেছি। কারণ স্কুলের দিদিমণিরাই বলেছিলেন যে পৃথিবীতে পানীয় জলের ভান্ডার কমে আসছে। বাড়িতেও আমি অপ্রয়োজনীয় জল খরচ বন্ধ করে দিয়েছি।’ স্কুলের নিয়ম ভাঙলেও কথার সাহসের প্রশংসায় এখন পঞ্চমুখ তাঁর স্কুলের শিক্ষিকারাই। 

Share this article
click me!