দুর্নীতির অভিযোগ জানানোর জন্য দফতর খোলার পর ন' দিন হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম আট দিনেই অভিযোগ জমা হয়েছে বারোশোরও বেশি। রাজ্যে কাটমানির দাপট এবং শাসক দলের নেতাদের দুর্নীতি কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে, উপচে পড়া অভিযোগের সংখ্যাতেই তা স্পষ্ট। জানা গিয়েছে, দুর্নীতির যত অভিযোগ জমা পড়েছে, তার মধ্যে অধিকাংশই তৃণমূলের নেতা বা জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে বলে খবর।
গত ১০ জুন প্রশাসনিক বৈঠকের পরে দুর্নীতি আটকাতে নিজের দফতরের অধীনেই একটি গ্রিভান্স সেল খোলার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো নবান্নের চোদ্দতলায় মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের অধীনে ওই গ্রিভান্স সেল খোলা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে যার তদারকি করছেন। ই- মেল, টোল ফ্রি নম্বর বা এসএমএস পাঠিয়ে দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারছেন সাধারণ মানুষ।
এই সেল খোলার পর থেকেই কার্যত অভিযোগ উপচে পড়তে থাকে। বেশিরভাগে ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ অভিযোগ জানিয়ে বলেছেন, সরকারি প্রকল্পে সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কীভাবে আমজনতার থেকে কার্যত তোলা তুলছেন শাসক দলের ছোট, বড় নেতা এবং জনপ্রতিনিধিরা। পঞ্চায়েত এবং পুরসভাগুলিতে যে অভিযোগ সবথেকে বেশি।
সম্ভবত সেই খবর পেয়েই গত মঙ্গলবার নজরুল মঞ্চে দলীয় কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে সরাসরি দুর্নীতি নিয়ে কড়া বার্তা দেন মমতা। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সরকারি প্রকল্প থেকে যাঁরা কাটমানি নেবেন, তাঁদের কাউকে রেয়াত করা হবে না। কোনও রকমের দুর্নীতিও বরদাস্ত করবেন না তিনি। নিজের দল হোক বা অন্য দলের নেতা, কেউ ছাড় পাবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন মুখ্যমন্ত্রী।
তাঁর এই হুঁশিয়ারি যে শুধু মুখের কথা ছিল না, তা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট। মঙ্গলবারই মালদহের রতুয়ায় কাটমানি নেওয়ার অভিযোগে এক তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একইভাবে পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডিতে এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে বার্ধক্য ভাতা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কাটমানি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই ঘটনাতেও ইতিমধ্যে ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পর থেকেই বীরভূম-সহ বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূল নেতাদের কাছ থেকে কাটমানি ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।