রাজনীতিক হিসেবে তিনি প্রথম দিন থেকেই ট্রোলড হয়েছেন। সাংসদ হিসেবে তিনি কতটা নিজের কেন্দ্রকে সময় দিচ্ছেন, সেসব প্রশ্নও গত পাঁচ বছরে কম শুনতে হয়নি। এবার তিনি নির্বাচনে আর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কি না, তা নিয়েও সংশয় ছিল।
কিন্তু এ বছর নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রচার শুরু করার প্রথম দিন থেকেই দীপক অধিকারী ওরফে দেব বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাজনীতিতে তিনি এখন অনেক পরিণত। বিরোধী প্রার্থী যাই বলুন না কেন, কখনওই পাল্টা ব্যক্তিগত আক্রমণের পথে হাঁটেননি। বরং বারবার বলেছেন, রাজনীতির পরিচিত কাদা ছোড়াছুড়ি থেকে বেরিয়ে অন্যরকম উদাহরণ তৈরি করতে চান তিনি।
মঙ্গলবার লোকসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানেও রাজনীতিক হিসেবে আবারও নিজের পরিণতি বোধের প্রমাণ দিলেন ঘাটালের সাংসদ। মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের সাংসদদের শপথগ্রহণের সময় লোকসভা যেন ধর্মসভায় পরিণত হয়েছিল। বিজেপি সাংসদদের জয় শ্রীরাম ধ্বনির পাল্টা তৃণমূল সাংসদরা জয় মা কালী, জয় মা দুর্গার মতো স্লোগান দিতে থাকেন। কেউ কেউ আবার জয় হিন্দ, জয় বাংলার স্লোগান দেন জয় শ্রীরামের মোকাবিলায়। বিজেপি-র বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁ তো আবার জয় শ্রীরামের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে একবার জয় বাংলাও বলে ফেললেন। তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় গলা ছেড়ে কালী মন্ত্র পাঠ করতে শুরু করেন।
এই আবহেই শপথ নিতে ওঠেন দেব। না, তৃণমূল সাংসদ হওয়া সত্ত্বেও শপথগ্রহণ শেষে জয় হিন্দ, জয় মা কালী বা জয় বাংলার মতো স্লোগান দেননি তিনি। বরং শপথ নেওয়ার শেষে হাতজোড় করে সতীর্থ সাংসদদের উদ্দেশে হিন্দি এবং বাংলায় দেব বলেন, 'আপনাদের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, সাংসদ হিসেবে আমরা যেন পরস্পরকে সম্মান করি। আমার মনে হয় এই সম্মানটুকু না থাকলে সংসদের কাজই ঠিকমতো এগোতে পারবে না।' তৃণমূলের নায়ক সাংসদের এই অনুরোধ অন্যান্য দলের সাংসদদেরও মন ছুঁয়ে যায়। দেবের বক্তব্যের সমর্থনে তাঁদের অনেককেই টেবিল চাপড়ে সমর্থন জানাতেও দেখা গিয়েছে।