জীবনের স্রোত যেদিকেই বয়ে যাক না কেন, নিজের শখকে ছাড়েননি কান্দির প্রাক্তন বিধায়ক সফিউল। মহালয়া মানেই চরম ব্যস্ততা প্রবীণ শিল্পীর। কাঠামো তৈরি থেকে মাটির প্রলেপ দেওয়া, সবটা একা হাতেই করেন বনু।
১২ বছর বয়সে প্রথম হাতে তুলি তুলে দিয়েছিলেন সফিউলের বাবা। তখন থেকে কাঁচা হাতে চলত মূর্তি গড়ার চেষ্টা। সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালীন প্রথম দুর্গামূর্তিতে হাতেখড়ি হয় সফিউলের। গড়ার নেশায় মত্ত সফিউল তখনও জানেন না যে তাঁর দুর্গামূর্তিই একদিন হয় উঠবে এলাকার গর্ব। এখানে মুসলমান শিল্পীর নিখুঁত হাতের কাজে চিন্ময়ী রূপ নেয় মা দুর্গা। ১২ বছরের সেই ছোট সফিউল আজ মুর্শিদাবাদের কান্দির প্রাক্তন বিধায়ক। বয়স ৬০-এর কোটায়। তবু আজও প্রত্যেক বছর পুজো এলেই তুলি হাতে তুলে নেন সফিউল আলম খান ওরফে বনু।
জীবনের স্রোত যেদিকেই বয়ে যাক না কেন, নিজের শখকে ছাড়েননি কান্দির প্রাক্তন বিধায়ক সফিউল। মহালয়া মানেই চরম ব্যস্ততা প্রবীণ শিল্পীর। কাঠামো তৈরি থেকে মাটির প্রলেপ দেওয়া, সবটা একা হাতেই করেন বনু। বয়স বাড়লেও কাজের সূক্ষতা এতটুকু নড়চড় হয়েনি। বনু'দার তুলির টান ছাড়া সম্পূর্ণ হয় না মা দুর্গার পুজো।
তবে বয়সের ভারে কমেছে শরীরের ক্ষমতা। তাই এখন আর বেশি প্রতিমা গড়া নয় বরং মন দিয়ে একটাই প্রতিমা গড়েন সফিউলবাবু। এবছর তাঁর হাতের তৈরি দুর্গা যাবে সেখানকারই এক বারোয়ারি পুজোয়।
দুর্গা প্রতিমা গড়ার কাজে এই মুসলমান শিল্পীকেও কি বাধার সম্মুখিন হতে হয়েছিল? এই প্রসঙ্গে সফিউলের স্পষ্ট জবাব,'আমি হৃদয় দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করি।’ তিনি আরও বলেন, 'মাটির প্রতিমায় তো প্রাণ থাকে না, প্রাণ থার কে মানুষের হৃদয়।' এই প্রসঙ্গে স্থানীয় মসজিদের ইমাম নুর আলম জানিয়েছেন,'বনুর এই কাজ আমাদের কাছে গর্বের'স্থানীয় ক্লাবের সদস্য রবিউল ইসলামের কথায়, ‘সঙ্গীত, শিল্পচর্চা থেকে সামাজিক কাজ— সবেতেই অত্যন্ত উৎসাহী এক জন মানুষ আমাদের বনু’দা।'।
২০১৯ সালে কান্দি বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন সফিউল।। বিধায়ক থাকাকালীনও বন্ধ হয়নি মূর্তি তৈরির কাজ।
আরও পড়ুন - বেহালা ফ্রেন্ডস-এর এবছরের থিম ‘দুর্গাযাপন’, জেনে নিন এর অর্থ কী, কী রয়েছে পুজোর বিশেষত্ব