প্রতিবছর মুড়ি মেলার আয়োজন করা হয় বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায়। মুড়ির গন্ধ ম-ম করে এই মেলার আশপাশে। মুড়ির টানে প্রতিবছর এই মেলায় ভিড় করেন বহু মানুষ। করোনা পরিস্থিতির জেরে এবার সেই মেলা কিছুটা হলেও ফিকে।
গ্রাম বাংলার (Village) মানুষের কাছে মুড়ি (Puffed Rice) খুবই প্রিয় একটি খাবার। এমনকী, অনেক বিয়েবাড়িতেও (Marriage) সকালের দিকে লুচির পরিবর্তে মুড়ি আর ঘুগনি খাওয়ার চল রয়েছে। তবে শুধুমাত্র গ্রাম বাংলাই নয়, বহু শহরে মানুষও সন্ধের জল-খাবারের জন্য ভরসা রাখেন এই মুড়ির উপরই। আর বাঙালির (Bengali) আড্ডা তেলেভাজা আর মুড়ি ছাড়া যেন ভাবাই যায় না। আর সেই মুড়িকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর মেলার আয়োজন করা হয় বাঁকুড়ায় (Bankura)।
প্রতিবছর মুড়ি মেলার আয়োজন করা হয় বাঁকুড়ার কেঞ্জাকুড়ায়। মুড়ি ভাজার গন্ধ ম-ম করে এই মেলার আশপাশে। মুড়ির টানে প্রতিবছর এই মেলায় ভিড় করেন বহু মানুষ। করোনা পরিস্থিতির জেরে এবার সেই মেলা কিছুটা হলেও ফিকে। তবে মনে ভয় নিয়েও এই মেলায় এবছর হাজির হয়েছেন বহু মানুষ। মুড়ির সঙ্গে রকমারি উপকরণ মেখে আত্মীয় পরিজনকে সঙ্গে নিয়ে শীতের আমেজ গায়ে মেখে কেঞ্জাকুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে মুড়ি খাওয়ার আনন্দে গা ভাসিয়ে দিয়েছেন অনেকেই।
মুড়ি মেলার সৃষ্টির ইতিহাস যাই হোক কেন কেঞ্জাকুড়ার মুড়ি মেলা এখনও প্রমাণ করে যে রাঢ়বাংলার মানুষের সঙ্গে মুড়ির ভালোবাসা ঠিক কতটা। অবশ্য এই মেলা বহু প্রাচীন। লোকমুখে জানা গিয়েছে, কেঞ্জাকুড়ার দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে সঞ্জীবনী আশ্রমে হরিনাম সংকীর্তন শুনতে যেতেন আশপাশের বহু গ্রামের মানুষ। সারারাত ধরে চলত হরিনাম সংকীর্তন। এরপর গোটা রাত সেখানে কাটিয়ে তারপর ভোরের দিকে সবাই বাড়ি ফিরতেন। আর সকালে বাড়ি ফেরার সময়, দ্বারকেশ্বর নদের ঘাটে মুড়ি খেয়ে তারপর যে যার বাড়ির উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেন। আর সেই মুড়ি খাওয়ার চল আজ মুড়ি মেলার রূপ নিয়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এখন আগের মতো অতটা ভিড় লক্ষ্য করা যায় না।
আরও পড়ুন- মমতা উত্তরপ্রদেশে গেলে আখেড়ে লাভ বিজেপির, কেন এমন বললেন শুভেন্দু অধিকারী
রাঢ়বাংলার মানুষের সঙ্গে মুড়ির সম্পর্ক অতি নিবিঢ়। সেই সম্পর্কের হাত ধরেই বছরের পর বছর ধরে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এই মুড়ি মেলা। কেঞ্জাকুড়ার সঞ্জীবনী আশ্রম চত্বরের দ্বারকেশ্বর নদের চরে প্রতি বছর মাঘ মাসের ৪ তারিখ এই মেলার আসর বসে। কেঞ্জাকুড়া সহ আশপাশের ৩০ থেকে ৪০ টি গ্রামের মানুষ আত্মীয়দের নিয়ে এই মেলায় যান। মুড়ির সঙ্গে নানান পদ মেখে শীতের সকালে শীতের আমেজ গায়ে মেখে মুড়ি খাওয়ার আনন্দে মেতে ওঠেন আট থেকে আশি অনেকেই। আর এভাবেই বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে মুড়ি মেলা। যা আজও একইভাবে অত্যন্ত জনপ্রিয়।