গোপন রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখতে হত পুজো, এই রাজবাড়ির মহিলাদের নানা গল্প আজও শিহরণ জাগায়

Published : Sep 06, 2021, 02:31 PM IST
গোপন রাস্তায় দাঁড়িয়ে দেখতে হত পুজো, এই রাজবাড়ির মহিলাদের নানা গল্প আজও শিহরণ জাগায়

সংক্ষিপ্ত

সময় বদলানোর সাথে সাথে রাজপরিবারের পটেশ্বরী দুর্গা পুজোর জৌলুস কমেছে। কিন্তু কমেনি রাজ ঐতিহ্য, আচার ও রীতিনীতি।

রাজা নেই, রাজত্ব নেই। তবু রাজপরিবারের ঐতিহ্য আছে। আছে রাজ ঐতিহ্যের শেষ সলতে মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। মন্দিরের ভিতরে দেওয়ালের টেরাকোটার কারুকার্য, পলেস্তারা খসে পড়ছে। বর্ধমান রাজপরিবারের (Burdwan Palace) মন্দিরের (Temple) মূল ফটকও ভেঙে পড়ছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে। সময় বদলানোর সাথে সাথে রাজপরিবারের পটেশ্বরী দুর্গা পুজোর (Durga Puja) জৌলুস কমেছে। কিন্তু কমেনি রাজ ঐতিহ্য, আচার ও রীতিনীতি।

রাজ আমলে ধুমধাম করে পটেশ্বরী দুর্গাপুজো হত। বহু মানুষের আগমন হত বর্ধমান মহারাজের তৈরি লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ঠাকুর বাড়িতে। নদীর ওপার থেকেও অনেক মানুষজন পায়ে হেঁটে, গরুর গাড়িতে করে আসতেন এই মন্দিরে পুজো দেখতে। জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পুজো হত এখানে। প্রত্যেকদিনই ভিড় লেগে থাকতো মন্দির প্রাঙ্গনে। তবে রাজ পরিবারের প্রথা অনুযায়ী রাজ পরিবারের মহিলারা সবার সামনে আসতেন না। রাজবাড়ি থেকে গোপন রাস্তা দিয়ে তাঁরা এই মন্দিরে প্রবেশ করতেন। 

এখানেই শেষ নয়। মন্দিরের দোতলায় দর্শনির মাধ্যমে পুজো ও অনুষ্ঠান দেখতেন রাজপরিবারের মহিলারা। মন্দিরে থাকা মানুষজন এই রাজ পরিবারের মহিলাদের দেখতে পেতেন না। এখনও দুর্গাপুজোর সময় ভিড় হয়। বর্তমানে একটি ট্রাষ্টের মাধ্যমে দেখাশুনা করা হয় মন্দিরের। তবে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের অভাব।  করোনার প্রকোপে গতবার থেকে পুজোর আয়োজন আরও কমেছে। এবারেও শুধুমাত্র নিয়ম রক্ষার পুজো হবে বলে জানালেন সেবাইত।  তবে জৌলুস কমলেও পুজোর আচার আচরনে বা রীতিনীতির কোন পরিবর্তন হয়নি।

কৌশিকী অমাবস্যায় হল না তারা মায়ের দর্শন, ফিরে যাচ্ছেন হাজার হাজার ভক্ত

এখনো আগের মতই পুরানো রীতি নীতি মেনেই রাজপরিবারে মা পটেশ্বরী দুর্গার পুজো হয়। মহালয়ার পরের দিন থেকে বর্ধমানের মহারাজার মন্দিরে দুর্গাপুজো শুরু হয়। পুজোর সময় রাজপরিবারের এক মাত্র বংশধর প্রণয় চাঁদ মহাতাব সস্ত্রীক বর্ধমানে থাকেন এবং নিজে পুজোয় বসেন। তবে করোনা আবহে গতবছর তিনি আসেননি। এবারও আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই বলে জানালেন বর্তমানে এই মন্দিরের সেবাইত উত্তম মিশ্র।

Happy Teachers Day- প্রত্যেক সচিন পাক রমাকান্ত আচরেকরকে, শিক্ষক দিবসে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন ক্রীড়াজগতের

এখানে উল্লেখ্য পটেশ্বরী দুর্গাপুজো শুরু করেন তৎকালীন বর্ধমানের মহারাজ মহাতাব চাঁদ আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে। দেবী দুর্গা এখানে শালকাঠের কাঠামোর উপর প্রতিষ্ঠিত। কাঠের কাঠামোর উপর নানা রং দিয়ে নিপুন তুলির টানে তৈরি দশভুজার পরিবার। এখানে একমাত্র গণেশ ছাড়া দুর্গা,লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক এবং অসুরের মুখের ছবি এমন ভাবে আঁকা আছে শুধুমাত্র একটি চোখ দেখা যায়।শুধু তাই নয় মা দুর্গা বাহন সিংহের জায়গায় আঁকা আছে ঘোড়ার ছবি। পটেশ্বরী দুর্গার দশ বছর অন্তর একবার রঙ করা হয়। কিন্তু রঙের পর মা দুর্গার রূপের কোন পরিবর্তন হয় না। 

রাজার আমলের রীতিনীতি মেনেই লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ মন্দিরে মহালয়ার দিন থেকে দুর্গাপুজো শুরু হয়। এখানে বলি প্রথা আছে। তবে মেষ-মহিষ বা ছাগ বলি হয় না। রাজাদের আমলে সুপারি বলি হত। এখন অবশ্য সুপারি বলির জায়গায় চালকুমড়ো বলি হয় ।অষ্টমীর দিন মা পটেশ্বরীর সামনে নবকুমারী পুজো হয়। শোনা যায় এই মন্দির প্রতিষ্ঠা হবার আগে পাশের একটি মন্দিরে দেবী পূজিতা হতেন। 

দুর্গাপুজোর সময় জ্বালাবে না লোডশেডিং, কী ব্যবস্থা করছে রাজ্য, জানালেন অরূপ বিশ্বাস

পরে মহারাজ মহাতাব চাঁদ এই মন্দির স্থাপন করে দেবীকে এখানে নিয়ে আসেন। আগে যেখানে মন্দির ছিল বর্তমানে সেখানে একটি কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। পুজোর দিনগুলি রাজপরিবারের পটেশ্বরি দুর্গা প্রতিমা দেখতে বহু মানুষ আসেন মন্দিরে। নবমীর দিন রাতে গুজরাটি সম্প্রদায়ের মানুষজন নাটমন্দিরে ডাণ্ডিয়া নৃত্যে অংশগ্রহন করে।

PREV
click me!

Recommended Stories

'যাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত এই ভোগান্তির জন্য', ইন্ডিগোর বিপর্যয়ে কেন্দ্রকে নিশানা মমতার
Suvendu Adhikari: ‘গীতা শব্দটা ঠিক করে উচ্চারণ করতে পারবেন না উনি!’ মমতাকে চরম ধুয়ে দিলেন শুভেন্দু