চিকিৎসা সংকট কাটাতে চিকিৎসকদের উপরেই ভরসা রাখছে নবান্ন। জুনিয়র চিকিৎসকরা বৈঠকে যাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সিনিয়র চিকিৎসকরাও আর নবান্নের বৈঠকে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। শেষ পর্যন্ত সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বসেছেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। সেই বৈঠক থেকেই অবশ্য ফের সিনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে ডেকে পাঠানো হয়।
এ দিন বিকেল পাঁচটায় নবান্নে সিনিয়র চিকিৎসকদের উপস্থিতিতে জুনিয়র চিকিৎসকদের বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা সাফ জানিয়ে দেন, এনআরএস হাসপাতালে এসেই মুখ্যমন্ত্রীকেই জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁরা নবান্নে যাবেন না।
যেহেতু কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া জুনিয়র চিকিৎসকরাই বৈঠক যেতে রাজি হননি, তাই সিনিয়র চিকিৎসকরাও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোনও বৈঠক করবেন না বলেই জানিয়ে দেন। কারণ জুনিয়র চিকিৎসকদের অনুপস্থিতিতে ওই বৈঠক অর্থহীন। বিকেলের দিকে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মুখ্য সচিব মলয় দে এবং স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী রাজীব সিংহকে নিয়ে নবান্নে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠক চলাকালীনই ফের শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে আসা পাঁচ সিনিয়র চিকিৎসককে ফোন করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে। এর পরে ফের নবান্নের উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুকুমার মুখোপাধ্যায়, মাখনলাল সাহা-সহ পাঁচ সিনিয়র চিকিৎসক। ওই বৈঠকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মাকেও ডেকে পাঠানো হয়েছে।
নবান্নের অবস্থান থেকে স্পষ্ট, সিনিয়র চিকিৎসকদের মধ্যস্থতাতেই সমস্যার জট কাটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কারণ, নবান্নে এসে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে নারাজ জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই অবস্থায় তাঁদের দাবি মেনে মুখ্যমন্ত্রীর এনআরএসে যাওয়া মানে আন্দোলনরত ছাত্রদের দাবির কাছেই কার্যত অত্মসমর্পণ করা। তা না করে কোনওভাবে নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের বুঝিয়ে আনার দায়িত্বই এবার সিনিয়র চিকিৎসকদের উপরে তুলে দেওয়া হতে পারে। অথবা তাঁদের মাধ্যমেই বিক্ষোভকারী চিকিৎসকদের বার্তা দিতে পারে নবান্ন।
ইতিমধ্যেই চিকিৎসকদের আন্দোলন পাঁচ দিনে পড়েছে। রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এই অবস্থায় যে কোনও উপায়ে সমস্যার সমাধান বের করাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ রাজ্য সরকারের কাছে।