KaliPuja 2021-এই কালীপুজোয় যোগ রয়েছে মুঘল সম্রাট আকবরের

মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের জোড়া মৃন্ময়ী প্রতিমা তৈরি করে তান্ত্রিক মতে পূজা সম্পন্ন করার পর পুনরায় স্বপ্নাদেশ পান। তাতে এই দৈবাদেশ হয় যেন একটি মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় ও আর একটি মূর্তির স্থায়ীভাবে নিত‍্যপূজা শুরু হয়।

Parna Sengupta | Published : Oct 31, 2021 7:48 AM IST

মুঘল সম্রাট আকবর (Mughal Emperor Akbar) থেকে শুরু করে রাণী রাসমণির (Rani Rashmoni) ইতিহাসকে সাক্ষী করে সীমান্তের গ্রামে আজও পূজিত হন খয়রা কালী(Khayra Kali)। 
করোনাকালে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজার (Durga Puja) পর এসে গেল বাঙালির আরও এক প্রাণের উৎসব শ্যামাপুজো(Kalipuja)। চারিদিক জুড়ে থাকবে আলোর রোশনাই, জ্বলবে প্রদীপ। সারা ভারত জুড়ে বিভিন্ন সতীপীঠ তথা বৃহৎ থেকে ক্ষুদ্রতর মন্দিরে নিত‍্যপূজার সঙ্গে চলবে শ্যামা মায়ের বিশেষ আরাধনা। 

বসিরহাট মহকুমার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী স্বরূপনগর ব্লকের বিথারী গ্রামের চক্রবর্তী পরিবারের খয়রা কালী পূজা বহু যুগ ধরে প্রাচীন ঐতিহ্য বহন করে চলছে। ইতিহাস ঘাটলে জানা যায় যে, মোঘল সম্রাট আকবরের সভার হিন্দুশাস্ত্রের পন্ডিত ছিলেন গোপাল সার্বভৌম। তিনি ছিলেন একজন তান্ত্রিক মতে দীক্ষিত। তার পূজাপাঠও ছিল তান্ত্রিক মতে। উনি আজ থেকে প্রায় ৬০০ বছর আগে মোঘল সম্রাটের নির্দেশে অবিভক্ত বাংলাদেশের চাঁদড়া গ্রামের জমিদার বাড়িতে যাচ্ছিলেন। 

বর্তমান মন্দিরের পশ্চাতে বাঁওড়ের পাশে মায়ের স্বপ্নাদেশ পেয়ে মায়ের জোড়া মৃন্ময়ী প্রতিমা তৈরি করে তান্ত্রিক মতে পূজা সম্পন্ন করার পর পুনরায় স্বপ্নাদেশ পান। তাতে এই দৈবাদেশ হয় যেন একটি মূর্তি বিসর্জন দেওয়া হয় ও আর একটি মূর্তির স্থায়ীভাবে নিত‍্যপূজা শুরু হয়। এরপর আজ থেকে প্রায় দুশো বছর আগে দক্ষিণেশ্বরের মা ভবতারিণী মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা তথা জানবাজারের রাণী রাসমণির তৃতীয় জামাতা মথুরামোহন বিশ্বাস ছিলেন এই বিথারী গ্রামের বাসিন্দা। তারই উদ্যোগে একবার ঠাকুর রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব এসে এই মন্দিরে পূজাপাঠ করেন।

তারপর কলকাতায় ফিরে গিয়ে ঠাকুর রাণীমাকে সব জানাতেই ধর্মপ্রাণা রাণীমার উদ্যোগে সেখানে শুরু হয় পাকা মন্দির তৈরীর কাজ ও মায়ের প্রস্তর মূর্তি নির্মাণ হয়। সেই শুরু, এখনো চলছে নিত‍্যপূজা। রাণীমার নির্দেশে এই মন্দিরের চারপাশে বারোজীবি মানুষের বাস, কুম্ভকার, কর্মকার, স্বর্ণকার, কাহার থেকে শুরু করে মুসলমান সম্প্রদায়ের বাজনদারদের বাস মন্দিরকে ঘিরে। এখনো পর্যন্ত পুরনো রীতি মেনে কাহার সম্প্রদায়ের মানুষরা মন্দির পরিষ্কারের দায়ভার নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। 

এই মন্দিরের পাশের জেলেপোতা এলাকায় মুসলমান সম্প্রদায়ের জেলেদের থেকে প্রাপ্ত খয়রা ইলিশ দিয়ে মায়ের ভোগ রন্ধন হয়, তাই মায়ের নাম খয়রা কালী, এখানেই মায়ের নামের সার্থকতা। এখনো পর্যন্ত এই ঐতিহ্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সাক্ষী করে জাগ্রত খয়রা কালী তার জাগৃতি প্রকাশ করছে।

উল্লেখ্য, কালীপুজো মানেই প্রদীপের সজ্জা, আলোর রোশনাই আর বাজির শব্দ। এই একটা দিন ছোট-বড় সকলেই সকল দুঃখ ভুলে আনন্দে মেতে ওঠেন। মা কালী যেমন পুজিত হন বাঙালি ঘরে, তেমনই অবাঙালি পরিবারগুলিতে পালিত হয় দিওয়ালি। সেখানে পুজিত হন ধনদেবী। 

বাংলার উন্নয়ন নিয়ে মোদীর সঙ্গে কথা অধীর চৌধুরির, নতুন স্থল বন্দর তৈরির প্রস্তাব

এই পাঁচ বলিউড সেলিব্রিটির কেরিয়ার প্রায় নষ্ট করে দিয়েছিলেন সলমন খান

Bank holidays November 2021- নভেম্বরে ১৭ দিন বন্ধ থাকবে ব্যাঙ্ক, দেখে নিন বাংলায় কবে

এমনকী, বহু বাঙালি পরিবারও এই দিন লক্ষ্মী দেবীর পুজো হয়ে থাকে। তবে, করোনা অতিমারীর প্রকোপে এই বছরও দুর্গাপুজো কেটেছে কিছুটা আশঙ্কায়। কালী পুজো অবধি ঠিক কী অবস্থা থাকবে না নিয়ে কিছুটা ভয় থেকেই যাচ্ছে। তাও সকলেই প্রস্তুতি নিচ্ছে সতর্কতা মেনে।

৪ নভেম্বর, বৃহস্পতিবার কালীপুজো। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষে অমাবস্যা তিথিতে পুজিত হবেন মা। এদিন অমাবস্যা তিথি পড়ছে ৪ নভেম্বর সকাল ৬.৩০ মিনিটে। আর অমাবস্যা থাকবে ৫ নভেম্বর মধ্যরাত মানে ২.৪৪ মিনিট পর্যন্ত। 

Share this article
click me!