নির্দিষ্ট পার্কিং স্থলে গাড়ি রাখার সময় একটি মেশিনে গাড়ির নম্বর টাইপ করলে একটি স্লিপ বেরিয়ে আসবে। গাড়ি নিয়ে বেরোনোর সময়ে ওই স্লিপ দেখালে মেশিনই পার্কিং ফিয়ের অঙ্ক জানিয়ে দেবে।
শহর জুড়ে বেআইনি পার্কিং আটকাতে নগদহীন পদ্ধতিতে ফি আদায় করা শুরু করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা। আজ থেকে শহরের ৩৫টি রাস্তায় এই নয়া ব্যবস্থা কার্যকর হতে চলেছে। ১৮ জানুয়ারি বুধবার, কলকাতা পুরভবনের সামনে অনলাইনে টাকা মেটানোর যন্ত্রের পাশাপাশি পার্কিং সংক্রান্ত একটি অ্যাপও চালু হচ্ছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে জানা যাবে কোন কোন রাস্তায় বেআইনি পার্কিং হয়েছে, সেখানে গাড়ি রাখার জায়গা ফাঁকা রয়েছে কি না, ইত্যাদি। এই পদ্ধতির উদ্বোধন করবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। পুরসভার পার্কিং ও তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সঙ্গে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের যৌথ উদ্যোগে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। পার্কিং দফতরের ভারপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানিয়েছেন, ‘‘অনলাইনে টাকা মেটানোর জন্য আপাতত ১৩৫টি যন্ত্র চালু হচ্ছে। শহরের সমস্ত পার্কিং লটে খুব তাড়াতাড়িই ওই যন্ত্রের মাধ্যমে ফি সংগ্রহ করার ব্যবস্থা হবে। পার্কিংয়ে স্বচ্ছতা ফেরাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”
শহরের প্রায় ৫০০টি জায়গায় গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেছে কলকাতা পুরসভা। আগামী তিন মাসের মধ্যে সেই সব জায়গায় অনলাইনে টাকা আদায় শুরু করার পরিকল্পনা রয়েছে। পুরসভার পার্কিং দফতর সূত্রে জানা গেছে, নির্দিষ্ট পার্কিং স্থলে গাড়ি রাখার সময় ওই মেশিনে গাড়ির নম্বর টাইপ করলে একটি স্লিপ বেরিয়ে আসবে। গাড়ি নিয়ে বেরোনোর সময়ে ওই স্লিপ দেখালে মেশিনই পার্কিং ফিয়ের অঙ্ক জানিয়ে দেবে। অনলাইনে টাকা মেটানোর যন্ত্রে ডেবিট কার্ড, ক্রেডিট কার্ড অথবা বারকোড ‘স্ক্যান’ করে ফি আদায় করা হবে। অর্থাৎ, আগামী দিনে নগদ টাকায় পার্কিং ফি আদায় করাটা সম্পূর্ণভাবে তুলে দিতে চাইছে পুরসভা।
কিন্তু এখনও শহরের অনেক চালকই অনলাইন লেনদেনে অভ্যস্ত নন। এক পার্কিং সংস্থার কর্ণধারের কথায়, “নয়া যন্ত্র ব্যবহার করে পার্কিং ফি আদায় করলে স্বচ্ছতা ফিরে আসবে ঠিকই, কিন্তু অনেকেই অনলাইনে টাকা লেনদেনে অভ্যস্ত নন। ফলে, তাঁদের সমস্যা বাড়বে।” তিনি জানান, “পুরসভার তরফে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, যাঁরা অনলাইনে টাকা মেটাতে পারবেন না, তাঁদের গাড়ি রাখার অনুমতি দেওয়া যাবে না। কিন্তু পুরসভার তরফে বলা হলেও বাস্তবে গাড়ি রাখার সময়ে গাড়ির মালিক বা চালকের সঙ্গে আমাদের সংস্থার কর্মীদের ঝামেলায় জড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল। সে ক্ষেত্রে এই সমস্যার সমাধানে পুরসভা এবং পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে বলেছি।” পুরসভার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যন্ত্রটির মহড়া চলছে। আগামী দিনে অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে বৈধ পার্কিংয়ের তুলনায় অবৈধ পার্কিংয়ের সংখ্যা অনেক বেশি। রাস্তায় যত্রতত্র গাড়ি রেখে দেওয়ার ফলে যান চলাচলে সমস্যা তো হয়ই, পার্কিং বাবদ দেওয়া টাকাটাও পুরসভার খাতে যায় না। এই বেআইনি পার্কিং ঠেকাতেই ফি আদায়ে অনলাইন পদ্ধতি চালু করা হচ্ছে। বেআইনি পার্কিংয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালানোর মতো পরিকাঠামো বা লোকবল কলকাতা পুরসভার নেই। কর্মীর অভাবের পাশাপাশি গাড়ি আটকে রাখার জন্য চাকার ক্ল্যাম্পও অনেক কম আছে। ক্ল্যাম্প লাগাতে গিয়ে হেনস্থার শিকারও হতে হয় পুরকর্মীদের। তাই অনলাইনে ফি আদায় ও অ্যাপ চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা।
আরও পড়ুন-
ভারতের করব্যবস্থায় ‘ধনীদের ছাড়, গরীবের ওপর লুঠপাট’? চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ রাহুল গান্ধির
‘ভারতের সঙ্গে ৩টি যুদ্ধে বেড়েছে গরিবী, বেকারত্ব’, প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে সততার বৈঠক চাইলেন পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ