টেট দুর্নীতিতে এই ২৬৮ জন-এর চাকরি চলে যায়। এই মুহূর্তে সুপ্রিম কোর্টেও এই নিয়ে মামলা চলছে। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সিদ্ধান্ত বিতর্ক তৈরি করতে বাধ্য
প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আছে তার নিজের ঘোরেই। পর্ষদ সভাপতি পদে গৌতম পাল তাঁর নিয়োগের পরই ঘোষণা করেছিলেন এক স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিহীন নিয়োগ পদ্ধতির। কিন্তু, ভোট যে বড় বালাই তা কি গৌতম তখন বুঝতে পেরেছিলেন! এখন এমনই প্রশ্ন উঠছে। যেহেতু সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সূত্রে খবর টেট দুর্নীতিতে নিয়োগ হারানো ২৬৮ জনকে ফের চাকরির ফেরানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর এতেই তৈরি হয়েছে বিষ্ময়।
স্কুল শিক্ষায় চাকরীপ্রার্থীরা যে সব মামলা করেছে তার অন্যতম প্রধান আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য-তো তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এমন সিদ্ধান্তে। একইভাবে বিষ্মিত খোদ আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত। তিনি নিজেও চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে মামলা লড়ছেন। পর্ষদের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন একাধিক প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনও।
কীভাবে কাজ গিয়েছিল এই ২৬৮ জনের?
আসলে প্রাথমিক শিক্ষায় ২০১৪ সালের শিক্ষক নিয়োগের জন্য নেওয়া টেট দুর্নীতির বিষয়ে যথেষ্ট প্রমাণ কলকাতা হাইকোর্টে জমা পড়তেই প্রাথমিকভাবে একটি নির্দেশ কার্যকর করতে বলেছিলেন বিচারপতি। এই নির্দেশের অন্যতম বিষয় ছিল এই টেট দুর্নীতিতে যে ২৬৯ জনের বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে চাকরি নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাদের অবিলম্বে বরখাস্ত করতে। যার জেরে মোট ২৬৯ জন চাকরি হারান। এদের মধ্যে একজন চাকরি হারানো পরবর্তী সময়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজের চাকরি ফেরত নেন। কিন্তু, বাকি ২৬৮ জন চাকরি হারানোর কোনও সুরাহা হয়নি। এই ২৬৮ জন আবার চাকরি হারানো নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। সুপ্রিম কোর্ট পুরো বিষয়টি শোনার পর কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে আংশিক স্থাগিতাদেশ জারি করে। কিন্তু এতে চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে ফের শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে। তাই বলতে গেলে বিষয়টি বিচারাধীন। এমন এক পরিস্থিতিতে প্রাথমিক পর্ষদ কীভাবে ২৬৮-জনের চাকরি ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা নিয়েই যাবতীয় বিতর্ক। হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি হারানো এই ২৬৮ জনকে ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে এরাও মামলায় একটা পক্ষ হিসাবে বিবেচিত হবে। এমন এক পরিস্থিতিতে পর্ষদের এমন সিদ্ধান্ত হতবাক করেছে।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে ভয়ে কি চাকরির ফেরানোর সিদ্ধান্ত?
পাশাপাশি এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হচ্ছে যে পঞ্চায়েত ভোটে এই চাকরি হারানোরা শিক্ষক-নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে মুখ খুলতে পারেন এবং এটা রাজ্যের শাসক দলের পক্ষে অস্বস্তিকর হয়ে উঠতে পারে। এমন এক পরিস্থিতিতে তাই ২৬৮ জনকে পুনর্বহাল করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
আরও পড়ুন-
সাড়ে ৪ ঘণ্টার টানা জেরা প্রাক্তন মন্ত্রী পরেশ অধিকারীকে, 'ইডি-র তলব' নয়, নিজেই এসেছেন!
দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, ২০১৪ ও ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণদের নম্বর প্রকাশ পর্যদের
দেড়দিন পর নিখোঁজ শিশুর দেহ উদ্ধার, পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ, মৃত শিশুর বাড়িতে বিজেপি-র রাজ্য