গতিপথ ঘোরানোর চেষ্টাই কি মাল নদীর বিপর্যয়ের কারণ, নাকি, এর পেছনে লুকিয়ে আরও ভয়ঙ্কর বিপদ?

উত্তরবঙ্গে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি, নাকি মেঘ ভেঙে যাওয়ার প্রকোপ? ঠিক কোন কারণে দশমীর রাত্রে মাল নদীতে ভয়ঙ্কর বান ছুটে এল, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় বিশেষজ্ঞরা। 

Web Desk - ANB | Published : Oct 8, 2022 4:43 AM IST / Updated: Oct 08 2022, 12:01 PM IST

জলপাইগুড়ির মাল নদীতে হড়পা বানে প্রাণ হারিয়েছেন প্রতিমা বিসর্জন দেখতে আটজন নিরীহ মানুষ, আচমকা ভেসে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হড়পা বানই এই মর্মান্তিক বিপর্যয়ের কারণ হলেও যে সমস্ত পাহাড় বেয়ে মাল নদী বয়ে এসেছে, তার কোনও অংশে মেঘভাঙা বা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটা বেশি বৃষ্টি হয়েছিল কিনা, তা এখনও প্রশাসনের কাছে স্পষ্ট নয়। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোধারা বসু সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, বিপর্যয়ের কারণ জানার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে, রাজ্য প্রশাসন একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, সেদিন উত্তরবঙ্গে অস্বাভাবিক বৃষ্টি হয়নি। তাহলে কি, রাজ্যের বাইরে মাল নদীর কোনও অংশে বেশি বৃষ্টি বা মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে প্রবল জলোচ্ছ্বাস হয়েছিল? তার খোঁজ শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন।

এই দুর্ঘটনার জেরে সবক’টি পাহাড়ি নদী নিয়ে চিন্তা বেড়েছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের। সাধারণত, নদীর চলার পথে কোনও বাধা তৈরি করতে হলে বা জলের ধারা ঘুরিয়ে দিতে হলে সেচ দফতরের অনুমতি আবশ্যিক। মালবাজারের ক্ষেত্রে সেচ দফতর নদীর গতিপথ বদলের কথা কিছুই জানত না বলে সূত্রের দাবি। মাল নদীর গতিপথ অস্থায়ী বাঁধ দিয়ে ঘুরিয়ে দেওয়াই হড়পা বান আসার একমাত্র কারণ কিনা, তা জানতে নদী বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটিও গড়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। কেবলমাত্র মাল নদীই নয়, জেলার অন্য পাহাড়ি নদীগুলিও কতটা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, তা খতিয়ে দেখবে এই কমিটি। এ দিকে, দুর্ঘটনায় নিহত এক মা ও ছেলের পরিবারের তরফে মাল পুরসভা এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এবিষয়ে পুলিশের বক্তব্য, অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। অভিযোগটি দায়ের করেছেন মালবাজারের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিলীপ পণ্ডিত। তাঁর স্ত্রী ও ছেলে সেই রাতে মারা যান। 

প্রশাসনের তরফ থেকে ভুটান সরকারকেও অনুরোধ জানানো হয়েছে, যাতে সে দেশের বৃষ্টির ‘রিয়্যাল টাইম’ অর্থাৎ, যেসময়ে বৃষ্টি চলছে, ঠিক সেই সময়েরই তথ্য পাওয়া যায়। কারণ, ভুটান পাহাড়ের বৃষ্টির জলই উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন পাহাড়ি নদী দিয়ে নেমে আসে। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভুটান সংলগ্ন এলাকায় বৃষ্টি মাপার যন্ত্র বসাতে। সেই কাজ সম্পন্ন হলে ভুটান সরকারের পাঠানো তথ্যের জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। জেলাশাসক মৌমিতা গোধারা বসু বলেছেন, ‘‘কয়েকদিন আগেই ভুটান প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছে। তারা সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছে।’’

আরও পড়ুন-
হরিদেবপুরে নিখোঁজ যুবকের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার করা হল বান্ধবী এবং তাঁর মা ও ভাইকে
মাদক কাণ্ডে এনসিবির জালে এয়ার ইন্ডিয়ার প্রাক্তন বিমানচালক, প্রায় ১২০ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার!
গরু পাচারকাণ্ডে আরও ফাঁপরে অনুব্রত মণ্ডল, সিবিআইয়ের ৩৫ পাতার চার্জশিটে ৫৩টি সম্পত্তির উল্লেখ

Share this article
click me!